রিমান্ড শেষে শ্রীঘরে সীতাকুণ্ডের এসআই সাইফুল, সলিমপুরে পাহাড় দখলের অপকর্মেও জড়িত

রিমান্ড শেষে শ্রীঘরে সীতাকুণ্ডের এসআই সাইফুল, সলিমপুরে পাহাড় দখলের অপকর্মেও জড়িত
এসআই সাইফুল আলম

নিউজ ডেস্ক ।।

সম্প্রতি এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে গাড়ি কেনার ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা লুটের ঘটনায় সীতাকুণ্ড থানার বিতর্কিত এসআই সাইফুল আলম এখন কারাগারে। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে সরকারি পাহাড় কেটে বসতি নির্মাণসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।

কুমিল্লা জেলার বুড়িচং রাজাপুর ইউনিয়নের খোরশেদ আলমের ছেলে এসআই সাইফুলের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।

জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা আবু জাফরের সীতাকুণ্ড থানায় দায়ের করা লুটের মামলায় এসআই সাইফুল আলম ছাড়াও ওই থানার ওসির বডিগার্ড চাঁদপুর জেলার বাভ্রন শাখুয়া এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমানের ছেলে কনস্টেবল সাইফুল ইসলাম এবং সীতাকুণ্ড এলাকার বাসিন্দা সোর্স রিপন, হারুন এবং গাড়িচালক রাজুকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন এসআই সাইফুল আলম ও কনস্টেবল সাইফুল ইসলাম।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ‘তৌহিদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে মোবাইল ফোনে পরিচয়ের সূত্র ধরে একটি পিকআপ গাড়ি কেনার জন্য ২০ ডিসেম্বর সীতাকুণ্ডে আসি। দরদাম না মেলায় পুনরায় বাড়ি ফেরার উদ্দেশে পৌরসভার বাসস্ট্যান্ডে টিকিট কিনে শ্যামলী বাস কাউন্টারে অপেক্ষা করতে থাকি। সেখানে দুজন লোক দুই পাশে এসে বসে। এক পর্যায়ে তাদের সঙ্গে যোগ দেন এসআই সাইফুল আলম ও সীতাকুণ্ড থানার ওসি ফিরোজ হোসেন মোল্লার বডিগার্ড কনস্টেবল সাইফুল ইসলাম। তারা দুজন নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয়ে আবু জাফরকে ইয়াবা ব্যবসায়ী উল্লেখ করে ভয়ভীতি দেখান। পরে আবু জাফরকে একটি গাড়িতে তুলে সীতাকুণ্ড জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে পেটে ইয়াবা আছে বলে এক্স-রে করান। কিন্তু পেটে ইয়াবা না পেয়ে তাকে গাড়িতে করে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরানো হয়। এক পর্যায়ে তার কাছে থাকা ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা কেড়ে নিয়ে মেরে ফেলার ভয়ভীতি দেখিয়ে ঢাকার একটি গাড়িতে তুলে দেয়া হয়।’

কিন্তু ব্যবসায়ী আবু জাফর ঢাকায় না গিয়ে চট্টগ্রাম পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হককে বিষয়টি অবহিত করেন। পুলিশ সুপার বিষয়টি তদন্তের জন্য সীতাকুণ্ড সার্কেলের এডিশিনাল এসপি আশরাফুল করিমকে নির্দেশ দেন। আশরাফুল করিম ঘটনার তদন্তে সত্যতা পেয়ে এসপিকে অবগত করলে ওই দুই পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। এরপর দুই পুলিশ সদস্যকে ডাকাতির মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এদিকে সীতাকুণ্ড উপজেলার ৫ নম্বর ব্রিজ এলাকার বাসিন্দা আহমেদ ছফা অভিযোগ করেন, ‘ওই এলাকায় সরকারি পাহাড় কেটে এসআই সাইফুল দুটি প্লট দখল করেছেন। ওই জমিতে তিনি বসতঘর নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন। যদিও গত দুই মাস আগে এসব অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দিয়েছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এখনো প্লট দুটি এসআই সাইফুলের দখলে রয়েছে।’

তিনি জানান, শুধু এসআই সাইফুল নয়, সীতাকুণ্ড থানাধীন ৫ নম্বর ব্রিজ, জঙ্গল সলিমপুরসহ বেশকিছু স্থানে সরকারি পাহাড় কেটে বেশ ক’জন পুলিশ সদস্য স্থাপনা গড়েছেন।

সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন মোল্লা বলেন, ‘এসআই সাইফুল আলম দেড় বছর ধরে সীতাকুণ্ড থানায় কর্মরত ছিলেন। ব্যবসায়ীর টাকা লুটের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত এসআই সাইফুল আলম ও কনস্টেবল সাইফুল ইসলামকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। ভুক্তভোগীর দায়ের করা ডাকাতি মামলায় এ দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমানে তারা কারাগারে আছেন। মামলাটি তদন্ত করছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।’