সীতাকুণ্ডে অটোরিক্সা চালক হত্যা: ৪ আসামি গ্রেপ্তার

সীতাকুণ্ডে অটোরিক্সা চালক হত্যা: ৪ আসামি গ্রেপ্তার
সীতাকুণ্ডে অটোরিক্সা চালক হত্যা: ৪ আসামিকে গ্রেপ্তার

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি ।।

সীতাকুণ্ডে সিএনজি অটোরিক্সা চালক মো. একরাম হোসেন (২০) হত্যা মামলায় ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুারো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) জেলা ইউনিট।

গ্রেপ্তারককৃতরা হলো- সীতাকুণ্ড উপজেলার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মো. তাজুল ইসলামের ছেলে মো. হাগেদ হোসেন (২০), পৌরসদরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদ জাফরের ছেলে নূর আহম্মদ (৪০), বাড়ককুণ্ড ইউনিয়নের মৃত আজগর আলীর ছেলে মো. মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে সাকিব (২০) ও একই এলকার উত্তর মাহমুদাবাদের মো. রুহুল আমিনের ছেলে মো. ইসমাইল হোসেন ওরফে রানা (২৪)।

বুধবার (২৫ জানুয়ারি) বিকলে সাড়ে ৫টা থেকে রাত পৌনে ১২টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে বাড়ককুণ্ড ইউনিয়ন ও সীতাকুণ্ড পৌরসভা থেকে ৪ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এদিকে, আজ শনিবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ইপসা অফিসের পাশে একটি পুকুর থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোরাটি উদ্ধার করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পিবিআিই চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান। তিনি জানান, গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর নিহত একরাম হোসেন কামরুল নামে একব্যক্তির কাছ থেকে দৈনিক ৫’শ টাকা চুক্তিতে একটি অটোরিক্সা ভাড়া নেয়। এদিন রাত সাড়ে ৮টায় সীতাকুণ্ড পৌরসদরের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ইপসা অফিসের সামনে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই নুরুল হুদা বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এ ঘটনায় পিবিআইয়ের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহাদাত হোসেনকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর গত ২৫ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে রাত পৌনে ১২টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে বাড়ককুণ্ড ইউনিয়ন ও সীতাকুণ্ড পৌরসভা থেকে ৪ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন তাদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। আদালত গ্রেপ্তার সাকিব ও রানার ৩ দিন এবং নুর আহাম্মদ ও জাহেদ হোসেনের ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

তিনি আরও বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানায়- গ্রেপ্তার নূর আহমদ সীতাকুণ্ড থানাধীন দক্ষিণ বাইপাস সিএনজি অটোরিক্সা মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক। তার লাইনে গাড়ি চালাতে হলে ৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে ভিকটিম একরামকে চাপ প্রযোগ করে নূর আহমদ। ভিকটিম একরাম চাঁদা দিতে না চাইলে নূর আহমদ ক্ষিপ্ত হয়ে তার সহযোগীদের নিয়ে গোপন বৈঠকে মিলিত হয়। বৈঠকে একরামকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। পরিকল্পনা মোতাবেক ঘটনার দিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে তারা একরামকে অনুসরণ করতে থাকে। ভিকটিম তার চালিত অটোরিক্সা নিয়ে ঘটনাস্থলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ইপসা অফিসের সামনে পৌঁছলে নূর আহমদ তার গাড়ি দিয়ে একরামকে গতিরোধ করে। এ সময় নূর আহমদের নেতৃত্বে একরামকে মারধরসহ ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়। এরপর আসামিরা পালিয়ে যায়। কিন্তু দ্রুত ঘটনাস্থলে লোকজন চলে আসায় আসামি জাহিদ হোসেন পালাতে ব্যর্থ হওয়ায় আহত একরামকে উদ্ধারের কৌশলে নিজেকে রক্ষা করতে তাকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, আজ আমরা ঘটনাস্থলের পাশে একটি পুকুর থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোরাটি উদ্ধার করি।

খালেদ / পোস্টকার্ড ।