স্বামীর রেখে যাওয়া কৃষি জমিতেও হিন্দু বিধবার অধিকার আছে : হাই কোর্ট

স্বামীর রেখে যাওয়া কৃষি জমিতেও হিন্দু বিধবার অধিকার আছে : হাই কোর্ট

পোস্টকার্ড আদালত ডেস্ক ।।

হিন্দু বিধবা নারীর স্বামীর রেখে যাওয়া কৃষি জমিতেও অধিকার আছে বলে রায় দিয়েছে হাই কোর্ট। রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছে, বাংলাদেশে প্রচলিত (১৯৩৭ সালের ‘দ্য হিন্দু ওমেন’স রাইট টু প্রোপার্টি অ্যাক্ট’) যে আইন আছে, সে আইনে স্বামীর রেখে যাওয়া সম্পত্তিতে কোনো পার্থক্য (কৃষি বা অকৃষি) করেনি। ফলে বিদ্যমান আইন অনুযায়ী স্বামীর রেখে যাওয়া কৃষি জমিতে তার বিধবা স্ত্রী অধিকারের দাবিদার।

খুলনার বটিয়াঘাটার জ্যোতিন্দ্র নাথ মণ্ডলের করা আবেদন (রিভিশন মামলা) খারিজ করে গতকাল বুধবার বিচারপতি মো. মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরীর একক হাই কোর্ট বেঞ্চের দেওয়া রায়ে এ পর্যবেক্ষণ এসেছে।

আদালতে আবেদনকারীর আইনজীবী ছিলেন মো. আব্দুল জব্বার। বিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন নাফিউল ইসলাম। অ্যামিচি কিউরি হিসেবে এ মামলায় মতামত দিয়েছেন দিয়েছেন আইনজীবী উজ্জল ভৌমিক।

রায়ের পর উজ্জল ভৌমিক বলেন, রায়ের এই পর্যবেক্ষণের আইনগত বাধ্যবাধকতা আছে। দেশের নিম্ন আদালত এই পর্যবেক্ষণ মানতে বাধ্য। এই রায়ের ফলে দেশের হিন্দু বিধবা নারীরা (জীবনস্বত্ব) তার স্বামীর রেখে যাওয়া কৃষি জমি ভোগ-দখল করতে পারবেন। এতদিন বিধবা নারীরা শুধু অকৃষি জমির অধিকারী ছিলেন। এখন স্বামীর সব সম্পত্তিতে বিধবা নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠিত হল।

আইনজীবী উজ্জ্বল ভৌমিক বলেন, ১৯৭২ সালের আগে ইন্ডিয়ার ফেডারেল কোর্টের রায় অনুযায়ী এই বিধানই চলে আসছিল। কিন্তু দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালে ১৯৩৭ সালের ‘দ্য হিন্দু ওমেন’স রাইট টু প্রোপার্টি অ্যাক্ট’ সরাসরি গ্রহণ করে বাংলাদেশ সরকার। মূল আইনটিতে যেহেতু হিন্দু বিধবাদের সম্পত্তির অধিকারের ক্ষেত্রে স্বামীর যে কোনো সম্পত্তির কথা বলা আছে, সেই আইনটিকেই আজকে বিচারিক ঘোষণার মাধ্যমে আরও পরিষ্কার করল। আবেদনের ওপর শুনানি শেষে গতকাল বুধবার উচ্চ আদালত এ রায় দিল।