স্বপ্নের পদ্মা সেতু দৃশ্যমান , বসলো শেষ স্প্যান

স্বপ্নের পদ্মা সেতু দৃশ্যমান , বসলো শেষ স্প্যান
স্বপ্নের পদ্মা সেতু। ফোকাস বাংলা

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।। 

অবশেষে সংযোগ ঘটেছে পদ্মাসেতুর দুই পাড়ের। সকল বাধা-বিপত্তি পাশ কাটিয়ে বসেছে স্বপ্নের সেতুর ৪১তম ও শেষ স্প্যানটি। বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা থেকে শুরু হয় ৪১তম স্প্যান বসানো কাজ।

এর মাধ্যমে দেশের উত্তর ও উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানী ও পূর্বাঞ্চলের সরাসরি যোগাযোগের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন এখন বাস্তবতার সন্ধিক্ষণে। এর আগে বুধবার স্প্যানটি মাওয়া প্রান্তের কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ক্রেনে তুলে ১২ এবং ৩ নম্বর খুঁটির কাছে এনে রাখা হয়।

পদ্মাসেতুর ৪২টি খুঁটি ও ৪১টি স্প্যান। প্রতিটি স্প্যান ১৫০ মিটার লম্বা। শধু নদীতে সেতু ৬.১৫ কিলোমিটার। দুই পাড়ের সঙ্গে সংযোগ মিলিয়ে সেতুটি সাড়ে ৯ কিলোমিটার। রোড ভায়াডাক্ট ৩.৮ কিলোমিটার। রেল ভায়াডাক্ট ০.৫৩২ কিলোমিটার। 

অর্থাৎ সেতুর মোট দৈঘ্য ১০ দশমিক ৪৮২ কিলোমটার। নদী শাসন করা হচ্ছে ১৪ কিলোমিটার। সংযোগ সড়ক উভয়দিকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার।

চীনের মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি সেতুটি নির্মাণ কাজ করছে। নদী শাসন কাজ করছে চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশন। সংযোগ সড়ক নির্মাণ করেছে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের আবুল মোনেম লিমিটেড। সেতু নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা। যার পুরোটাই দেশের নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হচ্ছে।

১৯৯৮ সালে যমুনা নদীতে বঙ্গবন্ধু সেতুর পর পদ্মায় সেতু নির্মাণের দাবি উঠেছিল। সেই দাবি থেকে কাজ শুরু হতে আরও এক দশক সময় লেগে যায়। এরপর বিশ্বব্যাংকের অথসহযোগিতা বন্ধ হয়ে যায়। দুনীতির অভিযোগ উঠে। অবশ্য দুনীতি প্রমাণিত না হওয়ায় মামলা খারিজ হয়।

২০১৩ সালে আওয়ামী লীগ সরকার এই সেতু দেশের নিজস্ব অর্থে সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৮ সালে।

তবে নদীর তলদেশে মাটির গঠনগত বৈচিত্রের কারণে কাজ আরও পিছিয়ে যায়। সাড়ে ৪ বছর ধরে শুধু সেতুর খুঁটির কাজ চলে। আর ৩ বছর লাগে সেই খুটিতে স্প্যান বসাতে। অবশেষে ৪২টি খুঁটিতে ৪১টি স্প্যান তুলে দিয়ে সেতুর চালুর দিকে যাচ্ছে সরকার।

২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে সেতুর ওপরে সড়ক ও ভেতরে রেলপথের কাজ শেষ করে চালু করার লক্ষ্য রয়েছে সরকারের।