প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা

স্বাস্থ্য ডেস্ক।।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮০ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়াও প্রায় ৩ হাজার মানুষ এতে আক্রান্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে দেশটির স্বাস্থ্য কমিশন। এদিকে দেশে  করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে আগাম প্রস্তুতি হিসেবে সারাদেশের সরকারি হাসপাতালে অনতিবিলম্বে আইসোলেশন ইউনিট খোলা নির্দেশনা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। আপাতত দেশের আটটি বিভাগের সকল জেলাসদর ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ ইউনিট খোলা হবে।

সোমবার রাজধানীর মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে স্বাস্থ্য মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বিভাগীয় পরিচালক ও সিভিল সার্জনদের সঙ্গে করোনাভাইরাস নিয়ে ভিডিও কনফারেন্স চলাকালে এ নির্দেশনা দেন। একইসঙ্গে দেশের সকল স্থল ও নৌবন্দরে বিভিন্ন দেশ থেকে আগত যাত্রীদের স্বাস্থ্যপরীক্ষাসহ সতর্ক দৃষ্টি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ জানান, আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। বিভিন্ন স্থলবন্দরে আপাতত বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের হেলথ কার্ডের মাধ্যমে সংগ্রহ তথ্য সংগ্রহ ও থার্মোমিটার দিয়ে জ্বর মেপে মনিটরিং করা হবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) পরিচালক ও রোগতত্ত্ববিদ অধ্যাপক মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা জানান, আজ (২৭ জানুয়ারি) সকাল পর্যন্ত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্ক্যানার মেশিন ও হ্যান্ড স্ক্যানিং মেশিনের মাধ্যমে দুই হাজার ৪৭০ জন যাত্রীর শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। তবে এখনও পর্যন্ত দেশে কোনো করোনাভাইরাস রোগী পাওয়া যায়নি।
তিনি জানান, হেলথ কার্ডের মাধ্যমে আগত যাত্রীদের তথ্য-উপাত্ত রাখা হচ্ছে। কোনো যাত্রী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেও তাৎক্ষণিকভাবে তার এ রোগের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। দুই থেকে ১৪ দিনের মধ্যে রোগী দেখা দিতে পারে। এ কারণে যাত্রীদের বলা হচ্ছে এ সময়ের মধ্যে যদি কেউ অসুস্থতা অনুভব করে তাহলে যেন আইডিসি আরে যোগাযোগ করে।


ভারতে শতাধিক ব্যক্তি নজরদারিতে
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে কেরালা ও মহারাষ্ট্রে শতাধিক ভারতীয়কে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন বলেন, সাত যাত্রীর নমুনা পরীক্ষার জন্য পুনের একটি গবেষণাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে আরও চার যাত্রীর নমুনা পরীক্ষা করে ভাইরাসটির উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। কেরালার জ্যেষ্ঠ এক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, রাজ্যে নতুন ৯৯ যাত্রী এসেছেন। সব মিলে ১৭৯ যাত্রী নজরদারিতে আছে। তিনি বলেন, তাদের রক্ত ও শ্বাস-প্রশ্বাসযন্ত্রের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের শেষদিকে চীনের মধ্যাঞ্চলীয় শহর উহানের একটি সিফুড মার্কেট থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়েছে বলে ধারণা করা হয়। উহান থেকে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব চীনের রাজধানী বেইজিং, বৃহত্তম শহর সাংহাইয়ের পাশাপাশি থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, মালয়েশিয়া, নেপাল, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও কানাডা পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। এই রোগ বিস্তার কেন্দ্র করে চীনা ভ্রমণে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। উহান শহর থেকে নিজ দেশে ফেরা ব্যক্তিদের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। উহান থেকে কানাডায় ফেরা এক ব্যক্তির শরীরে ভাইরাসটি পাওয়া গেছে। পঞ্চাশোর্ধ্ব ওই ব্যক্তি বুধবার টরেন্টোতে ফেরার একদিন পর শ্বাসযন্ত্রের অসুখ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।