যে মুভি দেখলাম।। ' আই ও’ - নতুন পৃথিবী অপেক্ষমান

যে মুভি দেখলাম।। ' আই ও’ - নতুন পৃথিবী অপেক্ষমান

মাহমুদ হাফেজ ।।

বাসায় আমাদের খাবার নেই। কনিষ্ঠপুত্র তুসুর খাবারও নেই। আমাদের খাবার বলতে ডাল, তেল, মসলা, শাক, সবজি। তুসুর খাবার জুস, দুধ, বিস্কুট, চিপস। গিন্নিকে বললাম, ছেলেকে ওঠাও, চলো খাবার কিনে আনি। করোনাদিনে সবাই গেলে দ্রুত ফেরা যাবে। গিন্নি রাজি, ছেলেও রাজি। সবাইকে মাস্ক, গ্লাভস পরালাম। বাসায় রেইনকোট ছিল। সবকিছুর ওপর রেইনকোট চাপালাম নিজে। বাকিরা রেইনকোট পরতে রাজি হলো না। কিম্ভুত কিমাকার দেখা গেলে লোকে মুখ টিপে হাসে, ‘পাছে লোকে বলে কিছু বলে’ –এসব নিয়ে তাদের এলার্জি আছে। আমি অল প্রুফ। নিজের সুরক্ষা নিজের কাছে, কে কি বললো কান দেয়ার সময় নেই। বাজার সেরে দ্রুতই ফিরলাম। গিন্নি মাছ শাক সবজি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। আমার সময় আর কীভাবে কাটে?

মুভিপ্রিয় বন্ধুরা বলে, করোনা বন্দীজীবনে পৃথিবী বা এ্যাপোকালিপসভিত্তিক মুভি ‘ওর্থ ওয়াচিং’। ছবি দেখতে নেটফ্লিক্স এর ‘পারেন্টস’ একাউন্টে ঢুকি। ছেলেরা আলাদা একাউন্ট খুলে বুড়োবুড়ির দেখার ব্যবস্থা করে রেখেছে । ‘আই ও’ নামের একটি মুভি খুজে পাই। টাইটেলে সামারি দেখে বুঝতে পারি, জোনাথন হেলপার্ট পরিচালিত ছবিটি আজকের প্রেক্ষাপটে যুৎসই। কয়েক মিনিট দেখেই বুঝি, ‘আই ও’ জনমানবশূণ্য পরিত্যক্ত পৃথিবীতে একা এক মানুষের টিকে থাকার গল্প। ছবিতে বুঁদ হয়ে যাই। সব বিবেচনায় এক উঁচু শিল্পমানসম্পন্ন ছবি দেখে তৃপ্ত হয়ে উঠি।
২.
গল্পটি বলি। প্রাকৃতিকদুর্যোগ বা মানবসৃষ্ট দূষণে বিপর্যস্ত ভূপৃষ্ঠে টিকতে না পেরে মানুষ বৃহস্পতির চাঁদ ‘আইও’তে চলে গেছে। অবশিষ্ট দুয়েকজন যদি থেকে থাকে, তাদের নিতে শেষ প্রস্থান শাটলটি স্পেস স্টেশন থেকে ‘আইও’র কক্ষপথে ছেড়ে যাবে কয়েকদিনের মধ্যে। এমন বাস্তবতায় বিজ্ঞানি ওয়াল্ডেনকন্যা সামান্থা একা পৃথিবীতে টিকে থাকার লড়াই করছে। বিষাক্ত জনহীন একটি জনপদের বায়ুস্তরের ওপরে কোথাও কোথাও শ্বাস নেয়ার পকেট আছে। পাহাড়শীর্ষের এমন এক জায়গার একটি রিসার্চ ল্যাবে সামান্থা থাকে। টিকে থাকার নি:সঙ্গসংগ্র্রামে সামান্থা গ্রিনহাউজে সবজি চাষ করে, মৌমাছি প্রজননের চাষ করে। এই পরিবেশে প্রাণের টিকে থাকা ও উদ্ভিদ উৎপন্নের গবেষণা করে। বই যোগাড়সহ নানা প্রয়োজনে সে মাঝে মাঝে এটিভি বাইকে চেপে দূরসমতলের ভুতুড়ে একটি শহরে যায়। বিষাক্ত বায়ুভরা শহরটিতে শ্বাস নেয়া যায় না বলে এখানে কোন বাসিন্দা নেই। ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, লাইব্রেরী, স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয়, জাদুঘর, হোটেল, রেস্তোরা সব জনপরিত্যক্ত, শূণ্য পড়ে আছে। সামান্থা অক্সিজেন মাস্ক পড়ে সেখানে যাতায়াত করে থাকে। দৈনন্দিন জীবনে সামান্থা ‘আই ও’ উপগ্রহে পাড়ি জমানো কাল্পনিক প্রেমিক এ্যালন এর সঙ্গে ই-মেইলে যোগাযোগ রাখে। ল্যাবের জায়ান্ট টেলিস্কোপে মাঝে মাঝে সৌরজগতের দিকে চোখ রেখে হারিয়ে যায়। এ্যালন তাকে মেইলে শেষ এক্সোডাস শাটলে পৃথিবী ছেড়ে ‘আই ও’তে চলে যাওয়ার অনুরোধ করে।

একদিন হিলিয়াম বেলুনে উড়ে আকাশ থেকে গবেষনাগার চত্ত্বরে অবতরণ করে এক যুবক। তার নাম মিকাহ। সে বিজ্ঞানী ওয়াল্ডেনকে খুজতে এসেছে বলে জানায়। সামান্থা জানায়, সে এখানকার গবেষনা সহকারী। বিজ্ঞানী ওয়াল্ডেন ফিল্ডওয়ার্কে বাইরে আছেন। মিকাহ তার জন্য অপেক্ষা করবে বলে জানিয়ে থেকে যায়। এখান থেকে ছবি আদম এ্যান্ড ইভের কাহিনীতে পরিণত হয়।

গবেষণাগারের ঘরটি খুব ছোট। মিকাহ ও সামান্থার একসঙ্গে কাটানো থেকে অন্তরঙ্গতা, প্রেম এক গভীর রোমান্টিকতায় গড়ায়। বিজ্ঞানী ওয়াল্ডেন তার পিতা এবং তার মৃত্যুর কথা সামান্থা মিকাহ’র কাছে প্রকাশ করে একদিন। নায়ক মিকাহ তাকে পৃথিবীতে একা না ফেলে সঙ্গে করে শাটেলে ‘আই ও’ উপগ্রহে নিয়ে যেতে চায়। সামান্থা রাজি হয়। এরমধ্যে প্র্রস্থান শাটেলযাত্রার লঞ্চিং সাইট বদল হয়। হিলিয়াম বেলুনে শাটেল স্টেশন পর্যন্ত যাওয়ার মতো গ্যাস না থাকায় তা সংগ্রহের প্রয়োজন হয়। শহরে গ্যাস আছে বলে সামান্থা জানায়। শহর থেকে গ্যাস ভরে উড়াল দেয়ার পরিকল্পনা করে মিকাহ। দু’জন মাস্ক পরিহিত অবস্থায় দুটি এটিভি ভেহিকেলে চেপে বেলুনসহ পাহাড়ের নিচের পরিত্যক্ত শহরে পৌঁছে ।

গ্যাস ভরে ফাঁকা প্রাঙ্গণ থেকে বেলুনে উড়াল দেয়ার প্রস্তুতি চালাতে থাকে তারা। শীঘ্রই ফিরে আসছি বলে হঠাৎ সামান্থা তার ভেহিকেলে চেপে শহরের দিকে চলে যায়। প্রিয় জনপদকে শেষবারের মতো হয়তো বিদায় জানাতে চায় সে। একঘন্টা সময় হাতে আছে বলে মিকাহ জানিয়ে দেয়। সামান্থা শহরের জাদুঘর ঘুরে দেখতে গিয়ে একটি দরজা খুলে বাইরে বিশুদ্ধ বায়ুর এক রঙিন জগৎ দেখতে পায়। পরে পেইন্টি প্রদর্শনীকক্ষে এসে একটি পেইন্টিং খুটিয়ে দেখতে থাকে। এতে অপূর্ব সুন্দরী নারীকে জড়িয়ে আছে রাজহাঁস। পাশে ডব্লিউ. বি. ইয়েটসের কবিতা ‘লিডা এ্যান্ড দ্য সোয়ান’ সাঁটানো। সামান্থা কবিতাটি পড়তে শুরু করলে হাজির হয় মিকাহ। সামান্থা ফিরছে না দেখে মিকাহ খুজে খুজে এখানে চলে এসেছে। সামান্থা মিকাহকে জিজ্ঞেস করে কবিতার ‘এ্যা সাডার ইন দি লায়নস ইনজেন্ডার্স দেয়ার, দ্য ব্রোকেন ওয়াল, দ্য বার্ণিং রুফ এ্যান্ড টাওয়ার এ্যান্ড আগামেনন ডেড’ এর অর্থ কী! মিকাহ বলতে থাকে, ‘রাজহাঁসের ছদ্মবেশে প্রভু জিউস। লিডা জিউসের কন্যা হেলেন অব ট্রয়কে জন্ম দেয়। ট্রয়রাজপুত্র প্যারিস কর্তৃক হেলেনের অপহরণ ট্রয়যুদ্ধ ডেকে আনে। আগামেনন ডেড- ট্রয়নগরীর পতন ও এক নতুন যুগ সূচনার ইঙ্গিতবহ’। ব্যাখ্যায় সামান্থাকে ভাবিত দেখে তার সবকিছু পূর্ণ হওয়ার দিকে ইঙ্গিত করে মিকাহ বলে, ‘তুমি যা করতে পারতে, সবকিছুই করেছো। তোমার বাবা তোমাকে নিয়ে গর্ব করতে পারে’। এসব শাটল স্টেশনে আলাপ করা যাবে জানিয়ে তার অক্সিজেন বোতলটি বদল করে যাত্রার জন্য তাকে অনুসরণ করতে বলে মিকাহ বেরিয়ে যেতে থাকে। সামান্থা নির্বিকার।

