যমজ মাথার শিশু রোকেয়া- রাবেয়ার পরিবারে বইছে আনন্দাশ্রু

যমজ মাথার শিশু রোকেয়া- রাবেয়ার পরিবারে বইছে আনন্দাশ্রু
যমজ মাথার শিশু রোকেয়া- রাবেয়ার পরিবারে বইছে আনন্দাশ্রু

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

যমজ মাথার শিশু রোকেয়া- রাবেয়া চার বছরের বেশি সময় ধরে আলোচনায় ছিলো । ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট থেকে সুদূর হাঙেরি হয়ে আবার দেশের মাটিতে ফিরেছে তারা। ধাপে ধাপে এগিয়ে চলা তাদের চিকিৎসার চূড়ান্ত রূপ পায় গত বছরের ১ আগস্ট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ তদারকি-সহায়তা-নির্দেশনায় দেশের ইতিহাসে প্রথম ও বিশ্বের ১৭ নম্বর ঘটনা হিসেবে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা করা হয় রাবেয়া-রোকেয়াকে।

অস্ত্রোপচারের পর দ্রুত সুস্থ ও স্বাভাবিক হয়ে উঠতে শুরু করে রাবেয়া।

সেই রোকেয়া-রাবেয়ার স্মৃতিচারণ করে ফেসবুকে একটি পোষ্ট করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপ প্রেস সচিব আশরাফুল ইসলাম খোকন।  সময়ের আলোর পাঠকদের জন্য পোষ্টটি হুবুহু নিচে দেয়া হলো :-

স্কুল শিক্ষক দম্পতি রফিকুল ইসলাম ও তাসলিমা খাতুনের মুখে এখন খুশির ঝিলিক, হাসি লেগেই আছে। দুশ্চিন্তার ছায়া অনেকটাই এখন কেটে গেছে। আদরের সন্তান রোকেয়া- রাবেয়াকে নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। সন্তানদের হাসিমাখা মুখ দেখে চোখের কোনে বেয়ে পড়ছে আনন্দাশ্রু।


কিছু দিন আগেও মুখে হাসি ছিল না। কারণ তাদের আদরের সন্তান ফুটফুটে রোকেয়া- রাবেয়া অন্য শিশুদের মতো স্বভাবিক ছিল না। তাদের জন্ম ১৬ জুলাই ২০১১৬ সালে পাবনার চাটমোহরে। দুইবোন জন্ম থেকেই ছিল মাথা জোড়া লাগা অবস্থায়। স্থানীয় একটা ক্লিনিকে তাদের জন্ম। নাওয়া খাওয়া ভুলে এরপর থেকেই বাবা-মায়ের যত চিন্তা সব দুই সন্তানের সুস্থতা নিয়ে। তারা যখন দিশেহারা দেশের লাখো পরিবারের মতো তাদের পরিবার আলোক বর্তিকা হয়ে আসেন বঙ্গবন্ধু কন্যা মানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোকেয়া রাবেয়াকে দেখতে যান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাদের বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। ২০১৮ সালের ২৪ অক্টোবর ঐদিন প্রধানমন্ত্রী একই সঙ্গে সেখানে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাষ্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটেরও উদ্বোধন করেন।

রোকেয়া-রাবেয়ার জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। ঢাকার সিএমএইচ হাসপাতালে টানা ৩৩ ঘন্টা অপারেশন চালিয়ে তাদের মাথা আলাদা করা হয় গত বছরের ০২ আগস্ট। সার্জারির পর সিএমএইচ হাসপাতালে গিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদেরকে দেখেও আসেন। এর আগেও কয়েকদফা অপারেশন করা হয়। দেশের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ছাড়াও হাঙ্গেরির ৩৫ জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এতে অংশ নেন। এর আগে সাত মাস তাদেরকে রাখা হয় হাঙ্গেরির বুদাপেস্টের একটি হাসপাতালে।

রাবেয়া-রোকেয়া ও তাদের হাস্যজ্বল বাবা-মা বাড়ি ফিরে গেছেন। চিকিৎসার সমন্বয়কারি ডাঃ সামন্তলাল সেন আজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে তাদের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করেন। সফলতার গল্পগুলো শুনে প্রধানমন্ত্রী নিজেও আনন্দিত।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১৬ জুলাই পাবনা সদরের একটি হাসপাতালে সিজারের মাধ্যমে রাবেয়া-রোকেয়ার জন্ম। তাদের বয়স যখন ৫ দিন, তখন থেকে চিকিৎসার জন্য ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আনা হয়। সেখানেও তাদের চিকিৎসা দেয়া হয়।