প্রাথমিকের ৮৯ ভাগ বই চট্টগ্রামে স্কুলে, চলছে বই উৎসবের প্রস্তুতি

প্রাথমিকের ৮৯ ভাগ বই চট্টগ্রামে স্কুলে, চলছে বই উৎসবের প্রস্তুতি
প্রাথমিকের ৮৯ ভাগ বই চট্টগ্রামে স্কুলে, চলছে উৎসবের প্রস্তুতি

রতন বড়ুয়া ।।

আরেকটি শিক্ষাবর্ষ শেষ হচ্ছে । আর ক’দিন পর নতুন বছর। এর মধ্যে স্কুলগুলোর বার্ষিক পরীক্ষা কোথাও শুরু হচ্ছে, কোথাও শেষ পর্যায়ে। পরীক্ষা শেষে মিলবে ফলাফল। আর ফলাফল পেলেই নতুন ক্লাসের হাতছানি। নতুন ক্লাসের নতুন বইয়ের অপেক্ষায় এখন দেশের কয়েক কোটি খুদে শিক্ষার্থী।
এখন নতুন বছরের প্রথম দিনের ক্ষণ গণনা। ওইদিন দেশজুড়ে চলবে বই উৎসব। নতুন বই হাতে নিয়ে নতুন স্বপ্নের বীজ বুনবে শিক্ষার্থীরা। নতুন বইয়ের গন্ধে মাতোয়ারা শিক্ষার্থীর উচ্ছ্বাস ছুঁয়ে যাবে শিক্ষক-অভিভাবকদেরও। বই উৎসব ঘিরে স্কুলগুলোতে বেশ কয়েক মাস আগে থেকে আসতে শুরু করে নতুন বই। চট্টগ্রাম জেলার স্কুলগুলোতে এরই মধ্যে চাহিদার ৮৯ ভাগ বই পৌঁছে গেছে বলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।
এ তথ্য নিশ্চিত করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম বলেন, জেলার ২০টি থানা/উপজেলার স্কুলে এবার মোট বইয়ের চাহিদা ছিল ৪৮ লাখ ১৪ হাজার ২০৪টি। ইতোমধ্যে (৪ ডিসেম্বরের মধ্যে) ১১টি থানা/উপজেলায় চাহিদার শতভাগ বই পৌঁছে গেছে। ৯টি উপজেলায় কিছু সংখ্যক বই এখনো এসে পৌঁছেনি। সব মিলিয়ে ৮৯ ভাগ বই পাওয়া গেছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বাকি বইগুলো পৌঁছে যাবে আশা প্রকাশ করে স্কুলে-স্কুলে এখন বই উৎসবের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, মহানগরীর ৬টি থানা ও ১৪টি উপজেলাসহ চট্টগ্রাম জেলায় প্রাথমিক পর্যায়ের মোট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৪ হাজার ৩৮৮টি। এর মধ্যে জাতীয়করণকৃতসহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ২ হাজার ২৬৯টি, বেসরকারি কিন্ডারগার্টেন ১ হাজার ৭২৩টি, এনজিও স্কুল ১৩৩টি, উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন ১১৬টি, রঙ (আনন্দ স্কুল) ৯০টি, আনরেজিস্ট্রার্ড স্কুল ২০টি এবং পরীক্ষণ স্কুল ২টি।
এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রথম শ্রেণিতে ২ লাখ ৯ হাজার ৮৫ জন, ২য় শ্রেণিতে ২ লাখ ৭ হাজার ৩৮৮ জন, ৩য় শ্রেণিতে ২ লাখ ৮ হাজার ৭৫৫ জন, ৪র্থ শ্রেণিতে ২ লাখ ৫ হাজার ৬২৩ এবং ৫ম শ্রেণিতে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৩৬৯ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। সব মিলিয়ে জেলার ৪ হাজার ৩৮৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০ লাখ ১৮ হাজার ২২০ জন। এসব শিক্ষার্থীর জন্য ২০২০ সালে প্রাথমিকের মোট বইয়ের সম্ভাব্য চাহিদা ছিল ৪৮ লাখ ১৪ হাজার ২০৪টি। এর মধ্যে গত ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত চাহিদার ৮৯ ভাগ বই থানা-উপজেলার স্কুলগুলোতে পৌঁছে গেছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, মহানগরের ৬ থানার মধ্যে কোতোয়ালী থানাধীন স্কুলগুলোতে এবার বইয়ের চাহিদা ছিল ২ লাখ ৭ হাজার, চান্দগাঁও থানায় ২ লাখ ৯৩ হাজার ৪০০, পাঁচলাইশ থানায় ৩ লাখ ১৫ হাজার ৩০০, ডবলমুরিং থানায় ৩ লাখ ৭ হাজার ৫৯৯, বন্দর থানায় ৩ লাখ ১৩ হাজার ৯০৫ এবং পাহাড়তলী থানায় ২ লাখ ৪৭ হাজার ২০০টি। এর মধ্যে পাঁচলাইশ থানার স্কুলগুলোতে ৭৮ ভাগ বই পৌঁছলেও ২২ ভাগ বই এখনো পাওয়া যায়নি। বাকি ৫ থানায় চাহিদার শতভাগ বই পৌঁছে গেছে।
অন্যদিকে, উপজেলাগুলোর মধ্যে সন্দ্বীপে এবার বইয়ের চাহিদা ছিল ১ লাখ ৯১ হাজার ৯৩৪টি, সীতাকুণ্ডে ২ লাখ ২৩ হাজার ৩৫০, মীরসরাইয়ে ২ লাখ ১০ হাজার ৯২১, হাটহাজারীতে ২ লাখ ৩৯ হাজার ৭১০, ফটিকছড়িতে ২ লাখ ৯৪ হাজার ৬৯০, রাউজানে ২ লাখ ১০ হাজার ৮৫২, রাঙ্গুনিয়ায় ১ লাখ ৯৫ হাজার ৬১৬, বোয়ালখালীতে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৯০০, পটিয়ায় ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৭৭২, চন্দনাইশে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৫৫০, সাতকানিয়ায় ২ লাখ ৫০ হাজার ৫০০, লোহাগাড়ায় ১ লাখ ৭৩ হাজার ৩২৫, বাঁশখালীতে ৩ লাখ ১৪ হাজার ৪৬০টি এবং আনোয়ারা উপজেলায় এবার প্রাথমিকের বইয়ের চাহিদা ছিল ১ লাখ ৮৫ হাজার ২২০টি।
এর মধ্যে সন্দ্বীপ, সীতাকুণ্ড, মীরসরাই, ফটিকছড়ি, বোয়ালখালী, পটিয়া ও আনোয়ারা উপজেলায় ইতোমধ্যে চাহিদার শতভাগ বই পৌঁছে গেছে। বাকি উপজেলাগুলোর মধ্যে হাটহাজারীতে ৭৪ ভাগ, রাউজানে ৭৮ ভাগ, রাঙ্গুনিয়া ও চন্দনাইশে ৫১ ভাগ, সাতকানিয়া ও বাঁশখালীতে ৭৫ ভাগ এবং লোহাগাড়া উপজেলায় চাহিদার ৭৬ ভাগ বই পাওয়া গেছে বলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র নিশ্চিত করেছে।