গল্পের ক্লাইমেক্সে পর্যায় এখানে। সামান্থা আকস্মিক বলে, ‘আমি যাবো না। তোমাকে একা যেতে হবে। আমি এমন বিশ্বের স্বপ্ন দেখে এসেছি যেখানে আমাকে আর মুখোশ পড়তে হবে না। সবাই বিশ্বে অনেক মৃত্যু দ্যাখে, আমি এখানে জীবন দেখি।’ অক্সিজেনমাস্ক খুলে ফেলতে ফেলতে বলে, ‘আমাকে কথা দাও, যদি আমি বাঁচি, ‘আই ও’র সবাইকে বলো, পৃথিবীতে জীবন আছে’। বিষাক্ত বাতাসে মাস্ক খোলা মানে নিশ্চিত মৃত্যু। এ থেকে সামান্থাকে বাধা দিতে মিকাহ চীৎকার করে সামান্থার দিকে দৌড়ে গিয়ে সামান্থাকে জাপটে ধরে। ততোক্ষণে মাস্ক উন্মুক্ত করে মুক্তবাতাসে শ্বাস নিতে শুরু করেছে সামান্থা। সে পৃথিবীতে টিকে গেছে।
পরের দৃশ্যে মিকাহ একা হিলিয়াম বেলুনে উড়াল দিয়ে আকাশে মিলিয়ে যেতে থাকে। মিকাহ’র প্রতি ই মেইল বার্তা আকারে সামান্থার নেপথ্যকন্ঠ : ‘প্রিয় মিকাহ, আমার বাবা টি এস এলিয়টের উদ্বৃতি ভালোবাসতেন- ‘আমরা অনুসন্ধান থেকে বিরত হবো না, আমাদের সমস্ত অনুসন্ধানের সমাপ্তি শুরুর জায়গায় পৌঁছাবে এবং মনে হবে জায়গাটি প্রথম’।

শেষদৃশ্যে, ফেণিলশুভ্র সমুদ্রে তরঙ্গের সামনে দাঁড়িয়ে উন্মুক্ত বাতাসে চুল উড়িয়ে দেয় সামান্থা। মিকাহর মাধ্যমে পৃথিবী ছেড়ে যাওয়া মানুষের উদ্দেশে তার বার্তা নেপথ্যকন্ঠে চলতে থাকে। সমুদ্রতীরের ঘনকুয়াশা ভেদ করে একটি শিশু হেটে আসে। দিগন্তপ্রসারিত সমুদ্রে তাকিয়ে থাকা সামান্থার কাছে তার মতো নি:শব্দে দাঁড়ায়। ছবির যবনিকা ঘটে।

৩.
‘আই ও’ ক’বছর আগে তৈরি হলেও আজকের প্রেক্ষিতে সমকালীন। এতে কালিক বিশ্বপরিস্থিতির সঙ্গে মিশেছে সাহিত্য ও গ্রিকপুরাণ। প্রায় সাড়ে তিনহাজার বছর আগের রাষ্ট্র স্পার্টা, ট্রয় নগরী, লিডা, জিউস, হেলেন অব ট্রয়, হেলেনের অপহরণ, ট্রয়যুদ্ধের সূচনা, আগামেননের মৃত্যু, ট্রয়ের পতন তুলে ধরা হয়েছে। আইরিশ কবি ডাব্লিউ বি. ইয়েটসের কবিতায় নাটশেল আকারে গ্রিকপুরাণের পুরো কাহিনী বিবৃত। চলচ্চিত্রে কবিতাটি তুলে আনা হয়েছে নাটকীয় চমৎকারিত্বে।

মানুষের অবিবেচক কর্মকান্ড ও সীমাহীন উন্নয়ন পৃথিবীর শহর জনপদ বসবাসঅযোগ্য করে তুলেছে। কবি সুকান্ত ‘এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি’- বলে নতুন শিশুর জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তোলার যে আকাঙ্খা করেছিলেন, তা সুদূর পরাহত। আইও মুভিতে দেখা যাচ্ছে, পৃথিবীতে টিকতে পারেনি মানুষ। ভালবেসে নিজগ্রহ আঁকড়ে থাকা এক নারী নতুন যুগের সূচনা করে সকলকে ফিরে আসার আহবান জানাচ্ছে।

