রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কাট্টলী উপকূলে অকেজো চার স্লুইস গেট

রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কাট্টলী উপকূলে অকেজো চার স্লুইস গেট
রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কাট্টলী উপকূলে অকেজো চার স্লুইস গেট

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।।

সবজির আবাদ করছেন কাট্টলীর একাধিক কৃষক । কিন্তু পানি সংকটের কারণে বেশ চিন্তিত তাঁরা । জমির পাশে খাল থাকলেও লবণাক্ততার কারণে সে পানি তাঁরা ব্যবহার করতে পারছেন না। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নগরীর কাট্টলী উপকূলের চারটি স্লুইস গেটই এখন অকেজো। গেট দিয়ে জোয়ারের সময় খালে ঢুকে পড়ছে সমুদ্রের পানি। ফলে চাষাবাদে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন এখানকার কৃষকরা। অন্যদিকে পানি চলাচল বাধাগ্রস্ত হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে পুরো এলাকাজুড়ে স্থায়ী জলাবদ্ধতার শঙ্কাও রয়েছে ।

চট্টগ্রামের কাট্টলী উপকূল এলাকায় গত কয়েক বছর আগেও প্রায় চারশ একর জমিতে চাষাবাদ হত। নানা কারণে গত কয়েকবছরে এর প্রায় একতৃতীয়াংশ জমি অনাবাদি হয়ে পড়েছে। বাকি যে জমিটুকু এখন আবাদি রয়েছে পানি সংকটের কারণে সেখানে চাষাবাদ করতে পারছেন না এখানকার কৃষকরা।

স্থানীয় কৃষক রোকন উদ্দীন বলেন, জমিতে বর্তমানে বিভিন্ন সবজির আবাদ রয়েছে। পাশের এলাকার একটি পুকুরের পানি ব্যবহার করছি। সে পুকুরের পানিও তলানিতে। ফলে শেষ পর্যন্ত ফসল উঠবে কিনা তা নিয়ে রয়েছে সন্দেহ। রোকন উদ্দীনের  মতোই একই বিপদে এলাকার প্রায় সব কৃষক।

এ এলাকায় জাকির আলী খাল, মহেশ খাল, কাট্টলী খাল ও কালিয়ার ছড়া এ চারটি খালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত স্লুইস গেট রয়েছে। উত্তর হালিশহর থেকে উত্তর কাট্টলী পর্যন্ত তিনটি ওয়ার্ডের পানি চলাচল করে এ খালগুলো দিয়ে। কিন্তু স্লুইস গেট অকেজো থাকায় শুধুমাত্র কৃষক নয়, হুমকির মুখে পুরো এলাকা। 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তয়ন কুমার ত্রিপুরা বলেন, আউটার রিং রোড ও বে-টার্মিনাল চলমান প্রকল্পের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এখানকার অনেকগুলো খালের পানি প্রবাহ। গেটগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করাও সম্ভব হয়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকবলও কম। তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা অভিযোগ জানালে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এগুলো মেরামত করে দেয়া হয়।

১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ড কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন মঞ্জু বলেন, স্লুইস গেট সংস্কারে গত কয়েক বছর ধরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে অনুরোধ জানিয়ে আসছি। সংস্কার কাজ শুরু করার জন্য চিঠিও দেয়া হয়েছে। এছাড়া সম্প্রতি সিডিএ’র সাথে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের দ্বিপক্ষিয় বৈঠকে এ সমস্যা সমাধানের দাবি জানিয়েছি। স্থানীয় কৃষকরা কোন অভিযোগ না জানালেও স্বপ্রণোদিত হয়ে এলাকার স্বার্থে গেটগুলো সংস্কারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছে, গত কয়েকবছর ধরে সংকীর্ণ খাল দিয়ে পানি ঠিকভাবে বের হতে না পারায় বৃষ্টির পানিতে নিচু এলাকা প্লাবিত হয়ে যাচ্ছে। স্লুইস গেটগুলো যদি পুরোপুরি অকেজো হয়ে পড়ে তাহলে বর্ষা মৌসুমে ভয়ানক পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। বর্ষাকালে সামান্য বৃষ্টিতে তালিয়ে যায় হালিশহর উপকূলীয় এলাকার বেশিরভাগ জায়গা। গেটগুলো সংস্কার না করলে নতুনভাবে জলাবদ্ধতার শিকার হতে পারে ।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;