রুগীদের মনোবল চাঙ্গা রাখতে চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতালে যুক্ত হয়েছে খেলাধুলা, বিনোদন

রুগীদের মনোবল চাঙ্গা রাখতে চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতালে যুক্ত হয়েছে খেলাধুলা, বিনোদন
রুগীদের মনোবল চাঙ্গা রাখতে চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতালে যুক্ত হয়েছে খেলাধুলা, বিনোদন

পোস্টকার্ড প্রতিবেদক।।

প্রাণঘাতী মহামারী প্রাদূরভাবে যখন চরম আকার ধারন করছিল, উন্নত বিশ্বের দেশ গুলোতে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যূর মিছিল যখন দীর্ঘ্য হচ্ছিল তখন এই ক্ষুদ্রদেশের মানুষের হতাশার অন্ত ছিলনা তখন চট্টগ্রামের এক স্বপ্নবাজ তরুন জনস্বাস্হ্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বিদ্যুৎ বড়ুয়া করোনা রুগীদের জন্য একটি হাসপাতাল করতে মরিয়া তখন তার স্বপ্নকে বাস্তবে রুপ দিতে হাত বাড়িয়ে দেন।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ছলিমপুর ইউনিয়নের লতিফপুর এলাকায় অবস্থিত গাড়ি ম্যনোফেকচারিং কারখানা নাভানাগ্রুপের ৬৮০০ বর্গফুটের দুইতলা বিশিষ্ট একটি বিল্ডিং দেওয়ার ঘোষনাদেন নাভানা গ্রুপের ,ভাইস চেয়ারম্যান সাজেদুর ইসলাম সেই থেকে জনগনের হাসপাতাল খেত চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতাল,বিশ দিনের মধ্যে সকল কর্মযজ্ঞ শেষ করে যাত্রা শুরু করে গত ২১ এপ্রিল।

বিনা পয়সায় চিকিৎসা সেবা,ঔষুধ,থাকা খাওয়া সহ সকল সুবিধা সম্বলিত এই চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতাল। অল্প কয়েকদিনের মধ্যে কয়েকশত রুগীকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচেছন,এবং দিন দিন চিকিৎসা সেবা নিতে রোগীরা ছুটে আসছেন, অগ্রসরমানএই হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় একদিকে ক্যারম, অন্যদিকে লুডু, আরেক প্রান্তে দাবা চলছে প্লেয়িং কার্ড। দেখেই মনে হবে কোনো স্পোর্টস জোন বা অ্যান্টারটেইনমেন্ট ক্লাব। কিন্তু বাস্তবে এটি একটি হাসপাতাল।

প্রশ্ন করতে পারেন হাসপাতালে আবার খেলা? হ্যাঁ হাসপাতালেই খেলা, খেলা নয় শুধু, অন্যরকম এক উৎসবমুখরতা।

শুক্রবার (২২ মে) রাতে খেলতে খেলতে্ এমনই উৎসবমুখরতায় মেতেছেন চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা-রোগীরা। এসময় তাদের কেউ ফিরে গেছেন অতীত স্মৃতিতে আবেগ প্রবণতায়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুক্রবার বিকেলেই চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতালে রোগীদের চিত্ত-বিনোদন ও খেলাধূলার জন্য যুক্ত হয়েছে দুটি ক্যারম বোর্ড, দুটি লুডু, দুটি দাবা এবং দুই সেট তাস। ইফতারের পর রাতে খেলার উপাদানগুলো করোনা রোগীর দুই ওয়ার্ডে উন্মুক্ত করে দিলে সেখানে তৈরি হয় অনন্য এক পরিবেশ।

করোনা রোগীদের জন্য চারদিকে যখন অবহেলা, ঘৃণার স্তূপ ছড়ানো-ছিটানো, সন্তান যখন করোনা-আক্রান্ত বাবা-মাকে নির্মম নিষ্ঠুরতায় ফেলে দিয়ে যায়, তখন বিনা পয়সায় পরম মমতায় চিকিৎসাসেবা, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা, সে এক বিশাল প্রাপ্তি। তার উপর রিক্রেয়শনের জন্য খেলাধূলার ব্যবস্থা যেন মেঘ না চাইতে বৃষ্টি, দীর্ঘদিন পর ক্যারম খেলা, তাও আবার করোনা-হাসপাতালে- এমন উতলা পরিবেশে স্বাভাবিকভাবেই স্মৃতিকাতর ও আবেগী হযে ওঠেন করোনা রোগীরা।

ক্যারম খেলায় অংশ নিয়ে ফিল্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম শিল্পী বলেন, বহু বছর আগে ছোটবেলায় খেলেছিলাম ক্যারাম। সেই ক্যারাম আর গুটি ধরে ফিরে গিয়েছিলাম শৈশবের ‍স্মৃতিতে। এইসব সত্যিই এক অনন্য প্রাপ্তি আমাদের জন্য। গত এক সপ্তাহ দরে চিকিৎসায় তার করোনা-নেগেটিভ আসার সুসংবাদটিও জানান তিনি।

এই সব আয়োজনের বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতালের সিই্ও ডা. বিদ্যুত বড়ুয়া শুক্রবার রাতে কে বলেন, আমি লক্ষ্য করলাম করোনা-আক্রান্তরা শারীরিকভাবে মরার আগে মানসিকভাবে মরছেন। তাই সবার আগে তাদের দরকার মানুষিক স্বস্তি, বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ। তারই অংশ হিসেবে এসব খেলাধূলার সংযোজন।

শুধু তাই নয়, এরই মধ্যে ব্যবস্থা হয়েছে সুর-বিনোদনের। খেলাধূলা আর সুরে সুরে আমরা গড়ে তুলতে চাই বাংলাদেশে এক ব্যতিক্রমী চিকিৎসাসেবা। মানবিক বিপর্য়যের এই ক্রান্তিকালে রোগীরা যদি এমন সুন্দর পরিবেশ পান আমার বিশ্বাস তারা খুব দ্রুতই করোনা-জয় করতে সক্ষম হবেন।