বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে যে দুর্নীতির বিষবৃক্ষ রোপণ করে গেছে তার কুফল ভোগ করছে জনগণ :প্রধানমন্ত্রী

বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে যে দুর্নীতির বিষবৃক্ষ রোপণ করে গেছে তার কুফল ভোগ করছে জনগণ :প্রধানমন্ত্রী
বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে যে দুর্নীতির বিষবৃক্ষ রোপণ করে গেছে তার কুফল ভোগ করছে জনগণ :প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি বিভিন্ন সময় ক্ষমতায় থাকতে সারাদেশে দুর্নীতির যে বিষবৃক্ষ রোপণ করে গেছে তার কুফল আজ সারাদেশের মানুষ ভোগ করছে।

শুক্রবার (২১ আগস্ট) সকালে গ্রেনেড হামলার ঘটনার ১৬তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে ৭১, ৭৫ ও ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট নিহত শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

এ সময় কলঙ্কময় সেই ২১ আগস্টের কথা স্মরণ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, সভ্য দেশ হলে গ্রেনেড হামলার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ এবং অন্যরা ছুটে আসত আহতদের উদ্ধার করতে। তাদের হাসপাতালে দ্রুত নিয়ে যেত এবং চিকিৎসা করাত। কিন্তু এখানে কী হলো আমাদের উদ্ধারকারী নেতাকর্মীদের উপর উল্টো লাঠি চার্জ এবং টিয়ার শেল ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় সেদিন বন্ধ ছিল। আহত লোকজন প্রবেশ ও চিকিৎসা নিতে পারেনি। ঢাকা মেডিকেল কলেজে বিএনপির চিকিৎসকরা একজনও ছিল না। যাদের ডিউটি ছিল তারাও সেখানে উপস্থিত ছিল না। আমাদের যারা ডাক্তার ছিলেন তারা সেখানে ছুটে গিয়েছিলেন চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে। জাতি জানতে চায় গ্রেনেড হামলায় আহতদের উদ্ধার না করে উল্টো পুলিশ কেন লাঠিচার্জ এবং টিয়ার শেল মারল সে প্রশ্নের জবাব। হামলায় আহত আপন লোককে যখন তুলতে গেছে পুলিশ তখন তাকে লাথি মেরে ফেলে দিয়েছে। কেন তারা সাহায্য করল না। হামলাকারীরা যাতে নির্বিঘ্নে ওই জায়গা ত্যাগ করতে পারে সেই সুযোগটা সৃষ্টি করবার জন্যই তারা এটা করেছিল। সরকারের মদদ না থাকলে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মতো ঘটনা হতে পারে না। এই সন্ত্রাসীদের একত্রিত করা, তাদের আনা এবং পরবর্তীতে তাদের বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছে। তারা ভেবেছিল যে আমি মারা গেছি। কিন্তু যখন শুনলো যে না মারা যাইনি তখন ওই রাতেই চারজনকে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, আসলে খুন করা যাদের অভ্যাস তারা স্বাধীনতা বিশ্বাস করে না, গণতন্ত্র বিশ্বাস করে না। তারা বিশ্বাস করে ক্ষমতা। ক্ষমতা হচ্ছে তাদের কাছে দুর্নীতি করে টাকা বানানো। বিএনপি বিভিন্ন সময় ক্ষমতায় থাকতে সারাদেশে দুর্নীতির যে বিষবৃক্ষ রোপণ করে গেছে তার কুফল আজ সারাদেশের মানুষ ভোগ করছে। আমরা সরকারে আসার পর একটা একটা করে সেগুলো উদ্ঘাটন করছি। এখন অনেকেই বড় বড় কথা বলে কিন্তু তারা ভুলে গেছে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তারা কী করেছে। এ সময় বাংলাদেশ পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এ কথা তারা ভুলে গেছে। তাদের এত টাকা যে বিদেশে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমান যেভাবে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে কই আমরা তো তাও পারি না? কিন্তু তারা কী করছে, কোথায় পাচ্ছে তারা এত টাকা সেটাই প্রশ্ন। তারা বলে যে জুয়ার আড্ডা থেকে নাকি তারেক টাকা সংগ্রহ করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা সঙ্কটকালে আমাদের দলের নেতাকর্মীরা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগসহ প্রতিটি সহযোগী সংগঠন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। এমনকি ধান কাটার সময় তারা ধান কেটে কৃষকের ঘরে তুলে দিয়ে সহযোগিতা করেছে। এখনো ত্রাণ দিয়ে যাচ্ছে। মানুষকে এই ত্রাণ দিতে গিয়ে দলের অনেক নেতাকর্মী করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। করোনার সময় পুলিশ, বিজিবি ও প্রশাসনের সবাই মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, আর দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। আর কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা এভাবে মানুষের পাশে দাঁড়ায়নি? করোনার কারণে আজ আপনাদের সঙ্গে একসঙ্গে থাকতে পারলাম না এজন্য বড় দুঃখ।

তিনি বলেন, আজ যদি ডিজিটাল বাংলাদেশ না হতো তাহলে এভাবে আলোচনা করা হয়তো সম্ভব হতো না। সেজন্য আমি জয়কে ফোন করেছিলাম এবং তাকে ধন্যবাদ দিয়েছি যে তুমি যদি ডিজিটাল করে না দিতে তাহলে হয়তো এইভাবে ভার্চুয়ালি আলোচনা করা সম্ভব হতো না। আজ ভিডিও কনফারেন্সে যেসব কার্যক্রম চালাচ্ছে এগুলো হয়তো পরিচালনা করা সম্ভব হতো না। জাতির পিতা এই দেশ স্বাধীন করেছে। তার স্বপ্ন ছিল দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। তার স্বপ্ন পূরণে আমরা দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছিলাম কিন্তু হঠাৎ করোনায় সবকিছু স্থবির হয়ে গেছে। সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও আমরা অর্থনীতির চাকা গতিশীল রাখছি। আমরা ক্ষুধা এবং দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলবো এটাই হলো প্রতিজ্ঞা। দেশটা যেন আরও সামনে এগিয়ে নিতে পারি সেজন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি।