বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন , প্রথম টোল দিয়ে গাড়িতে করে টানেল পার হলেন প্রধানমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন , প্রথম টোল দিয়ে গাড়িতে করে টানেল পার হলেন প্রধানমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন , প্রথম টোল দিয়ে গাড়িতে করে টানেল পার হলেন প্রধানমন্ত্রী

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।।

কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বহুল প্রত্যাশিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের উদ্বোধন করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (২৮ অক্টোবর) সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে পতেঙ্গা প্রান্তে এ টানেল উদ্বোধন করেন তিনি। উদ্বোধনের পর সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী প্রথমে পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীর পশ্চিম তীরে একটি এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল পার হয়ে আনোয়ারায় নদীর দক্ষিণ তীরে আরেকটি ফলক উন্মোচন করবেন। এরপর দুপুরে জনসভার মঞ্চে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। জনসভা শেষে তিনি ঢাকায় ফিরে আসবেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলটি চট্টগ্রাম বন্দরকে সরাসরি আনোয়ারা উপজেলার সাথে সংযুক্ত করা ছাড়াও সরাসরি কক্সবাজারকে চট্টগ্রামের সাথে সংযুক্ত করবে।

৩৫ ফুট প্রস্থ এবং ১৬ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট দুটি টিউব ১১ মিটার ব্যবধানে তৈরি করা হয়েছে। ফলে ভারী যানবাহন সহজেই টানেলের মধ্য দিয়ে চলাচল করতে পারবে। এই টানেলে যানবাহন ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার বেগে চলতে পারবে।

টানেলের দৈর্ঘ্য ৩.৪০ কিলোমিটার। যার সঙ্গে ৫.৩৫ কিলোমিটারের এপ্রোচ রোডের পাশাপাশি ৭৪০ মিটারের একটি সেতু রয়েছে। যা মূল শহর, বন্দর এবং নদীর পশ্চিম দিককে এর পূর্ব দিকের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে।

২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যৌথভাবে টানেলটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রথম টানেল টিউবের বোরিং কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

টানেল নির্মাণ হওয়ায় এ অঞ্চলে কয়েক হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ হবে। এতে করে কয়েক লাখ মানুষের কর্মসংস্থানও হবে। পর্যটন খাতে কক্সবাজারের পর আকর্ষণীয় স্থান হচ্ছে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত ও আনোয়ারা পারকি বিচ। আগে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত থেকে সড়কপথে শহরের ভেতর দিয়ে আনোয়ারায় যেতে সময় লাগত ৪ ঘণ্টা। বঙ্গবন্ধু টানেল চালু হলে লাগবে মাত্র ২০ মিনিট। দক্ষিণ এশিয়ায় এটিই একমাত্র নদীর তলদেশে টানেল। সঙ্গত কারণেই এ স্থাপনাকে কেন্দ্র করে আকর্ষণ বাড়বে দর্শনার্থীদের।

টানেলকে ব্যবহার করে রপ্তানিমুখী চিংড়ির উৎপাদন ও সরবরাহ দ্রুত বেড়ে যাবে, যৌক্তিক প্রত্যাশা ব্যবসায়ীদের। অবকাঠামো খাতে উন্নয়নের এ বিপ্লব আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করবে। চট্টগ্রামে এরই মধ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চল, পাওয়ার হাব, গভীর সমুদ্রবন্দর ও চট্টগ্রাম বন্দর সম্প্রসারণসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্প চলমান রয়েছে। টানেল চালু হলে পদ্মা সেতুর পর বাংলাদেশের সক্ষমতার অন্যতম আরেকটি দৃষ্টান্ত স্থাপন হবে।

বঙ্গবন্ধু টানেলকে ঘিরে পাল্টে গেছে আনোয়ারা-কর্ণফুলীসহ পুরো দক্ষিণ চট্টগ্রামের চিত্র। বিশেষ করে সরকারের মেগা প্রকল্পগুলো উন্নয়নের পরিবর্তনের ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে আনোয়ারার অর্থনীতির দৃশ্যপট। ভৌগোলিক কারণে একদিকে সমুদ্রবন্দরের পাশে অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণের ফলে আনোয়ারা হবে আন্তর্জাতিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ এক মাধ্যম।

বঙ্গবন্ধু টানেলে প্রথম টোল দিলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল উদ্বোধন করেছেন। পরে টোল দিয়ে গাড়িতে করে টানেল পার হন তিনি।

শনিবার দুপুর পৌনে ১২টায় চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা প্রান্তে টানেলের ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী।

চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে ৩ মিনিটে টানেলের আনোয়ারা প্রান্তে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে প্রথম যাত্রী হিসেবে সেখানে টোল দেন । এসময়ে টোল কালেক্টর ঝুমুর আক্তার প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে টাকা নিয়ে রশিদ দিলে হাত তুলে তা দেখান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি তার সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করেন। উদ্বোধন ও টোল দেওয়ার আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহরকর্ণফুলীর কেইপিজেড মাঠে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।

খালেদ / পোস্টকার্ড;