চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বাস টার্মিনাল প্রকল্প : আগামী সপ্তাহে সম্ভাব্যতা যাচাই

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বাস টার্মিনাল প্রকল্প : আগামী সপ্তাহে সম্ভাব্যতা যাচাই
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বাস টার্মিনাল প্রকল্প, আগামী সপ্তাহে সম্ভাব্যতা যাচাই

ইফতেখারুল ইসলাম ।।

কুলগাঁও বালুছড়া এলাকায় বাস টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদনের দুই বছর পর ফিজিবিলিটি স্টাডি (সম্ভাব্যতা যাচাই) করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন।

চসিক এবং জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট শাখা যৌথ সার্ভের মাধ্যমে ফিন্যান্সিয়াল ফিজিবিলিটি স্টাডি করবে। এরপর ভূমির সুনির্দিষ্ট মূল্য নির্ধারণ হবে। আগামী সপ্তাহে এই কাজ শুরু হবে।

চসিকের প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল সোহেল আহমদ বলেন, ফিজিবিলিটি স্টাডি দুই ধরনের হয়। একটি হল টেকনিক্যাল এবং অপরটি হল ফিন্যান্সিয়াল। যেহেতু বাস টার্মিনালের জায়গাটি মাস্টারপ্ল্যানে নির্ধারিত আছে, তাই এখানে টেকনিক্যাল ফিজিবিলিটি স্টাডির প্রয়োজন পড়বে না। তবে যে টাকা বরাদ্দ হয়েছে তারমধ্যে ওই ভূমির অধিগ্রহণ করা সম্ভব কিনা তার জন্য যৌথভাবে ফিন্যান্সিয়াল স্টাডি করা হয়। ভূমি অধিগ্রহণের দীর্ঘ সূত্রিতার কারণে প্রকল্পের খরচ এবং মেয়াদ বেড়ে যায় একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই কাজে সিটি কর্পোরেশনের কোন ক্ষমতা নেই। কারণ ভূমি অধিগ্রহণ কাজ সিটি কর্পোরেশন করে না। এই কাজ জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে করতে হয়।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপকালে তারা জানান, জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় কিছুদিন অন্তর কর্মকর্তা বদলি হন। একজন কর্মকর্তা কিছু কাজ এগিয়ে নিলে পরের জন এসে সেসব স্টাডি করতেই সময় লেগে যায়। এভাবে প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণে দীর্ঘ সূত্রিতা হচ্ছে। এমনকি গতকাল রবিবারও একজন কর্মকর্তা বদলি হয়েছেন।

চসিক সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর চসিকের বিভিন্ন ওয়ার্ডের সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়ন ও বাস ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণে ১২৩০ কোটি টাকা একনেকে অনুমোদন হয়। জিরো ম্যাচিং ফান্ডের এই প্রকল্পের মধ্যে বাস টার্মিনাল প্রকল্পটিও রয়েছে। মূলত নগরীর যানজট নিরসনে আধুনিক বাস টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে চসিক। প্রকল্প অনুমোদনের দুই বছর পার হয়ে গেলেও ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা এখনো কাটেনি। এ কারণে বিলম্ব হচ্ছে যানজট নিরসনের মত অতিজরুরি প্রকল্পটি বাস্তবায়ন।

চসিক সূত্র জানায়, প্রকল্পের মধ্যে বাস  টার্মিনাল নির্মাণে বরাদ্দ রাখা হয় ২৯৭ কোটি টাকা। প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণ কাজে ২৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ১৩০ কোটি টাকা জেলা প্রশাসন বরাবরে জমা দেয়া হয়েছে।

জানা যায়, ১৬ একর জায়গায় নির্মিত হবে টার্মিনাল। এর মধ্যে চসিক অধিগ্রহণ করবে ৮ দশমিক ১০ একর এবং ৮ একর ভূমির মালিক সিডিএ।  প্রকল্পের অন্যান্য খরচের মধ্যে রয়েছে জমির উন্নয়ন খাতে তিন কোটি ৩৭ লাখ ৩৯ হাজার টাকা, অবকাঠামো উন্নয়নে সাত কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ ইয়ার্ড নির্মাণে ২৫ কোটি টাকা। প্রকল্পটি ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন,  ড্রেনেজ ব্যবস্থা, বহুতল বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ এবং আনুষঙ্গিক কাজ কয়েকটি ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে। সবশেষে নির্মাণ করা হবে বহুতল বাণিজ্যিক ভবন। টামিনালের মুখে থাকবে চারতলাবিশিষ্ট নানন্দিক ভবন। ভবনের নিচ তলায় থাকবে সিটি বাস টার্মিনাল, আন্তঃনগর বাস টার্মিনাল, যাত্রী উঠা-নামার আলাদা লেন, ছাদযুক্ত বৃহদাকার খোলা হল রুম ও তথ্য কেন্দ্র, ২২টি টিকিট কাউন্টার, ওয়াইফাই সুবিধাসহ যাত্রীদের বসার জায়গা, লাগেজ কক্ষ, ট্যাক্সি বুকিং বুথ, প্রাথমিক চিকিৎসাকেন্দ্র, খাবার দোকান, ৩০টি কার এবং ট্যাক্সি পার্কিং, পেট্রোল পাম্প, ৬৯টি বাস ডিপো, ১৭টি ওয়ার্কশপ এবং সার্ভিসিং সেন্টার, ৪টি সাভির্সিং লাইন ও ৮টি রক্ষণাবেক্ষণ ওয়ার্কশপ লাইন। দ্বিতীয় তলায় থাকবে রোস্তোরাঁ, সভা, এসি বাস যাত্রীদের বসার জায়গা। তৃতীয় তলায় বাস কোম্পানিগুলোর অফিস, প্যানোরোমা রেস্টুরেন্ট ইত্যাদি ।