১৪ জানুয়ারি সর্ববৃহৎ প্রমোদতরী ‘বে ওয়ান ক্রুজ’র যাত্রা শুরু, মুজিববর্ষে পর্যটনে নতুন বিপ্লব

১৪ জানুয়ারি সর্ববৃহৎ প্রমোদতরী ‘বে ওয়ান ক্রুজ’র যাত্রা শুরু, মুজিববর্ষে পর্যটনে নতুন বিপ্লব
১৪ জানুয়ারি সর্ববৃহৎ প্রমোদতরী ‘বে ওয়ান ক্রুজ’র যাত্রা শুরু, মুজিববর্ষে পর্যটনে নতুন বিপ্লব

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

মুজিববর্ষে বাংলাদেশের পর্যটন খাতে বিপ্লব ঘটাতে চলেছে ‘বে ওয়ান ক্রুজ’। প্রমোদতরী হিসেবে এতো বড় যাত্রীবাহী জাহাজ চলাচল বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম। এই জাহাজটি সরকারের অনুমোতি পেলে দেশের বাইরেও পর্যটক নিয়ে যেতে পারবে। আর হজের মৌসুমে ২০ থেকে ৫০ হাজার হাজিকেও সমুদ্রপথে সৌদি আরব নিয়ে যেতে পারবে।

সোমবার (১১ জানুয়ারি) পতেঙ্গার ওয়াটার বাস টর্মিনালে নোঙ্গর করা জাহাজ বে ওয়ান ক্রুজে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন জাহাজটি পরিচালনাকরী প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার এম এ রশিদ। এসব জাহাজের ক্যাপ্টেনসহ কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশে প্রথমবারের মত চালু হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম টু সেন্টমার্টিন রুটের যাত্রীবাহী জাহাজ। আনুষ্ঠানিকভাবে আগামী ১৪ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) থেকে এই রুটে সপ্তাহে তিনদিন যাতায়াত করবে বিলাসবহুল প্রমোদতরী ‘বে ওয়ান ক্রুজ’। এটি পর্যটন সেবায় নতুন মাইলফলক সৃষ্টি করবে বলে জানান এম এ রশিদ।

তিনি আরো জানান, দুই হাজার যাত্রী বহনে সক্ষম এ জাহাজটিই বর্তমানে বাংলাদেশে সর্ববৃহৎ ক্রুজ শিপ। পতেঙ্গায় অবস্থিত শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে (১৫ নং ঘাট সংলগ্ন) ওয়াটার বাস ঘাট থেকে থেকে যাত্রীরা উঠে সেন্টমার্টিনে গিয়ে সরাসরি নামবেন। ১২১ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৫ দশমিক ৩ মিটার ড্রাফটের জাহাজটি নির্মাণ করে জাপানের কোবেই শহরের বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান মিৎসুবিশি হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। জাহাজটি ঘণ্টায় ২৪ নটিক্যাল মাইল গতিতে চলতে পারে। জাহাজটিতে যাত্রীসেবায় নিয়োজিত থাকবেন ১৫০ জন ক্রু। এছাড়া জাহাজ পরিচালনায় থাকবে আরো ১৭ জন ক্রু। উত্তালসমুদ্র মোকাবিলায় ফিন স্ট্যাবিলাইজার সুবিধাও রাখা হয়েছে জাহাজটিতে। এতে ৪ নম্বর সতর্ক সংকেতেও জাহাজটি চলাচল করতে পারবে।

এছাড়া 'বে ওয়ান ক্রুজ' জাহাজটি ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত হওয়ায় আন্তর্জাতিক রুটেও চলাচলের সুযোগ রয়েছে।

যাত্রার সময়সূচি অনুযায়ী প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার রাত ১১ টায় চট্টগ্রাম থেকে সেন্টমার্টিন যাত্রা করবে বে ওয়ান ক্রুজ। জাহাজটি সেন্টমার্টিন পৌঁছাবে পরদিন সকাল ৮টায়। এছাড়া ফিরতি পথে প্রতি সপ্তাহের শুক্র, শনি ও রবিবার দুপুর ১ টায় সেন্টমার্টিন থেকে যাত্রা করে জাহাজটি চট্টগ্রাম পৌঁছাবে একই দিন সন্ধ্যা ৭ টায়। চট্টগ্রাম থেকে রাতের যাত্রায় সেন্টমার্টিন পৌঁছাতে সময় লাগবে প্রায় ৯ ঘণ্টা। তবে ফিরতি পথে সেন্টমার্টিন থেকে দিনের যাত্রা হওয়া সময় কিছুটা কম লাগবে। ফিরতি পথে সময় লাগবে প্রায় ৭ ঘণ্টা।

বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সমুদ্র যাত্রায় বে ওয়ান ক্রুজে যাওয়া আসার টিকিট মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে সর্বনিম্ন ৩ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা। এরমধ্যে বিজনেস ক্লাস চেয়ারের জনপ্রতি টিকিট মূল্য নির্ধারণ হয়েছে ৩ হাজার টাকা। লাক্সারি বিজনেস ক্লাস চেয়ারের জনপ্রতি টিকিট মূল্য নির্ধারণ হয়েছে ৪ হাজার টাকা। এই দুই ক্লাসের টিকেটে পাওয়া যাবে সকালের কমপ্লিমেন্টারি ব্রেকফাস্ট।

এছাড়া অন্যান্য টিকিটের মধ্যে বাংকার স্লিপার বেড জনপ্রতি ১০ হাজার টাকা, ভিআইপি কেবিনে ২ জনের জন্য ৫০ হাজার টাকা, ফ্যামিলি বাঙ্কার কেবিনে ৪ জনের জন্য ৫০ হাজার টাকা, প্রেসিডেন্টশিয়াল কেবিনে ২ জনের জন্য ৩০ হাজার টাকা এবং রয়েল কেবিনে ২ জনের জন্য ৪৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব ক্লাসের টিকেটে যাত্রীরা পাবেন সকালের ব্রেকফাস্টসহ রাতের খাবার। এছাড়া পরিবারের সাথে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুর জন্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ভ্রমণের সুযোগ রাখা হয়েছে।

টিকেট বুকিং করতে বর্তমানে মোবাইলে যোগাযোগের ডেডিকেটেড নম্বর রাখা হলেও পরবর্তীতে যাত্রীরা চাইলে অনলাইনেও বুকিং করতে পারবেন। অনলাইনে টিকেট বুকিংয়ের প্রস্তুতি চলমান রয়েছে। মোবাইলে টিকেট বুকিং করতে যোগাযোগ করতে হবে ০১৯৬৮-৮১৩৫৯৭, ০১৯৬৮-৮১৩৫৯৮ নম্বরে।