দৈনিক সময়ের আলো তিন পেরিয়ে চারে, চট্টগ্রামে সময়ের আলোর তৃতীয় বর্ষপূর্তি উদযাপন

দৈনিক সময়ের আলো তিন পেরিয়ে চারে, চট্টগ্রামে সময়ের আলোর তৃতীয় বর্ষপূর্তি উদযাপন
দৈনিক সময়ের আলো তিন পেরিয়ে চারে, চট্টগ্রামে সময়ের আলোর তৃতীয় বর্ষপূর্তি উদযাপন
দৈনিক সময়ের আলো তিন পেরিয়ে চারে, চট্টগ্রামে সময়ের আলোর তৃতীয় বর্ষপূর্তি উদযাপন

‘সত্য প্রকাশে আপসহীন’ স্লোগানকে ধারণ করে তিন পেরিয়ে চার বছরে পা দিলো দৈনিক সময়ের আলো। বুধবার (২ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরের নাসির ট্রেড সেন্টারে অবস্থিত সময়ের আলোর প্রধান কার্যালয়ে ঘরোয়া পরিসরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হয়।

 

সময়ের আলোর প্রধান সম্পাদক মো. রমজানুল হক নিহাদ কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেন। এ সময় প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কমলেশ রায়, নির্বাহী সম্পাদক হারুন উর রশিদসহ জনপ্রিয় দৈনিকটির সিনিয়র সাংবাদিক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাসহ সকলে উপস্থিত ছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ‌‘সত্য প্রকাশে আপসহীন’ স্লোগান নিয়ে ২০১৯ সালের ২ মার্চ সময়ের আলো যাত্র শুরু করে। সময়ের আলো যখন যাত্রা শুরু করে তার পরের বছরই বাংলাদেশ ও সারা বিশ্বকে গ্রাস করে এক মহামারিকাল। করোনা অনেকটাই পর্যুদস্ত করে দেয় বিশ্বকে। দুই বছর পর এখন কিছুটা আশ্বস্ত হচ্ছে মানবজাতি। এই করোনাকালে মানুষের বাঁচার সর্বাত্মক যুদ্ধে সময়ের আলোও অমিত সাহস নিয়ে লড়াই করেছে, চাপ নিয়েছে কিন্তু ভেঙে পড়েনি। সঙ্কটের মধ্য দিয়ে এগিয়ে গেছে স্বাধীন সাংবাদিকতা নিয়ে। পাঠকের কাছে পৌঁছে দিতে চেষ্টা করেছে দেশ-বিদেশের সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ।

এই ‘সংবাদ যুদ্ধে’ অবিচল থাকতে গিয়ে করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন আমাদের দুই সহকর্মী- হুমায়ুন কবির খোকন ও মাহমুদুল হাকিম অপু। প্রাণ হারিয়েছেন হাবীব রহমান। সময়ের আলো পরিবার তাদেরকে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে।

সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিও করোনা অভিঘাতের বাইরে নেই। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে সংবাদমাধ্যমেও। বাংলাদেশের অনেক সংবাদমাধ্যম সীমিত পরিসরে যেতে বাধ্য হয়েছে। চাকরি হারিয়েছেন অনেক সংবাদকর্মী। কিন্তু সময়ের আলোর প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান আমিন মোহাম্মদ গ্রুপ তাদের আর্থিক ক্ষতি স্বীকার করেও পত্রিকাটির প্রকাশনা অব্যাহত রেখেছে। ভর্তুকি দিয়ে সাংবাদিক এবং কর্মীদের নিয়মিত বেতন-ভাতা দিয়ে যাচ্ছে। সংবাদকর্মীদের বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়িয়েছে। এই পৃষ্ঠপোষকতার জন্য দেশের শীর্ষ আবাসন প্রতিষ্ঠান আমিন মোহাম্মদ গ্রুপের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা।

চট্টগ্রামে সময়ের আলোর তৃতীয় বর্ষপূর্তি উদযাপন

চট্টগ্রামে বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদযাপিত হলো দৈনিক সময়ের আলোর তৃতীয় বর্ষপূর্তি। বুধবার (২ মার্চ) দুপুর ১টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে এই বর্ষপূর্তি উদযাপন করা হয়।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) সাবেক মেয়র ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে কেক কাটেন ও বক্তব্য রাখেন। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) বোর্ড সদস্য, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য বিষয়ক সম্পাদক  ও সাবেক রাঙ্গুনিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আলী শাহ কেক কাটায় অংশ নেন। 

