ই-নামজারি ২৮ দিনে বাস্তবায়নের উদ্যোগ , মেসেজের মাধ্যমে তথ্য ও অভিযোগ

ই-নামজারি ২৮ দিনে বাস্তবায়নের উদ্যোগ , মেসেজের মাধ্যমে তথ্য ও অভিযোগ
ই-নামজারি ২৮ দিনে বাস্তবায়নের উদ্যোগ , মেসেজের মাধ্যমে তথ্য ও অভিযোগ

পোস্টকার্ড নিউজ।।

ভূমিসেবা প্ল্যাটফর্মে ই-নামজারির গড় নিষ্পত্তির সময় নিয়মিত মনিটরিং করা, ২৮ দিনের অধিক অনিষ্পন্ন ই-নামজারি মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়। গত সপ্তাহে ভূমিসচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় ই-নামজারি বিষয়ে পর্যালোচনার সময় অবমুক্ত তথ্য প্রদর্শনে প্রযোজ্য সময় থেকে ই-নামজারি আবেদন নিষ্পত্তিতে ২৮ দিনের অধিক সময় মাত্রাতিরিক্তভাবে প্রয়োজন হবার বিষয়টি উঠে আসে। খবর বাংলানিউজের।

গত ১৯ সেপ্টেম্বর পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, পূর্বের সিস্টেমের কারণে যেসব আবেদন ‘মিথ্যা-নেতিবাচক’ অনিষ্পন্ন/পেন্ডিং দেখাচ্ছে সেসব সমাধান করার উপায়ও জানানো হয়েছে একই চিঠিতে। সামগ্রিকভাবে ই-নামজারি নিষ্পত্তিতে নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত মাত্রার সময় ব্যয় হওয়ার অন্যান্য সকল ধরনের কারণ জানানোর জন্যও অনুরোধ করা হয়েছে চিঠিতে। এছাড়া মাঠ পর্যায়ে ই-নামাজারি আবেদন নিষ্পত্তিতে ২৮ দিনের অধিক সময় ব্যয় হওয়ার কারণগুলোর ব্যাপারে অবগত হবার পর সেই অনুযায়ী পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

চিঠিতে বলা হয়, অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনায় প্রতীয়মান হয় যে, ২৮ দিনের বেশি প্রদর্শিত হবার সম্ভাব্য বিভিন্ন ধরনের কারণের মধ্যে এমন দুটি ‘মিথ্যা-নেতিবাচক’ কারণও আছে, যা পুরনো সিস্টেমে কিছু অবস্থা নিছক আমলে না নেওয়ার কারণে হয়েছে।

প্রসঙ্গত, মিথ্যা-নেতিবাচক সংশ্লিষ্ট কারণের একটি হচ্ছে, বাধ্যতামূলক শতভাগ অনলাইনে ই-নামজারি ঘোষণার পূর্বে অনেক ভূমি অফিসে অনলাইনে আবেদন করা নামাজারির কেস বিভিন্ন কারণে ম্যানুয়ালি নিষ্পত্তি করা হয়েছিল। নামজারির আবেদন ম্যানুয়ালি নিষ্পত্তি করা হলেও সিস্টেমে আবেদনটি যে অবস্থায় ছিল সেই অবস্থায় রয়ে যায়। অর্থাৎ, এই কারণে ম্যানুয়ালি নিষ্পন্ন-কৃত আবেদন অনলাইনে অনিষ্পন্ন দেখাচ্ছে। আরেকটি সম্ভাব্য কারণ নির্ণয় করা হয়েছে যে, ই-নামাজারি আবেদন নিষ্পত্তি হয়ে চূড়ান্ত খতিয়ান প্রস্তুত থাকার পরও অনেক জমির মালিক ডিসিআর ফি পরিশোধ করে ডিসিআর এবং খতিয়ান তুলছেন না। এজন্য সিস্টেমে পুরোনো নামজারি অনিষ্পন্ন দেখাচ্ছে। অর্থাৎ, ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ এর পূর্বের নামজারি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আবেদনের কারণে বর্তমান সিস্টেমেও তথ্য প্রর্শনের সময় ফলস-নেগেটিভ দেখাচ্ছে। উল্লেখ্য আপডেটকৃত স্মার্ট সিস্টেমে এই দুটি অবস্থা অ্যাড্রেস করে অ্যালগোরিদম আপডেট করা হয়েছে।

জনগণকে দ্রুত সেবাদান নিশ্চিত করতে ভূমি মন্ত্রণালয়ের বর্তমান বিধান অনুযায়ী সাধারণ ও এলটি নোটিশ বুনিয়াদে ২৮ কার্যদিবস, সনদপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ১০ কার্যদিবস, প্রবাসীদের জন্য মহানগর এলাকায় ১২ কার্যদিবস ও অন্যান্য এলাকায় ০৯ কার্যদিবস এবং নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ/রপ্তানিমুখী/বৈদেশিক বিনিয়োগপুষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য ০৭ কার্যদিবসের মধ্যে নামজারি আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়ে থাকে। নিষ্কণ্টক ভূমি ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য জমির মালিকের নামজারি অনুমোদনের পরেই ডিসিআর ও খতিয়ান সংগ্রহ করে নিয়মিত ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করা উচিত।

নামজারি আবেদন দাখিল, তদন্ত ও শুনানির জন্য প্রয়োজনীয় সময় আবশ্যক। সঠিক তথ্য প্রদান এবং শুনানিতে প্রমাণক উপস্থাপন করলে ভূমি নামজারি কাজে সময় সাশ্রয় হয়ে থাকে। ভূমি মন্ত্রণালয় চেষ্টা করে মাঠ পর্যায়ের দপ্তরের মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নামজারি সেবা প্রদান করতে। অন্যদিকে, একটি ভূমি অফিসে আবেদিত নামজারি ছাড়াও আরও অনেক ধরণের ভূমি বিষয়ক কাজ থাকে। নির্ধারিত দিনের চেয়ে বেশি কম সময়ে দ্রুত নামজারি নিষ্পত্তির তাগাদা প্রদানের কারণেও সামগ্রিক কার্যক্রমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে।

‘নাগরিক ভূমিসেবা ২৪/৭’-এর হেল্পলাইন ১৬১২২ এ কল করে কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম www.facebook.com/land.gov.bd-এ কমেন্ট কিংবা মেসেজ (বার্তা) করে ই-নামজারি সংশ্লিষ্ট তথ্য জানা যাবে এবং অভিযোগ জানানো যাবে। নামজারি আবেদনের অবস্থা www.land.gov.bd অনলাইন সিস্টেম থেকেই সহজে ট্র্যাক করা যায়।

উল্লেখ্য, প্রশ্ন-ভিত্তিক গাইডেড ই-নামজারি ফরম, সরকারের সার্ভারে রক্ষিত ডাটার সাথে সিনক্রোনাইজিং সহ বেশ কিছু নতুন ফিচার সংযুক্ত করে পূর্বের ই-নামজারি সিস্টেম আপডেট করে স্মার্ট করা হয়েছে। ভূমি প্রশাসনে সুশাসন নিশ্চিত করা এবং ভূমি সেবা অধিকতর গণমুখী করার জন্য ভূমি সেবা সম্পর্কিত প্রযোজ্য তথ্যও এই স্মার্ট সিস্টেমে উন্মুক্ত করা হয়েছে।

খালেদ / পোস্টকার্ড;