অনেক দেশ সচল হচ্ছে নতুন সংক্রমণ বিস্তারের ভয় নিয়েই

অনেক দেশ সচল হচ্ছে নতুন সংক্রমণ বিস্তারের ভয় নিয়েই
অনেক দেশ সচল হচ্ছে নতুন সংক্রমণ বিস্তারের ভয় নিয়েই

পোস্টকার্ড প্রতিবেদক ।।

করোনাভাইরাসের বিশ্ব মহামারির প্রেক্ষিতে এখন মন্দায় পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতি । তবে আক্রান্তের হার কমে আসায় অনেক দেশই এখন আংশিকভাবে লকডাউন শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

প্রায় গতিশূন্য অর্থনীতির কিছু কিছু খাতে উদ্যম ফিরিয়ে এনে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করাই যার প্রধান লক্ষ্য।

এই প্রক্রিয়ায় ইতালি থেকে নিউজ়িল্যান্ড সবখানেই  কোভিড-১৯-এর বিস্তার রুখতে জারি হওয়া লকডাউন শিথিল করার কথা ঘোষণা করা হচ্ছে।

জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমান, করোনাভাইরাসের হুমকি বিশ্বের ঘাড়ে আরও দীর্ঘদিন ধরেই বিদ্যমান থাকবে।

তবে একথাও সত্য দীর্ঘ সময় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার কারণে বেকারত্ব, দারিদ্রতা বৃদ্ধি এবং মহামারির মতো পরিস্থিতি দেখা দেবে। এর ফলে সরকারগুলোর জন্য দেশের রাজনৈতিক পরিবেশের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখাটাও কঠিন হতে পারে।  

গত বছরের শেষ থেকে শুরু হওয়া এই বৈশ্বিক মহামারি সারা বিশ্বে প্রাণ কেড়েছে ২ লক্ষেরও বেশি মানুষের। আক্রান্তও হয়েছেন ৩০ লক্ষের বেশি। এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে।

তবে এরপরেও সংক্রমণের তীব্রতা কিছুটা কমায় আর্থিক ধাক্কা সামাল দিতে লকডাউন তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেশ কিছু দেশ। কয়েক মাস ধরে দোকান-বাজার, ব্যবসা-বাণিজ্য, কারখানা, অফিস, পর্যটন বন্ধ থাকায় আগামী দিনে দীর্ঘ আর্থিক মন্দার বিভীষিকা দেখছে দেশগুলো।

অর্থনীতিকে সামাল দিতে এখন দেশকে সচল করার সিদ্ধান্ত নিলেও ঝুঁকির কথা মেনে নিচ্ছেন এসব দেশের নেতারা। তাঁরা স্বীকার করছেন, স্বাভাবিক গতিতে ফেরার পর দ্বিতীয় দফার সংক্রমণে বিপর্যয়ের ব্যাপক ঝুঁকি রয়েছে।

২৬ হাজারের বেশি মৃত্যু-সহ করোনা-সংক্রমণে বিশ্বে তৃতীয় স্থানে থাকা ইতালি আগামী ৪ মে থেকে কাজে ফিরতে চলেছে। তার জন্য বিনামূল্যে মাস্ক বিলি করা হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী জিসেপ্পে কন্তে বলেছেন, 'আমরা খুব কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে চলেছি। সব রকম সাবধানতা অবলম্বন করে এই ভাইরাস নিয়েই আমাদের থাকতে হবে।'

মাস দেড়েক বন্ধ থাকার পরে এই সপ্তাহ থেকেই ফের মাছধরা, শিকার করা, হাইকিং বা সার্ফিংয়ে যেতে পারবেন নিউজ়িল্যান্ডবাসী। সোমবার মধ্যরাত থেকে করোনা-সতর্কতার মাত্রা কমে যাওয়ায় কাজে যোগ দিতে পারবেন ৪ লক্ষ মানুষ। তবে দোকানপাট ও রেস্তরাঁ খুলছে না এখনই।

নরওয়েতেও খুলে গিয়েছে স্কুল। বেশ কিছু ছোট ব্যবসাও চালু করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে সেখানে। পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখেই যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কোনো প্রদেশে কড়াকড়ি তোলা হয়েছে। সে দেশে এখনও পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৫৫ হাজার ৪৬১ জনের। আগামী সপ্তাহ থেকে লকডাউন শিথিল করার কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে প্রাণহানির শিকার নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যও।

আজ মঙ্গলবার থেকে পর্যায়ক্রমে জার্মানির ১৬টি প্রদেশে লকডাউন শিথিল করার অনুমতি দিয়েছে সেখানকার কেন্দ্রীয় সরকার। সংক্রমণ কমায় ছোট দোকান বা ব্যবসা চালুর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বেশ কিছু বিদ্যালয়ও পাঠদান শুরু করেছে।  

সংক্রমণের সংখ্যার বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে থাকা স্পেনেও গতকাল রোববার ছুটির দিনের আমেজ ফেরে। ৬ সপ্তাহ বাদে প্রথম বাড়ির বাইরে পা রাখার অনুমতি পায় সেখানকার শিশুরা।

ক্রোয়েশিয়ায় সোমবার থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে পাঠাগার, সংগ্রহশালা। ছোট ব্যবসা, খাবারের বাজারও খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

১৫ মে-র পরে লকডাউন তুলে দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেছে রোমানিয়াও।

চীনের বড় শহরগুলোতে স্কুল-কলেজ খুলেছে। অন্যদিকে ভাইরাস প্রতিরোধে বিজয়ী উহান নগরীতেও আগামী ৬ মে থেকে স্কুল খুলবে।