বিশিষ্ট লেখক ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক এবং দৈনিক প্রথম আলোর চট্টগ্রাম অফিসের সাবেক বার্তা সম্পাদক মুহাম্মদ সামশুল হক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। দৈনিক সময়ের আলোর চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান মুহাম্মদ ইব্রাহিম খলিল, বিশিষ্ট কলামিষ্ট, রাজনীতিবিদ অধ্যাপক মাসুম চৌধুরী, বিশিষ্ট সমাজ সেবক এম এ সবুর, চট্টগ্রাম মহানগর শ্রমিক লীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব, চট্টগ্রাম মহানগর অটো-টেম্পু শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম খোকন, বিশিষ্ট সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠক নাজিম উদ্দিন চৌধুরী এনেল অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। 

   

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সময়ের আলোর তৃতীয় বর্ষপূতির শুভেচ্ছা জানিয়ে চসিকের সাবেক মেয়র ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, সময়ের আলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী। পত্রিকাটির লেখা দেখলে বুঝা যায়, তার উদ্দেশ্য-আদর্শ। গণমুখী সাংবাদিকতা আর নৈতিক আদর্শের কারণে পত্রিকাটি অল্প সময়ে পাঠকের মন জয় করে নিয়েছে। পত্রিকাটির তৃতীয় বার্ষিকী থেকে তৃতীয় শতবার্ষিকী উদযাপনে এগিয়ে যাবে এটাই কামনা করি। 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চসিকের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, দেশে পত্রিকা অগণিত। কিন্তু মানসম্মত ও নীতি আদর্শের পত্রিকা খুবই কম। মনতুষ্টির সাংবাদিকতা গ্রাস করছে সমাজকে ও রাষ্ট্রকে। মনোজগতের সাংবাদিকতার দিকে সময়ের আলো এগিয়ে যাবে এটাই প্রত্যাশা। সেই সঙ্গে চট্টগ্রাম বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের উন্নয়নের ভার নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন। সময়ের আলোও চট্টগ্রামের কথা বেশি বলবে সেটাই প্রত্যাশা। 

প্রধান বক্তা হিসেবে চউকের বোর্ড সদস্য মুহাম্মদ আলী শাহ বলেন, সাংবাদিকতা এখন ডিজিটালইজড হয়েছে। মুঠোফোনে চোখ রাখলে কত সংবাদ দেখি। কিন্তু সব সংবাদ কি সত্য। আমরা দেখেছি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের মৃত্যুর খবরও। ফলে খবর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে মানুষ। কিন্তু আগে এমন প্রবণতা ছিল না। পত্রিকার পাতায় ভুলক্রমে ন্যুনতম ভুল সংবাদ ছাপা হলে জবাবদিহী করতে হতো। ড্রইংরুম থেকে পত্রিকা যতই হারিয়ে যাচ্ছে সংবাদের গুরুত্বও ততই কমছে। 

সভাপতির বক্তব্যে বিশিষ্ট লেখক ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক মুহাম্মদ সামশুল হক বলেন, দেশের অধিকাংশ সংবাদপত্র তার নীতি আদর্শে অটল নেই। শুধু সংবাদপত্র প্রকাশ করলে তো হয় না। তার সাথে সংশ্লিষ্ট সংবাদকর্মীদের জীবন-জীবিকার দিকেও নজর দেওয়া উচিত। তাহলেই মানসম্মত সাংবাদিকতা সম্ভব।  

স্বাগত বক্তব্যে সময়ের আলোর চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান ইব্রাহিম খলিল বলেন, সময়ের আলো ৩ বছর পূর্তি উদযাপন করছে। বয়সটা নিতান্তই শিশুর। কিন্তু সময়ের আলোর টিম অনেক পরিপক্ক। সময়ের আলো দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে মরণ কামড় দিতে জানে, ভালোকে ভালও বলতে জানে। সময়ের আলো যারা পড়েন তারা সেটা বুঝেন। যারা পড়েন না, তাদের প্রতি অনুরোধ সময়ের আলো পড়ুন, বুঝুন সাথে থাকুন। মজা ও মনোজগত দুটোই খুঁজে পাবেন এটা আমি নিশ্চিত। 

খালেদ /পোস্টকার্ড ;