না ফেরার দেশে আবদুল গাফফার চৌধুরী

না ফেরার দেশে আবদুল গাফফার চৌধুরী
না ফেরার দেশে আবদুল গাফফার চৌধুরী

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।।

বিশিষ্ট কলামিস্ট, সাংবাদিক ও সাহিত্যিক আবদুল গাফফার চৌধুরী আর নেই। স্থানীয় সময় বুধবার রাতে লন্ডনে মারা যান তিনি। লন্ডনের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকাল ৬.৪০ মিনিটে লন্ডনের বার্ণেট হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই নানান অসুস্থ্যতায় ভোগছিলেন তিনি।

সর্বশেষ গত ১৩ এপ্রিল, হাসপাতালে থাকা অবস্থায় মারা যান তার মেয়ে বিনীতা চৌধুরী। এর পর থেকেই মানসিক ভাবে বিশেষ ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি সৈয়দ মুজাম্মিল আলী। বর্তমানে বার্নেট হাসপাতালেই গাফফার চৌধুরীর মরদেহ রাখা আছে। পরিবারের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

১৯৩৪ সালের ১২ ডিসেম্বর বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জের উলানিয়ার চৌধুরীবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন আবদুল গাফফার চৌধুরী। তার বাবা হাজী ওয়াহিদ রেজা চৌধুরী ও মা জহুরা খাতুন। ১৯৫০ সালে গাফফার চৌধুরী পরিপূর্ণভাবে কর্মজীবন শুরু করেন। এ সময়ে তিনি ‘দৈনিক ইনসাফ’ পত্রিকায় সাংবাদিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। মহিউদ্দিন আহমদ ও কাজী আফসার উদ্দিন আহমদ তখন ‍‘দৈনিক ইনসাফ’ পরিচালনা করতেন। ১৯৫১ সালে ‘দৈনিক সংবাদ’ প্রকাশ হলে গাফফার চৌধুরী সেখানে অনুবাদকের কাজ নেন। এরপর তিনি বহু পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত হন।

মাসিক সওগাত, দিলরুবা, মেঘনা, ইত্তেফাক, আজাদ, জেহাদ ও পূর্বদেশসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেন বরেণ্য এই সাংবাদিক। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে সপরিবারে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আগরতলা হয়ে কলকাতা পৌঁছান। সেখানে মুজিবনগর সরকারের মুখপত্র সাপ্তাহিক জয়বাংলায় লেখালেখি করেন। এ সময় তিনি কলকাতায় দৈনিক আনন্দবাজার ও যুগান্তর পত্রিকায় কলামিস্ট হিসেবেও কাজ করেন। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর দৈনিক জনপদ বের করেন।

সাংবাদিকতার পাশাপাশি গল্প, উপন্যাস, স্মৃতিকথা, ছোটদের উপন্যাসও লিখেছেন তিনি। ‘চন্দ্রদ্বীপের উপাখ্যান’, ‘সম্রাটের ছবি’, ‘ধীরে বহে বুড়িগঙ্গা’, ‘বাঙালি না বাংলাদেশী’সহ তার প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা প্রায় ৩০। এছাড়া তিনি কয়েকটি পূর্ণাঙ্গ নাটক লিখেছেন। এর মধ্যে আছে ‘পলাশী থেকে বাংলাদেশ’, ‘একজন তাহমিনা’ ও ‘রক্তাক্ত আগস্ট’।

কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন গাফফার চৌধুরী। ১৯৬৩ সালে ইউনেস্কো পুরস্কার পান তিনি। এছাড়া বাংলা একাডেমি পদক, একুশে পদক, শেরেবাংলা পদক, বঙ্গবন্ধু পদকসহ আরও অনেক পদকে ভূষিত হয়েছেন।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;