পর্যটকের পদভারে মুখরিত সীতাকুণ্ডের ছোট দারোগা হাট সহস্রধারা ঝর্ণা

পর্যটকের পদভারে মুখরিত সীতাকুণ্ডের ছোট দারোগা হাট সহস্রধারা ঝর্ণা

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি।।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের প্রতিটি জায়গা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। ঢাকা চট্টগ্রাম হাইওয়ে রোড থেকে পূর্বদিকে গেলে পাহাড়ে পাহাড়ি কন্যা সেজেছে তার নিজস্ব রূপে এবং হাতছানি দিয়ে ডাকছে, যেন তার রূপ আর পাহাড়ি ঝর্ণার পানি দিয়ে প্রতিটি মানুষের মনের সকল দুঃখ বেদনা শীতল করে মনকে সতেজ ও প্রফুল্ল রাখতে পারে। অন্যদিকে পশ্চিম দিকে গেলে সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ আর সবুজে ঘেরা প্রাকৃতিক দৃশ্য এই যেনো মনের উথাল- পাতাল ঢেউ তীরে এসে মিলিয়ে যাচ্ছে আর মনকে স্নিগ্ধ ও শীতল করে তুলছে।

পাহাড়ি কন্যা সহস্রধারা ছোট দারোগারহাট, বারৈয়াঢালা, সীতাকুণ্ডে বৃদ্ধি পেয়েছে পর্যটকদের আনাগোনা। দীর্ঘ চার মাস যাবত মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে মানুষ ঘর থেকে বের না হলেও ঈদুল আযহার পর চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পাহাড়ি কন্যা সহস্রধারা ঝর্ণা দেখার জন্য ভিড় জমাচ্ছে হাজার পর্যটক‌। পর্যটকরা মনের আনন্দে সহস্রধারা ঝর্ণা এসে সময় কাটাচ্ছে এবং আত্মতৃপ্তি নিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। সশ্রদ্ধা ঝরনার পাশাপাশি এখানে রয়েছে অগ্নিকুণ্ড বুদবুদকুণ্ড ও পুরাতন মন্দির।

পর্যটকদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঝর্ণা আছে তবে এতটা ভালো সেখানে লাগেনা । তারা আরো বলেন, জায়গাটা অনেক সুন্দর কিন্তু ছোট দারোগার হাট থেকে সহস্রধারা পর্যন্ত আসার রাস্তার বেহাল দশা। এটার কাজ সংস্কার হলে পর্যটক বৃদ্ধি পাবে।

ছোট দারোগার হাট থেকে সহস্রধারা ঝর্ণা পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার কাজের বিষয়ে ২নং ইউনিয়ন এর চেয়ারম্যান জনাব রেহান উদ্দিন রেহান বলেন, পাহাড় ধস ও অন্যান্য কারণে রাস্তাটির ভাঙ্গন ধরেছে তবে পর্যটকদের সুবিধার্থে সংস্কারের জন্য ইতিমধ্যে সরকারিভাবে ১ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। উক্ত রাস্তার কিছু কাজ ঠিকাদারদের মাধ্যমে করলেও মহামারী করোনাভাইরাস এর কারণে দীর্ঘ চার মাস ধরে বন্ধ আছে। খুব শীঘ্রই রাস্তাটি সংস্কারের কাজ আবার শুরু হবে এবং অল্প সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ রাস্তা সংস্কার করতে সক্ষম হব।

তিনি আরো জানান যে, করোনা ভাইরাসের কারণে সহস্রধারা সমবায় সমিতির ২০২০ এর নতুন কমিটি গঠন করা হয়নি। খুব শীঘ্রই সরকারি নির্দেশক্রমে উক্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং সকল কার্যক্রম সুন্দর ভাবে পরিচালিত হবে।

পর্যটকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা মনের আনন্দে আমাদের পাহাড়ি কন্যা সহস্রধারা ঝর্ণা এসে সময় কাটাতে পারেন এখানে সর্বোচ্চ সিকিউরিটি ব্যবস্থা আছে। তারপরও কোন ধরনের হয়রানির শিকার হলে আমার সাথে সহস্রধারা সমবায় সমিতির কমিটিদের সাথে যোগাযোগ করবেন।

সহস্রধারা ঝর্ণায় যেভাবে আসবেন:

ঢাকা কিংবা চট্টগ্রাম থেকে যেকোন বাসে সীতাকুণ্ডের ছোট দারোগারহাট নামবেন। বাসের হেল্পার কিংবা সুপারভাইজার কে বললে নামিয়ে দিবে। আর ট্রেনে আসলে সীতাকুণ্ড নামতে হবে। সেখানে থেকে সিএনজিতে করে ছোট দারোগারহাট।

ছোট দারোগারহাট থেকে সিএনজি নিয়ে চলে যাবেন সহস্রধারা লেকে। এখান থেকে ০৫-১০ মিনিট হাঁটার পথ। এরপরই দেখতে পাবেন সহস্রধারা লেকে ওঠার জন্য সিঁড়িপথ।

অথবা আপনি চাইলে ছোট দারোগারহাট থেকে সহস্রধারা লেক পর্যন্ত পুরো রাস্তাটাই হেঁটে হেঁটে যেতে পারেন। সিঁড়িপথ দিয়ে উপরে উঠে এলেই দেখতে পাবেন নয়নাভিরাম অপরূপ সহস্রধারা লেক। লেক থেকে নৌকা ভাড়া করে সহস্রধারা ঝর্ণায় যাওয়া যায়। জনপ্রতি ২০ টাকা ভাড়া। অথবা বাম পাশের রাস্তা ধরে ১৫-২০ মিনিট হেঁটে পৌঁছে যাবেন সহস্রধারা ঝর্ণায়।