৪৫৮৯টি গাছ উপড়ে পড়েছে বুলবুলের আঘাতে সুন্দরবনে

৪৫৮৯টি গাছ উপড়ে পড়েছে বুলবুলের আঘাতে সুন্দরবনে

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।।

সম্প্রতি বাংলাদেশে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চল খুলনা জেলায় অবস্থিত সুন্দরবনে প্রায় সাড়ে চার হাজার গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বাংলাদেশের বন অধিদফতরের এক সমীক্ষায় এ তথ্য পাওয়া গেছে ।

ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতিবেগে এই ঘূর্ণিঝড় প্রথমে ভারতে, পরে বাংলাদেশের সুন্দরবন এলাকায় আঘাত করে। সুন্দরবনে আঘাত করার কারণে ঝড়টির গতি কমে যায় এবং লোকালয়ের ক্ষতির পরিমাণ কম হয়। কিন্তু তাতে ক্ষতির কবলে পড়ে হাজার হাজার গাছ। ঝড়ের পরবর্তী সময় সুন্দরবনের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করার কাজ শুরু করে বন বিভাগ। সেখান থেকে জানা যায়, বুলবুলের প্রভাবে ৪৫৮৯টি গাছ উপড়ে পড়েছে। সুন্দরবনের দুইটি বিভাগের মধ্যে সবচেয় বেশি ক্ষতি হয়েছে সুন্দরবনের পশ্চিম বিভাগে। তবে কোন বন্য প্রাণী মারা যাওয়ার তথ্য সেখান থেকে পাওয়া যায়নি।

পশ্চিম অংশে ক্ষতিগ্রস্ত গাছের মধ্যে নদী বা খালের পাড়ে হয়ে থাকে, যেমন- গেওয়া, গড়ান, কেওড়া ইত্যাদি গাছই বেশি। পূর্ব অংশের ক্ষতিগ্রস্ত গাছের মধ্যে আছে রেইনট্রি, বাবলা, মেহগনি, অর্জুন ইত্যাদি। পশ্চিম অংশের মধ্যে রয়েছে সাতক্ষীরা ও খুলনার বন আর পূর্ব অংশের মধ্যে রয়েছে বাগেরহাট ও বরিশালের বন। বন অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলছেন, আড়পাঙ্গাশিয়া ও শিবসা নদীর দুই পাড়ের গাছ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে বড় জলোচ্ছ্বাস না হওয়ায় বন্যপ্রাণীর ক্ষতি হয়নি বলে তারা মনে করছেন।

বন অধিদফতরের বরাত থেকে জানা যায়, এসব স্থানে ছোট ছোট যেসব গাছ আছে, তা কয়েক বছরের মধ্যে বড় হয়ে যাবে। সুন্দরবনের যে ক্ষতি, তা প্রাকৃতিকভাবেই ঠিক হয়ে যাবে। বাইরে থেকে এখানে কারো কিছু করার নেই। তবে ঝড়ে উপড়ে পড়া গাছ বনের ভেতরেই রেখে দেওয়ার কথা ভাবছে বন বিভাগ।

এ পর্যন্ত ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত গাছের আর্থিক মূল্য ধরা হয়েছে ৫০ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। এছাড়া বিভিন্ন ফাঁড়ি ও স্টেশনের জেটি, ওয়াচ টাওয়ারসহ অবকাঠামোর অনেক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বন কর্মকর্তারা। সুন্দরবনের বিভিন্ন ফাঁড়ি ও স্টেশন তাদের আওতাধীন বনের জরিপ করেছে। সেসব তথ্য নিয়ে ক্ষয়ক্ষতির এই প্রতিবেদন প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।

পর্যটকদের সীমিত যাতায়াত
বুলবুলের আঘাতের কারণে অবকাঠামোগত ক্ষতি হওয়ায় আপাতত পর্যটকরা ভূমিতে নামতে পারছে না। তবে অনেকেই জাহাজে বা লঞ্চে করে বনে ঘুরছেন বলে বন অধিদফতর মারফত জানা গেছে। অবকাঠামো ঠিক করতে সময় লাগায় পর্যটন ব্যবস্থা আপাতত সীমিত আকারে থাকবে বলেও জানান বন অধিদফতর কর্তৃপক্ষ। সীমিতভাবে এখন পর্যটকরা জাহাজে করে বনে যাতায়াত করতে পারবেন বলে জানালেও কটকা বা কচিখালির মতো পর্যটন কেন্দ্রগুলোয় কোনো পর্যটক এখন যেতে পারছেন না বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা