ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ হবে না: প্রধানমন্ত্রী

ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ হবে না: প্রধানমন্ত্রী
ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ হবে না: প্রধানমন্ত্রী

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।।

আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন,এখনও যথেষ্ট শক্তিশালী বাংলাদেশের অর্থনীতি । যারা বলেছিল বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হবে তাদের মুখে ছাই পড়েছে।

শুক্রবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুবলীগের ৫০ বছর পূর্তি ও সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত মহাসমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের অর্থনীতি এখনও যথেষ্ট শক্তিশালী। অনেকে বলেছিল শ্রীলঙ্কা হবে, এই হবে, সেই হবে, তাদের মুখে ছাই পড়েছে। সেটা হয়নি, ইনশাআল্লাহ হবেও না।

বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ হবে না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্বব্যাপী দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে, বাংলাদেশে ইনশাআল্লাহ কোনো দুর্ভিক্ষ হবে না। তার জন্য আমাদের এখন থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে। মহাসমাবেশের মাধ্যমে নেতাকর্মীদের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বলেছিলেন বাংলাদেশকে কেউ দাবায় রাখতে পারবে না। আমিও বিশ্বাস করি কেউ দাবায় রাখতে পারবে না। ওরা যত কথাই বলুক বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে যাব। বাংলাদেশকে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নে উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলবো।

বিএনপি সরকারের সময়কার বিভিন্ন উন্নয়নের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে খালেদা জিয়াকে ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, ওই এইট পাস আর মেট্রিক ফেল দিয়ে দেশ চললে সেই দেশের উন্নতি হয় না। দেশপ্রেম থাকলে, দেশের মানুষের প্রতি কর্তব্যবোধ থাকলে এটা করা যায়, আমরা তা করে দেখিয়ে দিয়েছি।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়কার বিভিন্ন উন্নয়নের কথা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, ২১ বছর পর আমরা যখন সরকারে আসি তখন বাংলাদেশকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যাই। মাঝখানে আট বছর বিএনপি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার, এরপর নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০০৯ সালে সরকার গঠন করি। এ ১৪ বছরে আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ, উন্নত বাংলাদেশ। এ বাংলাদেশকে এখন আর কেউ আন্তর্জাতিকভাবেও অবহেলার চোখে দেখে না। প্রত্যেকেই বলে আজকে বাংলাদেশ এত ঘাত-প্রতিঘাতের পরও এগিয়ে যাচ্ছে।

এ সময় বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমরা টাকা দেশের জনগণের কল্যাণে ব্যবহার করছি। অর্থনীতিকে গতিশীল করাই আমাদের লক্ষ্য। তারা (বিএনপি) ক্ষমতায় ছিল- দুর্নীতি, লুটপাট করে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে নিয়ে গিয়ে এখন নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করে।

আমার কথা হলো- বাংলাদেশের যে অগ্রযাত্রা সেটা কেউ রুখতে পারবে না। বিএনপি নেতাদের মুখে আওয়ামী লীগের সমালোচনা শোভা পায় না বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, বিএনপির অনেক নেতা মানিলন্ডারিংয়ের কথা বলে, লুটপাটের কথা বলে, দুর্নীতির কথা বলে। আমি যুবলীগের নেতাকর্মীদের জানাতে চাই- তারেক জিয়ার শাস্তি হয়েছে মানিলন্ডারিংয়ের কেসে। তার বিরুদ্ধে আমেরিকা থেকে এফবিআইয়ের লোক এসে সাক্ষী দিয়ে গেছে। মানিলন্ডারিং কেসে সাত বছর সাজা, বিশ কোটি টাকা জরিমানা, গ্রেনেড হামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত, দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারির জন্য সে সাজাপ্রাপ্ত।

যাদের নেতাই হচ্ছে খুন-মানিলন্ডারিং-অবৈধ অস্ত্র চোরাকারবারি মামলার আসামি, তাদের মুখে আওয়ামী লীগের সমালোচনা শোভা পায় না। জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছে। জিয়া ১৫ আগস্টের হত্যাকারীদের ইনডেমনিটি দিয়ে রক্ষা করেছিল। খালেদা অপারেশন ক্লিন হার্টের নামে যারা হত্যা করেছিল তাদের ইনডেমনিটি দিয়ে গেছেন। অর্থাৎ খুনিদের লালন-পালন করা তাদের চরিত্র।

যুবলীগকে দেশ ও মানুষের সেবায় কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তরুণ সমাজেরই দায়িত্ব এ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। যুবলীগের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলতে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য।

তিনি বলেন, সংগঠনের সব নেতাকর্মীকে বলবো, আদর্শ নিয়ে জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণের জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সেটাই হবে সবার প্রতিজ্ঞা।

তিনি আরও বলেন, যুবলীগের জন্য আমার আহ্বান থাকবে, তরুণের শক্তি বাংলাদেশের সমৃদ্ধি। আজকে যুবকদের কী করতে হবে? দেশ গড়ার কাজে মনোযোগী হতে হবে। দেশের সেবা করতে হবে, মানুষের সেবা করতে হবে।

মহাসমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, জাহাঙ্গীর কবির নানক। এতে সভাপতিত্ব করেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ।

সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান খান নিখিল। এর আগে মহাসমাবেশে যোগ দিতে সকাল থেকে রাজধানীসহ সারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হন হাজার হাজার নেতাকর্মী-সমর্থক। পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কানায় কানায় ভরে যায়। উদ্যানের বাইরে টিএসসিসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অবস্থান করেন বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;