ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সীতাকুণ্ডে ১১ কিলোমিটার জুড়ে তীব্র যানজটে নাকাল যাত্রী 

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সীতাকুণ্ডে ১১ কিলোমিটার জুড়ে তীব্র যানজটে নাকাল যাত্রী 
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সীতাকুণ্ডে ১১ কিলোমিটার জুড়ে তীব্র যানজটে নাকাল যাত্রী 

বিশেষ প্রতিবেদক ।। 

আবারও ভয়াবহ যানজটের কবলে পড়েছেন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ডে যাত্রী ও গাড়ি চালকরা। সোমবার (১৯ জুন) দুপুর ১২টার পরে উপজেলার ফৌজদারহাট থেকে উভয় দিকে এ যানজট ছড়িয়ে পড়ে চট্টগ্রাম নগরীর একে খাঁন থেকে ভাটিয়ারি পর্যন্ত অন্তত ১১ কিলোমিটার এলাকায়।

ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, এক কিলোমিটার পথ পেরোতে এক ঘণ্টারও বেশি সময় লেগেছে। অফিস আওয়ারে মহাসড়ক বন্ধ করে সংস্কার কাজ করায় এ ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকাল থেকে সীতাকুণ্ড উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফৌজদারহাট-বন্দর সংযোগ সড়কের মুখে সংস্কার কাজ শুরু করে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর কর্তৃক নিয়োজিত ঠিকাদারি সংস্থা তাহের ব্রাদার্স। এসময় ঢাকামুখী লেনটি বন্ধ রাখায় দুপুরের দিকে গাড়ির চাপে যানজট তীব্র হয়ে উঠে।

এসময় যাত্রীরা জানান, গত দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে দক্ষিণ সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারি থেকে চট্টগ্রামের সিটি গেইট পর্যন্ত যানজট নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রথম দিকে এ যানজট বেশি হতো ভাটিয়ারি বাজারের উত্তরাংশে সওজ কর্তৃক নির্মিত পাঁচটি গতিরোধক ও মহাসড়কের যত্রতত্র যানবাহন দাঁড়িয়ে থাকার কারণে। পরবর্তীতে বিভিন্ন দপ্তরের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সওজ কর্তৃপক্ষ এখানে একটি গতিরোধক রেখে বাকি চারটি তুলে দিলে এ স্থানে যানজট কমে আসে। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে মহাসড়কের এই অংশে সড়ক সংস্কার শুরু করে সওজ নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। দিনের বেলায় অফিস টাইমে তারা নিয়মিত কাজ শুরু করায় প্রচুর যানজটের সৃষ্টি হয়। যা গভীর রাত পর্যন্ত থাকছে । আর তাই দুপুর থেকে গভীর রাত অবধি নিয়মিত যানজটে আটকে থেকে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন এ রুটের যাত্রী ও গাড়ি চালকরা।

আজ সোমবারও সকাল থেকে ছলিমপুরের ফৌজদারহাট পুলিশ বক্স সংলগ্ন এলাকায় সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু করে সওজের ঠিকাদাররা। এতে যানজট বৃদ্ধি পেয়ে ভয়াবহ হয়ে উঠলে দুপুর ১২টা থেকে ৩টা পযন্ত সড়ক একপ্রকার অচল হয়ে পড়ে। তবে পরে যান চলাচল শুরু হলেও তা একেবারেই ধীর গতিতে চলছে ।

যাত্রীবাহি গাড়ির চালক মহিউদ্দীন এ সময় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এসব যানজট ইচ্ছা করে সৃষ্টি করা। নইলে দিনের বেলায় কেন সড়ক বন্ধ করে সংস্কার কাজ করতে হবে? তারা রাতে কোথায় যান? যখন সড়কে গাড়ির চাপ কম তখন কাজ করুক তারা। ঠিকাদারদের কাছে কৈফিয়ত চাওয়ার যেন এ দেশে কেউ নেই।

বার আউলিয়া হাইওয়ে থানার ইনচার্জ মো. বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীর বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের এই যানজট নিয়ে আমরা খুবই বিরক্ত। এসব নিয়ে সওজ ও ঠিকাদারদের সাথে কথা বলতে বলতে আমরা হাঁপিয়ে গেছি। অফিস চলাকালীন সময়ে সংস্কার কাজ করলে যানজট ভয়াবহ হয় জেনেও সড়ক ও জনপদ বিভাগের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাহের ব্রাদার্স কর্তৃপক্ষ এই সময়েই সংস্কার কাজ করেন। আর তাতে ভয়াবহ যানজট হয়ে যায়। সোমবারও একদিকে প্রচুর যানবাহন ও অন্যদিকে বৃষ্টিতে বহু যানবাহন আটকে পড়ায় মহাসড়কে যানজট ভয়াবহ হয়ে উঠে। তবে আমাদের হাইওয়ে পুলিশের দুটি টিম, ফৌজদারহাট ফাঁড়ির টিম যানজট নিরসনে কাজ করছে বলে জানান তিনি ।

তিনি বলেন, দ্রুত এ অবস্থার সমাধান হওয়া দরকার। প্রতিদিন এভাবে যানজট হলে ঈদের ছুটিতে লাখো মানুষ দুর্ভোগে পড়বে। তবে আজ সোমবার দীর্ঘ সময় অচলাবস্থায় থাকার পর এখন ধীরে ধীরে গাড়ি চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা কাজ করছি। দেখি কতক্ষণে সড়ক যানজট মুক্ত করতে পারি।

খালেদ / পোস্টকার্ড;