ত্রিশরণ ফাউন্ডেশনের মাল্টা চাষে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখাচ্ছে লাখো দরিদ্রকে 

ত্রিশরণ ফাউন্ডেশনের মাল্টা চাষে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখাচ্ছে লাখো দরিদ্রকে 
ত্রিশরণ ফাউন্ডেশনের মাল্টা চাষে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখাচ্ছে লাখো দরিদ্রকে 

রাঙামাটি প্রতিনিধি ।। 

পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে মাটি ও আবহাওয়া উপযোগী হওয়ায় মাল্টা চাষ বাড়ছে। বছর চারেক আগে ত্রিশরণ ফাউন্ডেশন নামে একটি সংগঠন পরীক্ষামূলকভাবে মাল্টা চাষ করে সফলতা পায়। এরপর থেকে বড় পরিসরে শুরু হয় মাল্টা চাষ। মাল্টা বিক্রির টাকায় লাখো দরিদ্র ছেলে-মেয়েকে উচ্চশিক্ষার সুযোগ করে দিচ্ছে সংগঠনটি।

রাঙামাটি সদর উপজেলার সাপছড়ি বোধিপুর এলাকায় প্রায় পাঁচ একর জমিতে কয়েক বছর আগে বিভিন্ন ফলের বাগান গড়ে তুলেছে ত্রিশরণ ফাউন্ডেশন। এর মধ্যে রয়েছে আম, বাউ কুল, আপেল কুল ও মাল্টা। ২০১৬ সালে বাগানের একদিকে ৪০টি মাল্টা চারা রোপণ করে সংগঠনটি। দুই বছর ধরে ফলন ধরছে সেসব গাছে। গেল বছর ৪০টি গাছ থেকে ২২ হাজার টাকার মাল্টা বিক্রি করেছে সংগঠনটি। এ বছর ফলন দ্বিগুণ হয়েছে। পুরো বাগান থেকে বিক্রি হয়েছে ৫২ হাজার টাকার মাল্টা।

জানা গেছে, ২০০৭ সালে ৩০ মে শিক্ষা, ধর্মীয়, সামাজিকতা ও বনায়নসহ বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রমের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় ত্রিশরণ ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ। এটি প্রতিষ্ঠা করেছেন রাঙামাটি সদর উপজেলার সাপছড়ি এলাকার বোধিপুর বনবিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত শ্রীমৎ জিনবোধি মহাথেরো। গত ১৩ বছরে সংগঠনটি শিক্ষা, ধর্মীয় ও সামাজিক কাজের পাশাপাশি পাহাড়ের অনাবাদি জমিতে ফল আবাদে ঝুঁকেছে, পেয়েছে সফলতাও।

ত্রিশরণ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ভদন্ত শ্রীমৎ জিনবোধি মহাথেরো বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই এ সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। আমরা সফলতার মধ্য দিয়ে দীর্ঘ এক যুগ পার করেছি। ফাউন্ডেশনের আয়বর্ধক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে পাঁচ একর জমিতে বিভিন্ন ফলের আবাদ করেছি। এর মধ্যে মাল্টা অন্যতম। এখানে যে টাকা আয় হয়, তা দরিদ্র ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখাসহ অন্যান্য সামাজিক খাতে ব্যয় করা হয়। ত্রিশরণের ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় অনেক দরিদ্র ঘরের সন্তানও উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে। এটিই আমাদের অর্জন।

বোধিপুরের বাসিন্দা রাঙামাটি সরকারি কলেজের ছাত্র মঙ্গল বিকাশ চাকমা জানান, ২০১৫ থেকে আমার পড়ালেখার যাবতীয় খরচ বহন করছে ত্রিশরণ ফাউন্ডেশন। আমার মতো রাঙামাটির প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক গরিব ছেলে-মেয়ে এই সংস্থার সহায়তায় উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক পবন কুমার চাকমা বলেন, রাঙামাটিতে কয়েক বছর ধরেই মাল্টা চাষ হচ্ছে। ত্রিশরণ ফাউন্ডেশনের মতো অনেক ব্যক্তি ও সংগঠন লাভজনক এ খাতে ঝুঁকছে। এ বছরে রাঙামাটিতে ২১০ হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে ৮২০ মেট্রিন টন, যা বিগত বছরের দ্বিগুণ।