দাড়ি রাখলে, নামাজ পড়লেই জামায়াত-বিএনপির সমর্থক নয়: প্রধানমন্ত্রী

দাড়ি রাখলে, নামাজ পড়লেই জামায়াত-বিএনপির সমর্থক নয়: প্রধানমন্ত্রী
দাড়ি রাখলে, নামাজ পড়লেই জামায়াত-বিএনপির সমর্থক নয়: প্রধানমন্ত্রী

প্রশাসনে অনেকে দাঁড়ি রাখেন, নামাজ পড়েন এমন কর্মকর্তাদের বিএনপি-জামায়াত অনুসারি কর্মকর্তা হিসেবে চিহ্নিত করার ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ।

তিনি বলেন, এক শ্রেণির কর্মকর্তা নিজেদের স্বার্থে এসব প্রচারণা চালান। যা কোনভাবে কাম্য নয়। নামাজ পড়া আর দাঁড়ি রাখা লোক আমি পছন্দ করি। সোমবার (২৮ অক্টোবর) মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলমকে বিদায় জানাতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নিয়োগের সময়ে একদল কর্মকর্তা এই নিয়োগের বিরোধীতা করেছিলেন। তারা তাকে (শফিউল আলম) জামায়াত অনুসারি কর্মকর্তা হিসেবে চিহ্নিত করে আমার কাছে অভিযোগ করেছিলেন। শফিউল আলমকে জামায়াত প্রমাণ করতে বলা হল, তখন ওই কর্মকর্তা বললেন, তিনি নিয়মিত নামাজ পড়েন, তার দাঁড়ি রয়েছে।

পরে প্রধানমন্ত্রী তার ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, শফিউল আলমের পরিবার মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী একটি পরিবার। স্বাধীনতার সময়ে তার আপন বড় ভাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি শহীদ হন। একজন শহীদের ভাইকে আমার সামনে জামায়াত হিসেবে উপস্থাপন করা হল।

শেখ হাসিনা বলেন, শফিউল আলম একজন মেধাবী, সৎ ও দক্ষ কর্মকর্তা। তার দায়িত্ব পালনের সময়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকসহ গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ের সার-সংক্ষেপ দিনের টা দিনেই পেয়েছি। একদিনের কাজ তিনি আরেক দিনের জন্য কখনও ফেলে রাখেননি। তাছাড়া দায়িত্ব পালনকালে তিনি সর্বোচ্চ সততা ও নিষ্ঠার উদাহারণ রেখে গেছেন।

ওই বৈঠকে লেজিসলেটিভ ও পর্লামেন্টারি এ্যাফেয়ার্স ডিভিশনের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহীদুল হককেও বিদায় জানানো হয়। এই দুই সচিবের বিদায় উপলক্ষে মন্ত্রিসভার বৈঠকে একটি আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার তেঁজগাও কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সিনিয়র মন্ত্রী একটি গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন জানা গেছে।

তিনি বলেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর (এপিএ) তারই ব্রেন। এ রকম ভালো ভালো কার্যক্রমের উদ্যোগ তিনি নিয়েছেন। কোন কর্মকর্তার নিয়োগ বা পদোন্নতি ঠেকাতে প্রথমেই বলে ওই কর্মকর্তা বিএনপি। আরও পরে বলে সে তো জামায়াত। একজন কর্মকর্তার রাজনৈতিক বিশ্বাস যেকোন দলের প্রতি থাকতেই পারে, তা দোষের নয়। সবাই একই আদর্শে বিশ্বাসী হবেন, এটা তো কাম্য হতে পারে না।

প্রশাসনের সকল কর্মকর্তাকে সতর্ক করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অমুক কর্মকর্তা বিএনপি, অমুকে জামায়াত বলে ফের কাউকে আখ্যায়িত করবেন না।