এনবিআরে এমডব্লিউআরের শিক্ষাখাতে ৭ দফা দাবিতে প্রস্তাবনা

এনবিআরে এমডব্লিউআরের শিক্ষাখাতে ৭ দফা দাবিতে প্রস্তাবনা
এনবিআরে এমডব্লিউআরের শিক্ষাখাতে ৭ দফা দাবিতে প্রস্তাবনা

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

জতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান লিখিত ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বই রচনা করে অনার্স ও ডিগ্রি, ও সমমানের প্রথম ও দ্বিতীয়বর্ষের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্তিসহ ৭ দফা দাবিতে ২০২০-২১ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে শিক্ষাখাতে ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে বাজেট প্রস্তাবনা পাঠিয়েছে মুভমেন্ট ফর ওয়ার্ল্ড এডুকেশন রাইটস (এমডব্লিউইআর)।

রোববার এমডব্লিউইআরের আহ্বায়ক ফারুক আহমাদ আরিফ ও যুগ্ম-আহ্বায়ক এনায়েতুল্লাহ কৌশিক লিখিত বাজেট প্রস্তাবনাটি পাঠান। ২২ মার্চের মধ্যে এনবিআর বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের কাছে বাজেট প্রস্তাবনা আহ্বান করলে এটি পাঠানো হয়।

মুভমেন্ট ফর ওয়ার্ল্ড এডুকেশন রাইটসের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে ২০২০-২১ অর্থবছরে সরকারি, বেসরকারি সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে বাজেটের আওতায় নিয়ে আসতে হবে (তবে সেটি যোগ্যতানুযায়ী)। আর সে জন্য ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ প্রয়োজন।

এতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষায় ৭০ হাজার কোটি টাকা। এতে উন্নয়ন খাতে ৪০ হাজার কোটি টাকা ও অনুন্নয়নখাতে ৩০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিতে হবে।

আর মাধ্যমিকে ১০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে উন্নয়ন ৬ ও অনুন্নয়নখাতে ৪ হাজার কোটি টাকা, উচ্চ মাধ্যমিকে ১৫ হাজার কোটি টাকার মধ্যে উন্নয়ন খাতে ৭ ও অনুন্নয়নখাতে ৮ হাজার কোটি টাকা, মাদরাসায় ২০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে উন্নয়ন খাতে ৮ ও অনুন্নয়নখাতে ১২ হাজার কোটি টাকা।

উচ্চ মাধ্যমিকে ১৫ হাজার কোটি টাকার মধ্যে উন্নয়ন খাতে ৭ হাজার কোটি ও অনুন্নয়নখাতে ৮ হাজার কোটি টাকা। উচ্চশিক্ষায় ৭৫ হাজার কোটি টাকার মধ্যে উন্নয়ন খাতে ২৫ ও অনুন্নয়নখাতে ৩০ হাজার কোটি টাকা, শুধু গবেষণাখাতে ৮ হাজার কোটি টাকা ও শিক্ষাব্যাংক প্রতিষ্ঠায় ৫ হাজার কোটি টাকা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ৭ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিতে হবে। অর্থাৎ জাতীয় বাজেটের ২৫ শতাংশ এবং জাতীয় আয়ের ৭ শতাংশ শিক্ষাখাতে বিনিয়োগ করতে হবে।

বাজেটে আয়ের খাত সম্পর্কে বলা হয়েছে, আয়ের খাতের মধ্যে সরকারি উৎস হতে ৮০ হাজার কোটি টাকা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো দিবে ৪০ হাজার কোটি টাকা ও বৈদেশিক অনুদান ৪০ হাজার কোটি টাকা ও জনগণের বিনিয়োগ ৩০ হাজার কোটি টাকা।

উল্লেখ্য সরকারি, আধা-সরকারি, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো টিউশন ফি বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যে অর্থ আদায় করে সেখানে ১ একাডেমিক ব্যয়, ২. অবকাঠামো উন্নয়ন ব্যয় বাদ দিয়ে যে অর্থ রয়ে যাবে তা সরকারকে দিয়ে দিতে বাধ্য থাকবে। সরকার সেই অর্থ দিয়ে সরকারি-বেসরকারি ১. প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যে জমি প্রদান, ২. শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচার্রীদের বেতন-ভাতা, বাসস্থান, পেনশন, উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, ৩. সিলেবাস ও পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন, বিতরণ করবে ৪. শিক্ষার্থীদের শিক্ষাঋণ, ৫. শিক্ষার্থীদের শতভাগ আবাসন, ৬. যাতায়াত, ৭. কর্মসংস্থান, ৮. চিকিৎসা ও পুষ্টিকর খাবার, ৯. গবেষণা, ১০. বিদেশি বৃত্তিসহ শিক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম গ্রহণ করবে।

প্রস্তাবগুলোর বিশেষ দিকের মধ্যে রয়েছে-
১. জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান লিখিত ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’টি অনার্স ও ডিগ্রির প্রথমবর্ষে ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক একটি তথ্য সম্বলিত সংক্ষিপ্ত বই রচনা করে অনার্স ও ডিগ্রি ও সমমানের দ্বিতীয়বর্ষের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

২. শিক্ষাব্যবস্থার জাতীয়করণ: শিক্ষাব্যবস্থার জাতীয়করণ করতে হবে (অর্থাৎ শিক্ষাব্যবস্থা পুরোপুরি রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে হবে)।

৩. শিক্ষাঋণ: শিক্ষার্থীদের শিক্ষাঋণ দিতে হবে, যা কর্মজীবনে গিয়ে পর্যায়ক্রমে পরিশোধ করবে।

৪. এডুকেশন ব্যাংক: শিল্প-কারখানা, প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তির বছরের লাভের হাজারে ৫ টাকা অর্থ সরকারকে দিবে, সরকার সেসব অর্থ দিয়ে এডুকেশন ব্যাংক নামে শুধু শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসংক্রান্ত ব্যাংক হিসেবে চালু করবে।

৫. ২০৪১ সালে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাত সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে বিনামূল্যে প্রদান করতে হবে।      

৬. কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাকরণ: শিক্ষা, যোগ্যতা ও কর্মস্পৃহা (শিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত ও নিরক্ষর) অনুযায়ী প্রতিটি ব্যক্তির কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।

৭. এসব কার্যক্রম মনিটরিং করার জন্য একটি কমিটি করতে হবে যেখানে সদস্য থাকবে ক. শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি, প্রতিষ্ঠিানগুলোর প্রতিনিধি, বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি এবং সরকারে প্রতিনিধি থাকবে।