একটি পক্ষ সিনহা হত্যা নিয়ে বিশেষ সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করেছিল: সেনা প্রধান

একটি পক্ষ সিনহা হত্যা নিয়ে বিশেষ সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করেছিল: সেনা প্রধান
একটি পক্ষ সিনহা হত্যা নিয়ে বিশেষ সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করেছিল: সেনা প্রধান

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ হত্যার ঘটনায় একটি পক্ষ ‘অন্যায্য বিশেষ সুযোগ’ নেওয়ার চেষ্টা করেছিল বলে জানিয়েছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। তবে এ রকম একটি ঘটনা নিয়ে ‘অন্যকিছু করার চেষ্টা’ কাঙ্ক্ষিত নয় বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। পাশাপাশি এই ঘটনাকে নৃশংস ও অত্যন্ত জঘন্যতম ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করে এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে রেজিমেন্টাল কালার প্যারেড শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে সেনাবাহিনী প্রধান এসব কথা বলেন।

গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারের টেকনাফ থানার শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এই ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় ওঠে। এই ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় ১০ পুলিশসহ ১৩ জন কারাগারে আছেন। মামলার তদন্ত করছে র‌্যাব।

এই ঘটনায় কেউ কেউ সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীকে মুখোমুখি দাড় করানোর চেষ্টা হচ্ছিল বলে বিভিন্ন পর্যায় থেকে দাবি করা হয়েছিল সেসময়।

সিনহা মো. রাশেদ হত্যার একমাস পর চট্টগ্রাম সেনানিবাসে এই অনুষ্ঠানে এসে সেই ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।

এক প্রশ্নের জবাবে সেনাপ্রধান জানান, তিনি আশা করেন ভবিষ্যতে সেনাবাহিনীতে কর্মরত এবং অবসরপ্রাপ্ত কারও সঙ্গেই এই ধরনের ঘটনা ঘটবে না।

জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, ‘আমি বলব, এটা একটা নৃশংস এবং অত্যন্ত জঘন্যতম ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত হচ্ছে। আমি সেনাপ্রধান হিসেবে আশা করতে চাই যে, তদন্তটা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে। যারা প্রকৃত ক্রিমিনাল (অপরাধী) তাদের উপযুক্ত এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে- যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের কোনো ঘটনা সেনাবাহিনীতে কর্মরত অথবা অবসরপ্রাপ্ত আর কারও সঙ্গে না হয়।’

এ ঘটনায় দায়ের হওয়া হত্যা মামলার তদন্তে সন্তুষ্ট কি না? এমন প্রশ্নের জবানে সেনা প্রধান বলেন ‘তদন্ত হচ্ছে, তদন্তনাধীন বিষয়ে কিছু বলা যাবে না। তদন্তে সন্তুষ্ট কি না এটা এখন বলা যাবে না। এটুকু বলতে পারি, অত্যন্ত জঘন্যতম ঘটনা ঘটেছে, এটার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হতে হবে। তদন্তে কি বেরিয়ে আসে সেটা দেখি এবং সাজাটা যখন হবে, তখনই সন্তুষ্টির বিষয়টা আসবে। তার আগে সন্তুষ্টির বিষয়ে বলার কোনো সুযোগ নেই।’

এই ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো সুপারিশ করা হবে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে সেনাপ্রধান বলেন, ‘সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সরকারকে কোনো সুপারিশ দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। কারণ এই ঘটনার পর সরকারের পক্ষ থেকে একটা যৌথ তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। এই টিমের প্রতি সেনাবাহিনী এবং আমি নিশ্চিত পুলিশবাহিনীরও সমর্থন আছে।’

এই ঘটনায় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে কি না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনীর কোনো সদস্যের অস্বাভাবিক কিছু যদি হয়, সেটা আমাদের অভ্যন্তরে তদন্ত হয়। এটা তদন্তের নির্দেশ আমরা দিয়েছিলাম, এটা হচ্ছে।’
এর আগে, চট্টগ্রাম সেনানিবাসে অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর ছয়টি ইউনিটকে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য পতাকা তুলে দেন সেনাপ্রধান। এ সময় তিনি কুচকাওয়াজ পরিদর্শনের পাশাপাশি সালাম গ্রহণ করেন।