দক্ষ জনশক্তির কর্মসংস্থানের জন্য চট্টগ্রামে নতুন ৬টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

দক্ষ জনশক্তির কর্মসংস্থানের জন্য চট্টগ্রামে নতুন ৬টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

মোহাম্মদ আলী।। 

চট্টগ্রামে ৬টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) নির্মাণ করছে সরকার। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো নিয়ন্ত্রণাধীন এসব কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে। দেশে-বিদেশে দক্ষ জনশক্তির কর্মসংস্থানের জন্য ইতোমধ্যে ২টিতে ২০২১ সাল থেকে শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম শুরু করা হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক বাজারে জনশক্তি রপ্তানিতে টিকে থাকতে  এবং দেশে মানসম্পন্ন লোকবল তৈরি করতে সরকার সারাদেশে উপজেলা পর্যায়ে ৪০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। এর মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় রয়েছে ৬টি। উপজেলাগুলো হচ্ছে, রাউজান, সন্দ্বীপ, হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, মিরসরাই ও পটিয়া। এর আগে জেলা পর্যায়ে ১টি এবং বিভাগীয় পর্যায়ে মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে চট্টগ্রামে আরো ২টি টিটিসি স্থাপন করা হয়। উপজেলা পর্যায়ে প্রতিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণে সরকারের ব্যয় হচ্ছে ৩০ কোটি টাকা। ৬টির জন্য ব্যয় হচ্ছে ১৮০ কোটি টাকা। প্রত্যেকটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র দেড় একর জমিতে নির্মাণ হচ্ছে।

সূত্র জানায়, দেশে-বিদেশে চাহিদা অনুযায়ী এসব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদী কমপক্ষে ২০টি কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। এর মধ্যে অন্যতম কয়েকটি হচ্ছে- ড্রাইভিং, কম্পিউটার, গার্মেন্টস, অটোমোবাইল, রেফ্রিজারেটর, ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিক্স, সিএনসি, আরপিএল ইত্যাদি। এজন্য প্রতিটি টিটিসি’তে বার্ষিক কমপক্ষে এক হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। শিক্ষার্থীর ভর্তির যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি থেকে এসএসসি পাস। কোর্সগুলোর মেয়াদ হবে সর্বনিম্ন তিন মাস থেকে সর্বোচ্চ দুই বছর।

সূত্র আরো জানায়, চট্টগ্রামের ৬টি টিটিসি’র মধ্যে রাউজান ও সন্দ্বীপের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ২০২১ সালের জানুয়ারির মধ্যে এগুলো গণপূর্ত মন্ত্রণালয় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করবে। এরপর আরো কিছু আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে এগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম শুরু হবে। হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, মিরসরাই ও পটিয়া উপজেলার অবশিষ্ট ৪টি টিটিসি জায়গা নির্বাচন করে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। অনুমোদনের পর এগুলোর নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস, চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল আলম মজুমদার বলেন, ‘চট্টগ্রামের ৬ উপজেলা টিটিসি নির্মাণের কাজ চলছে। অবশিষ্ট ৮ উপজেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) নির্মাণ করা হবে। মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সারাদেশে আরো ১০০টি টিটিসি নির্মাণ করা হবে। এর আওতায় চট্টগ্রামের অন্য উপজেলাগুলোতেও টিটিসি নির্মাণ হবে। এজন্য ডিপিপি তৈরির কাজ চলছে।’

মোহাম্মদ জহিরুল আলম মজুমদার বলেন, ‘দেশে-বিদেশে দক্ষ জনশক্তির চাহিদা মেটাতে এসব টিটিসি নির্মাণ হচ্ছে। যাতে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদী প্রশিক্ষণ নিয়ে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হতে পারে। তাতে বাড়বে দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহও।’

এদিকে টিটিসি নির্মাণ প্রসঙ্গে ওমানস্থ চট্টগ্রাম সমিতির সভাপতি এবং এনআরবি সিআইপি এসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াছিন চৌধুরী (সিআইপি) বলেন, ‘নির্মাণাধীন টিটিসি’র সাথে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত কোন সংস্থা বা কোম্পানির লিংক থাকতে হবে। তাহলে টিটিসি থেকে পাস করা শিক্ষার্থীর সার্টিফিকেট বিদেশে কাজে আসবে। দ্রুত চাকরির সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি বেতনও বেশি পাবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে এসব সার্টিফিকেটের তেমন কোন মূল্য আসবে না। বিষয়টি আমি সরকারের উচ্চ পর্যায়েও জানিয়েছি। আশা করি তারা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় আনবে।’