ভারতের নয়ডাতে ৯ সেকেন্ডেই টুইন টাওয়ার মিশে গেছে মাটির সঙ্গে

ভারতের নয়ডাতে ৯ সেকেন্ডেই টুইন টাওয়ার মিশে গেছে মাটির সঙ্গে
ভারতের নয়ডাতে ৯ সেকেন্ডেই টুইন টাওয়ার মিশে গেছে মাটির সঙ্গে

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।।

মাত্র ৯ সেকেন্ডের মধ্যেই ভারতের উত্তর প্রদেশের নয়ডার ‘টুইন টাওয়ার’ মিশে গেছে মাটির সঙ্গে। কিন্তু ঠিক কী কারণে এই দুই ভবনের ভেঙ্গে ফেলা হল সেই কাহিনিতে আসা যাক।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, ২০০০ সালের মাঝামাঝি সময় নয়ডায় বিভিন্ন টাওয়ার নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ২০০৫ সালে সেক্টর ৯৩-এ ১৪টি অট্টালিকা নির্মাণের অনুমতি পেয়েছিল সুপারটেক নির্মাণ সংস্থা। অট্টালিকাগুলোর উচ্চতা ৩৭ মিটারের মধ্যে হতে হবে, এমন নির্দেশ দিয়েছিল নয়ডা প্রশাসন। কিন্তু ২০১২ সালের পরই যেন সব বদলে যায়। ৯ তলার জায়গায় ১১ তলার ১৫টি ভবন নির্মাণ শুরু হয়। তারপর শুরু হয় ৪০ তলার কাজ।

প্রথমে বলা হয়েছিল ফ্ল্যাটের সামনে সবুজ এলাকা থাকবে। কিন্তু সেই সবুজ ধ্বংস করেই বানানো শুরু হয় গগনচুম্বী টাওয়ার। একটির নাম অ্যাপেক্স, আরেকটির সিয়েন। ২৪ তলা পর্যন্ত এই যমজ অট্টালিকা নির্মাণ করা হবে বলে স্থির করা হয়েছিল। কিন্তু পরে নিয়ম ভেঙে সেই অট্টালিকাই ৪০ তলার দিকে যেতে থাকে। আর এখান থেকেই যমজ দুই ভবন নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত। এমারল্ড কোর্ট ওনার্স রেসিডেন্টস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন এই অনিয়মের বিরুদ্ধে এলাহাবাদ হাইকোর্টে মামলা করে।

মামলায় ২০১৪ সালে টুইন টাওয়ার গুঁড়িয়ে দেওয়ার আদেশ দেন এলাহাবাদ হাইকোর্ট। এরপর মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে যায়। গত বছরের আগস্টে ভবনটি গুঁড়িয়ে দিতে তিন মাসের সময়সীমা বেঁধে দেন সুপ্রিম কোর্ট। মুম্বাইভিত্তিক কোম্পানি এডিফিস ইঞ্জিনিয়ারিংকে দুটি টাওয়ার গুঁড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে কারিগরি জটিলতার কারণে এ প্রক্রিয়া শুরু করতে এক বছর লেগে গেছে।

অবশেষে যবনিকাপাত হলো গতকাল রোববার স্থানীয় সময় বেলা আড়াইটায়। মাত্র ৯ সেকেন্ডের ব্যবধানে ইতিহাস হয়ে গেল যমজ দুই ভবন। নিয়ন্ত্রিত বিশাল বিস্ফোরণের মাধ্যমে ধুলার মেঘ তুলে মুহূর্তের মধ্যে হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে ভবন দুটি। গ্রেটার নয়ডা এক্সপ্রেসওয়ের ধারে জোড়া বহুতল ভবন দুটির বিভিন্ন টাওয়ার ভর্তি করা হয়েছিল ৩ হাজার ৭০০ কেজি বিস্ফোরক দিয়ে। তাতেই উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ৩২ তলার অ্যাপেক্স ও ২৯ তলার সিয়েনকে।

সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, ভবন দুটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হলেও এখন কর্তৃপক্ষের অন্যতম চ্যালেঞ্জ ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করা। এই অভিযানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ভবন দুটি ভেঙে ফেলায় সেখানে ৫৫ হাজার টন আবর্জনা তৈরি হবে। আর এসব আবর্জনা পরিষ্কারে সময় লাগতে পারে অন্তত তিন মাস।

বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা আগে নয়ডার ওই এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়। এমনকি সরিয়ে নেওয়া হয় কুকুরসহ অন্যান্য প্রাণীও। পুরো ব্যয় সুপারটেককে বহন করতে হচ্ছে। এই কাজে ২০ কোটি রুপির বেশি ব্যয় হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;