ছুটির দিনে পর্যটকদের ভীড় ছিল চট্টগ্রামের উন্মুক্ত বিনোদন স্পট 

ছুটির দিনে পর্যটকদের ভীড় ছিল চট্টগ্রামের উন্মুক্ত বিনোদন স্পট 
ছুটির দিনে পর্যটকদের ভীড় ছিল চট্টগ্রামের উন্মুক্ত বিনোদন স্পট 

আল-আমিন সিকদার ।।

প্রাণঘাতী মহামারী করোনা মোকাবেলায় দীর্ঘ ৫ মাস ঘরবন্দী মানুষগুলো যেন আর অপেক্ষার প্রহর সহ্যই করতে পারছেন না। তাইতো, গতকাল শুক্রবার ছুটির দিনে উন্মুক্ত বিনোদন স্পট হিসেবে পরিচিত বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ভিড় জমিয়েছেন পর্যটকরা। 

১৬ শর্ত জুড়ে দিয়ে চট্টগ্রামের পর্যটন কেন্দ্রগুলো খোলার অনুমতি দিয়েছে জেলা প্রশাসন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ শনিবার থেকে পর্যটনকেন্দ্রগুলো খোলার কথা থাকলেও পর্যটকদের ভীড়ে পরিপূর্ণ ছিল বিভিন্ন উন্মুক্ত স্থানে ।

যদিও শিশু পার্ক, চিড়িয়াখানা, জাদুঘরসহ চট্টগ্রামের অন্যান্য বিনোদন কেন্দ্রগুলো ছিল তালা বন্ধ। তাই বলে ভ্রমণ বন্ধ করে ঘরে বসে ছিলেন না প্রকৃতি প্রেমীরা। ছুটেছেন পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, অভয়মিত্র ঘাট, নেভাল, কাট্টলির রানী রাশমণির ঘাট, ফৌজদার হাট সমুদ্র পাড় এবং সিআরবি’র মত উন্মুক্ত স্থানে। পরিবার-পরিজন, আত্মীয় কিংবা প্রিয় মানুষটিকে নিয়ে বিনোদন স্পটগুলো চষে বেড়িয়েছেন তারা। যদিও অনেক পর্যটকের মুখে ছিল না মাস্ক, মানতে দেখা যায়নি সামজিক দূরত্ব। আর পর্যটকদের ভিড় এতটাই বেশি ছিল যে তাদের বাধা দেয়ার মত সাহসও করতে দেখা যায়নি উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের। বরং তাদের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরাও।

পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে সরেজমিনে দেখা যায়, বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাড়তে থাকে পর্যটকদের ভিড়। বিকেল গড়াতেই পর্যটকদের আগমনে কানায় কানায় ভরে যায় সৈকত পাড়। প্রিয় মানুষদের সাথে আনন্দ-উল্লাস করতে দেখা যায় তাদের। কেউ আনন্দের সময়টুকু করে রাখছেন ক্যামেরা বন্দী, কেউ লাফাচ্ছেন সাগরের উত্তাল ঢেউয়ে আবার কেউবা সাগর বুকে ছুটছেন স্পিড বোর্ডে চড়ে। সব মিলিয়ে সৈকত চষে বেড়াচ্ছেন পর্যটকরা। আর তাদের এ ভিড় এতটাই বেশি ছিল সৈকতে থাকা পুলিশও হিমশিম খেয়েছেন। তবে পর্যটকদের নিরাপত্তায় সেখানে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে ট্যুরিস্ট পুলিশদেরও। কিন্তু এত আনন্দের মধ্যে ভুলে গেলে চলবে না যে, এখনো করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা স্বাভাবিক নয়। তবুও সংক্রমণের তোয়াক্কা না করে ভ্রমণে আসা পর্যটকদের কাউকেই মানতে দেখা যায়নি সামাজিক দূরত্ব। অনেকেরই মুখে ছিল না মাস্ক। আর এ একই দৃশ্য ছিল অভয়মিত্র ঘাট, নেভাল, কাট্টলির রানী রাশমণির ঘাট নামে পরিচিত বিনোদন স্পটগুলোতে।

মুখে মাস্ক না পরেই ছোট শিশুসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সৈকতে বেড়াতে আসা আইনুল কামাল নামে এক চাকুরীজীবীর সাথে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, ‘বাচ্চাদের নিয়ে বেড়াতে যাইনি আজ প্রায় ৫ মাস। বাচ্চারাও ঘরে থাকতে থাকতে খিটখিটে হয়ে পড়েছে। তাই আজ ছুটির দিনে বউ-বাচ্চাদের নিয়ে একটু বেড়াতে বের হয়েছি। শুনেছি সব বিনোদন কেন্দ্র খুলে দেয়া হচ্ছে। তবে সেটা যে, শনিবার থেকে তা জানতাম না। তবে এখানে এসে দেখি অনেক মানুষ। আর এই একদিনের জন্য বসে থাকলে আবার আগামী শুক্রবার আসতে হবে। কারণ, শুক্রবার ছাড়া ছুটি পাই না। আর বাচ্চাদের মাস্ক না পরিয়ে আনার জন্য দুঃখিত।’

এদিকে সৈকতে আগত পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে মাইকিং করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জোবায়ের সৈয়দ। তিনি বলেন, ‘যেহেতু খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে তাই আমরা পর্যটকদের প্রতি সহনশীল ছিলাম। সৈকতের মূল পয়েন্টে এখনও পর্যন্ত কাউকে প্রবেশ করতে না দিলেও আজ দিয়েছি। পাশাপাশি পর্যটকদের সামজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে এবং মাস্ক পরিধান করতে পুলিশের মাধ্যমে মাইকিংও করেছি।’