ভূমি ও পরিবেশের শর্ত লঙ্ঘন করে সীতাকুন্ডে শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে নির্মিত হচ্ছে অনুমোদনবিহীন বার্জ

ভূমি ও পরিবেশের শর্ত লঙ্ঘন করে সীতাকুন্ডে শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে  নির্মিত হচ্ছে অনুমোদনবিহীন বার্জ
ভূমি ও পরিবেশের শর্ত লঙ্ঘন করে সীতাকুন্ডে শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে নির্মিত হচ্ছে অনুমোদনবিহীন বার্জ

সীতাকুন্ড প্রতিনিধি ।।

চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড বারআউলিয়ায় আর.এ শিপব্রেকিং ইয়ার্ড নামক একটি জাহাজ ভাঙার উঠোনে নির্মাণ করা হচ্ছে অনুমোদনবিহীন বার্জ। যা ভূমি অফিস কর্তৃক প্রদানকৃত সমুদ্র সিকস্তি ভূমি লিজ ও পরিবেশ ছাড়পত্রের শর্তভঙ্গ বলে অভিমত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। তবে ইয়ার্ড মালিক বলছেন, অন্যান্য ইয়ার্ডেও বার্জ তৈরি করা হয়। তাই তিনিও করছেন।

জানা যায়, সীতাকুন্ডের শিপব্রেকিং ইয়ার্ডগুলো স্ক্র্যাপ জাহাজ ভাঙার জন্য বিভিন্ন শর্ত মেনে ভূমি অফিস থেকে সমুদ্র সিকস্তি ভূমি একসনা লিজ নেয়। একইভাবে শিপব্রেকিং কাজে পরিবেশের ক্ষতি করা হবে না মর্মে শর্ত মেনে নেয়া হয় পরিবেশের ছাড়পত্র, ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেড লাইসেন্স প্রভৃতি। কিন্তু এসব শর্তে স্ক্র্যাপ জাহাজ ভাঙার অনুমতি থাকলেও শিপ বা অন্য কোন কিছু তৈরি করার কোন অনুমতি নেই। এসব তৈরি করলে লিজের শর্তভঙ্গ হয় বলে ধরে নেয়া হয়। এদিকে নিয়ম এমন হলেও সাম্প্রতিক সময়ে কোন কোন ইয়ার্ড মালিক ইয়ার্ডে জাহাজ ভাঙার পরিবর্তে উল্টো বার্জ তৈরি করছেন।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার বারআউলিয়া মধ্য সোনাইছড়ি সাগর পাড়ে অবস্থিত মো. আবচারের মালিকানাধীন আর.এ শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে ইতিমধ্যেই দুটি বার্জ তৈরির কাজ শেষ হয়ে গেছে। জানা যায়, এরআগেও আরো তিনটি বার্জ তৈরি করা হয়েছে ওই ইয়ার্ডে। এসব বার্জের মাধ্যমে সাগরে পণ্য পরিবহন, ফেরির মতো যানবাহন পরিবহন, বালু উত্তোলনের জন্য মেশিন স্থাপনসহ বিভিন্ন কাজ করা হয়। শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে বার্জ নির্মাণ করার অনুমতি আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ওই ইয়ার্ডের মালিক মো. আবচার অনুমতির প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়ে বলেন, বার্জ তৈরি হচ্ছে ইয়ার্ডের সীমানার বাইরে। এছাড়া অন্য অনেক মালিক বার্জ তৈরি করছে, তাই তিনিও করেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সীতাকু- উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন রায় বলেন, ‘আমরা জাহাজ ভাঙার জন্য তাদের জমি ইজারা দিয়েছি। ইয়ার্ডে কোন কিছু নির্মাণের জন্য দেয়া হয়নি। এখন তারা স্ক্র্যাপ জাহাজের লোহা দিয়ে বার্জ নির্মাণ করেন তা শর্তভঙ্গের পর্যায়ে পড়ে।’ আর এটি তদন্তে প্রমাণিত হলে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিদর্শক মো. হারুন অর রশিদ পাঠান বলেন, জাহাজ ভাঙার অনুমতি নিয়ে তারা বার্জ নির্মাণ করতে পারেন না। ইতিমধ্যে অনুমোদন ছাড়া জাহাজ বা বার্জ নির্মাণের অভিযোগে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে। আর.এ শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে বার্জ তৈরির বিষয়টিও কয়েকদিনের মধ্যে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।