শোকের মাস আগস্ট আসলেই বিএনপি নানামূখী ষড়যন্ত্র শুরু করে - ড. হাছান মাহমুদ

শোকের মাস আগস্ট আসলেই বিএনপি নানামূখী ষড়যন্ত্র শুরু করে - ড. হাছান মাহমুদ

পোস্টকার্ড ডেস্ক।।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, শোকের মাস আগস্টে পুরো জাতি যখন শোকাচ্ছন্ন তখন বিএনপি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও দেশকে উত্তপ্ত করার অপচেষ্টা করছে। তারা আগস্টকে কিছুতেই সহ্য করতে পারেনা। আগস্ট আসলে বিএনপি নানামূখী ষড়যন্ত্র শুরু করে। ভোলার ঘটনাসহ সাম্প্রতিক ঘটনা ও তাদের বক্তৃতা বিবৃতি তার সাক্ষ্য বহন করে। 

মন্ত্রী আজ চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে বাংলাদেশে রেলওয়ের উদ্যোগে ‘‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমান রেল জাদুঘর’’ উদ্বোধন শেষে ভোলার ঘটনা ও বিএনপি নেতাদের বক্তৃতা বিবৃতি বিষয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, তারেক রহমানের সহযোগিতায় বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার জ্ঞাতসারে তারা ২১ আগস্ট গ্রেনেড় হামলা করে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। এর আগে ১৭ আগস্ট তারা দেশব্যাপী একযোগে বোমা হামলা করেছিল। আগস্ট এলেই যে তাদের গাত্রদাহ শুরু হয়ে যায় এসব ঘটনা তার প্রমাণ। তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা সরকারকে আন্দোলনের ভয় দেখায়। অথচ জনগণের দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাজপথে নামলে বিএনপিকে খুঁজে পাওয়া যাবেনা। বিএনপিকে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সুযোগ দেওয়া হবেনা উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা তাদের মোকাবেলায় রাজপথে নামলে তারা পালায় কি না তা-ই দেখার বিষয়।

এর আগে মন্ত্রী বাংলাদেশ রেলওয়ের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমান রেল জাদুঘর উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আইন ও ভূমি) মো. ফারুকুজ্জামান, পূর্বাঞ্চল রেলয়ের মহাব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, পূর্বাঞ্চলের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী মো. বোরহান উদ্দিন বক্তৃতা করেন।

এ অনুষ্ঠানে মন্ত্রী ভ্রাম্যমান রেল জাদুঘর চালু করায় রেলওয়েকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, এর মাধ্যমে স্টেশনে আগত সাধারণ যাত্রীগণ বঙ্গবন্ধুর বেড়ে ওঠা, তাঁর সংগ্রামী জীবন ও জাতির জনক হয়ে ওঠার নানা বিষয় জানতে পারবে। পাশাপাশি ভ্রমণরত নতুন প্রজন্মও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জেনে তাদের জীবন ও কর্মে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন ও ধারণ করতে পারবে। ফলে নতুন প্রজন্মের মধ্যে দেশপ্রেম ও ত্যাগের মনোভাব জাগ্রত হবে। মন্ত্রী রেল কর্মকর্তাদের বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রসেডিং ও কুশীলবদের অডিও এ জাদুঘরে রাখার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার অন্যতম কুশীলব হচ্ছে জিয়া। এজন্য পরবর্তীতে খন্দকার মোশতাক জিয়াকে সেনাবাহিনীর প্রধান পদে বসিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যায় দোসরদের চিহ্নিত করার জন্য কমিশন গঠন করা দরকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ কমিশন অবশ্যই গঠন করা হবে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ রেলওয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী দু’ুটি ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমান রেল জাদুঘর’ চালু করা হয়েছে। একটি মিটারগেজ ও অন্যটি ব্রডগেজ অঞ্চলে। রেলওয়ে পুর্বাঞ্চলের এ জাদুঘরটি একটি ইঞ্জিন নিয়ে পূর্বাঞ্চলের একেকটি স্টেশনে সাতদিন করে অবস্থান করবে। পরবর্তিতে অন্য স্টেশনে চলে যাবে। ভ্রাম্যমান এ জাদুঘরে বঙ্গবন্ধুর বেড়ে ওঠা ও কর্মময় জীবনের ঘটনাপঞ্জি নিয়ে ধারাবাহিক ১২টি পর্ব রয়েছে। জাদুঘরে প্রবেশ করে দর্শণার্থীগণ পরিচিত হবেন জাতির পিতার শৈশবের দিনগুলোর সাথে। পর্যায়ক্রমে তাঁর ছাত্রজীবন, মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের মাধ্যমে গণমানুষের প্রাণের নেতা হয়ে ওঠা, ভাষা আন্দোলনে তাঁর অবদান, অবর্ণনীয় নির্যাতন ভোগ, মিথ্যা মামলা ও কারাভোগের করুন চিত্র, পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে আপোষহীন সংগ্রাম, ঐতিহাসিক ৬ দফা, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, কাঙ্খিত স্বাধীনতা, সদ্য স্বাধীন দেশ পুনর্গঠনে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ সম্পর্কে জানতে পারবে। প্রতিটি ভিডিও নির্মাণ করা হয়েছে অডিও এবং স্থির চিত্রের মাধ্যমে। এখানে রয়েছে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বই। শিশুদের জন্য রয়েছে শিশুতোষ সাহিত্য কর্ম। এতে সুদৃশ্য ১২টি টেবিলে স্থাপন করা হয়েছে জাতির পিতার পৈত্রিক নিবাসের প্রতিরুপ, তাঁর ব্যবহৃত চশমা, পাইপ মুজিব কোট, বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে লেখা পত্র। এছাড়া রয়েছে মুক্তি সংগ্রামের দুর্লভ চিত্রসমূহ। এখান থেকে ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণসহ গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ ও থিম সং প্রচার করা হবে। কোচের বাইরের অংশ সজ্জিত করা হয়েছে ৫২ এর ভাষা আন্দোলন থেকে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত ধারাবাহিক সংগ্রামের উপর চিত্রিত ম্যুরালের মাধ্যমে। এটি সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত।

সাইফুল / রাজ্জাক/ খালেদ / পোস্টকার্ড ;