সীতাকুন্ড থেকে কক্সবাজার যাওয়ার পথে তরুণী খুন ,লাশ উদ্ধার

সীতাকুন্ড থেকে কক্সবাজার যাওয়ার পথে তরুণী খুন ,লাশ উদ্ধার

চকরিয়া সংবাদদাতা।।

চকরিয়ায় ১৮ বছর বয়সী চম্পা নামের এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বুধবার (৬ মে) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে কতিপয় দুর্বত্ত সিএনজি চালিত অটোরিকশা থেকে কোণাখালী ইউনিয়নের মরংঘোনাস্থ সড়কে ফেলে দেয়। পথচারীরা দেখে থানায় খবর দেয়।

উদ্ধারকৃত লাশ কক্সবাজার সদর উপজেলার খরুলিয়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের রুহুল আমিনের মেয়ে চম্পার (১৮)। রাত ১২ টার দিকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

রাত পৌনে ১ টায় এ রিপোর্ট লেখার সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন চকরিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ( এএসপি) কাজী মতিউল ইসলাম ও থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হাবিবুর রহমানসহ একদল পুলিশ।

প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্টে মাথায় আঘাতে চিহ্ন পাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে চম্পার মামা কলিম উল্লাহ জানান, দরিদ্র পিতা হিসেবে যৌতুক দিতে অসমর্থ হওয়ায় রামুর তেচ্ছিপুলের শাহ আলম নামে এক যুবককে ঘরজামাই রেখে চম্পাকে ৫-৬ মাস আগে বিয়ে দেওয়া হয়। কোনো কারণে পরিবারের ওপর মন খারাপ করে মার্চের শুরুর দিকে চম্পা কাউকে কিছু না বলে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে তার ফুফুর বাসায় চলে যান। সেখানে কয়েকদিন থাকার পরই শুরু হয় লকডাউন।

রাগ কমে গেলে বাড়ি চলে আসার জন্য পীড়াপীড়ি করছিলেন চম্পা। এ কঠিন মুহূর্তে আসতে বারণ করা হচ্ছিল বারবার। কিন্তু বুধবার সকালে জেদ ধরে বলেন, পায়ে হেঁটে হলেও বাড়ি চলে আসবেন।

তখন তার বাবা তার জন্য এক হাজার টাকা বিকাশে পাঠান। তার ফুফাতো ভাই তাকে নতুন ব্রীজ এলাকায় এসে একটি সিএনজিতে তুলে দেন। সর্বশেষ যখন তার সঙ্গে যোগাযোগ হয়, তখন তিনি চকরিয়ার জনতাবাজার (গরুবাজার) পর্যন্ত এসেছেন বলে জানিয়েছিলেন।

মহাসড়ক দিয়ে গাড়ি না আসায় উপকূলীয় সড়ক দিয়ে কক্সবাজার নেওয়ার কথা বলে আরেকটি সিএনজিতে উঠে বলে চট্টগ্রাম থেকে আসা সিএনজি চালক জানান। সেটি সন্ধ্যার আগে। কিন্তু এরপরই চম্পার সঙ্গে পরিবারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। বাবা-মার অস্থিরতা বাড়ার পর রাত ১১টার দিকে সড়কে মরদেহ পাবার খবর পেয়ে সবাই চকরিয়া থানায় এসে গলাকাটা মরদেহটি চম্পার বলে শনাক্ত করে।

কলিম উল্লাহর মতে, লকডাউনে চট্টগ্রাম থেকে বাড়ি ফেরার জন্য বের হওয়াই কাল হলো তরুণী চম্পার। তার অনাকাঙ্ক্ষিত মর্মান্তিক মৃত্যুতে তার মা-বাবার বুকফাটা কান্না সবাইকে অশ্রুসিক্ত করছে। এমন চঞ্চল মেয়েটিকে কোন অপরাধে হত্যা করল নরপিশাচরা, তা বের করতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ ও দাবি জানান কলিমসহ চম্পার পরিবার।

ওসি হাবিবুর রহমান বলেন, ‘মেয়েটি চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের ফুফুর বাসা থেকে সিএনজি যোগে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওয়ানা হয়। পথিমধ্যে কে বা কারা মেয়েটিকে হত্যা করেছে এবং কেন এই হত্যা তা তদন্তের পর জানা যাবে।’

লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।