‘আই ও’ বৃহস্পতিগ্রহের একটি উপগ্রহ। ১৬১০ সালে গ্যালিলিও আবিস্কার করেন। গ্রিকপুরাণ অনুসারে নাম দেয়া হয় ‘আই ও’।

বর্তমান পৃথিবীকে গ্রিক পুরানের সঙ্গে কো- রিলেট করে মুভিটি তৈরি করা হয়েছে। ছবির গল্প এগুতে থাকলে হিলিয়াম বেলুনে আকাশ থেকে আবির্ভূত হয় মিকাহ নামের যে যুবক, সে যেন দেবতা জিউসের প্রতিরূপ। নায়িকা সামান্থার সঙ্গে তার প্রেম-রোমান্টিকতার ফল যবনিকাদৃশ্যের শিশু।

জাদুঘরে লিডা ও রাজহাঁসের পেইন্টিং, ইয়েটসের কালজয়ী কবিতা ‘লিডা এ্যান্ড দ্য সোয়ান’, শেষমুহূর্তে সামান্থার পৃথিবী ছেড়ে না যাওয়া বহুমাত্রিক বিবেচনায় মাধুর্যময়। ইয়েটসের কবিতার গ্রিকপুরাণ ও পেইন্টিংয়ের ব্যাখ্যার পর সামান্থা পৃথিবী ত্যাগ না করে মিকাহর সন্তান জন্ম দিয়ে নতুন যুগের সূচনা করে। যাকে শেষদৃশ্যে দেখা যায়। টি এস এলিয়টের কবিতা উদ্বৃত করে বার্তা দেয়া হয়- আমাদের সব অনুসন্ধানের সমাপ্তি হবে যেখান থেকে শুরু সেখানে এবং মনে হবে তা প্রথম বা নতুন। ইয়েটস এর ‘আগামেনন ডেড’ এর মাধ্যমেও যুদ্ধে ট্রয়নগরীর পতন এবং নতুন যুগের সূচনার কথা বলা হয়েছে। ফলে গ্রিকপুরাণ আর কবিতা একাকার।

শেষে পৃথিবীতে ফিরে আসতে সামান্থা মানুষের উদ্দেশে যেসব বার্তা দেয় তার প্রতিটি লাইন উদ্বৃতিযোগ্য। সামান্থা বলতে থাকে- ‘আমরা আমাদের গ্রহকে ভয় পেতে শিখেছি এবং নতুন গ্রহ খুজতে নক্ষত্রপুঞ্জের দিকে উড়ে চলেছি। কিন্তু অন্যগ্রহের মোহ আমার চোখকে আমাদের বাড়ির সৌন্দর্য থেকে বিচ্যূত করতে পারেনি। সমুদ্রতরঙ্গ তীরে চূর্ণ হচ্ছে, আমার চুল বাতাস উড়িয়ে নিচ্ছে, এ এক সুন্দর অনুভূতি। তাদের বলো, নতুন এক পৃথিবী আমাদের জন্য অপেক্ষমান। আমরা তোমাদের জন্য, তোমাদের ফিরে আসার জন্য অপেক্ষা করছি’।

৪.
আরে, এ তো দেখি রীতিমতো সিনেমা সমালোচনা শুরু করে দিয়েছি। এই কাজ লেখক অনুপম হায়াত বা সাংবাদিক মাহমুদা চৌধুরীর। হালের সাংবাদিক রিমন মাহফুজ বা আবদুল্লাহ জেয়াদের। সাংবাদিকতার মাঠপর্যায়ে কাজ করার সময় দেখতাম অনুপম হায়াত সিনেমা নিয়ে লিখে চলেছেন। মাহমুদা চৌধুরী সাপ্তাহিক বিচিত্রায় নিয়মিত মুভি সমালোচনা করে চলেছেন। বিচিত্রা সম্পাদক শাহাদাৎ চৌধুরী সাংবাদিকতার ট্রেন্ডসেট করে গেছেন বহুবিষয়ে। মুভি আলোচনা অন্যতম। বিট ঠিক হওয়ার আগে নানা বিষয়ে রিপোর্টের অনহীন আগ্রহ থেকে এফডিসি’র শ্যূটিং ফ্লোরে ঘুরেছি নব্বুইয়ের শুরুতে, রিপোর্টও করেছি। সেসব সিনেপ্লেক্স জমানার আগের কথা। যাই বলি, সিনেমা আলোচনা আমার কম্ম নয়।