পাগলীর ফুটফুটে সন্তান প্রসব করল সীতাকুণ্ডের খোলা আকাশের নীচে, কে সন্তানের বাবা ?

পাগলীর ফুটফুটে সন্তান প্রসব করল সীতাকুণ্ডের খোলা আকাশের নীচে, কে সন্তানের বাবা ?

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি ।। 

সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি হাসপাতালের অদূরে মহাসড়কের পাশে খোলা আকাশের নিচে শনিবার রাত পৌনে ৮টার অন্ধকার ও কনকনে শীতের মধ্যেই প্রসব যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন এক পাগলী মা (৩৫)। এ দৃশ্য দেখে সেখানে ভীড় করেন কৌতহূলী পথচারীর দল। এক পর্যায়ে তাদেরই কেউ একজন খবর দেন পুলিশে। খবর পেয়ে ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মো. শফিকুল ইসলাম ছুটে যান সেখানে। কিন্তু ততক্ষণে একটি ফুটফুটে পুত্র সন্তানের জন্ম দেন পাগলীনি। শফিক এ দৃশ্য দেখে পাগলী মা ও তার সন্তানকে হাসপাতালে পাঠাতে বেশ কয়েকটি এম্বুলেন্সকে ফোন করেন। কিন্তু পাগল শুনে কেউই এগিয়ে আসেননি। শেষে নিজের ডিউটির গাড়িতে তুলে নিয়ে পাগলীনি ও তার ছেলেকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করান ইন্সপেক্টর শফিক।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাত আনুমানিক পৌনে ৮টার দিকে উপজেলার ফৌজদারহাট বক্ষব্যাধি হাসপাতালের সামনে এক পাগলী প্রসব যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকেন। এসময় স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দিলে ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম সেখানে যান। ততক্ষনে পাগলীটির একটি ফুটফুটে পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। প্রচন্ড শীতে মা ও শিশু খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকা অবস্থা দেখে ইন্সপেক্টর শফিক স্থানীয়দের মাধ্যমে এক মহিলাকে ডেকে তাকে অনুরোধ করেন পাগলীটিকে সহযোগিতা করতে। পরে তিনি তাদেরকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।

জানতে চাইলে ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর শফিকুল ইসলাম বলেন, ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি হাসপাতালের সামনেই পাগলীটি প্রসব যন্ত্রনায় ছটপট করছিলেন। এ দৃশ্য দেখে লোকজন আমাকে জানায়। কর্তব্যের কারণেই সেখানে ছুটে যাই। গিয়ে দেখি খোলা আকাশের নিচে এই প্রচণ্ড শীতের মধ্যেই তার সন্তানের জন্ম হয়েছে। এ অবস্থার একজন মহিলাকে পরিচ্ছন্ন করাটা পূরুষ হিসেবে আমার পক্ষে কঠিন হওয়ায় আমি স্থানীয় এক মহিলাকে অনুরোধ করে এসব কাজগুলো শেষ করি। তারপর কয়েকটি এম্বুলেন্সকে খবর দিই এই মা ও সন্তানকে চমেকে নিয়ে যাবার জন্য। কিন্তু পাগল শুনে কেউ এগিয়ে আসেনি। শেষে আমি নিজের ডিউটির গাড়ি দিয়েই তাদের চমেকে নিয়ে যাই। রাতে সাড়ে ৮টায় তাদের চমেকে ভর্তি করায়। তারা বর্তমানে ৩২নং ওয়ার্ডে সুস্থ এবং চিকিৎসাধীন আছেন।

তিনি বলেন, একজন অসহায় মহিলার পাশে দাঁড়াতে পেরে ভালো লাগছে। তার সন্তানটি সুস্থ থাকলেই কষ্ট সার্থক হবে।

এদিকে এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে পাগলীটি মা হলেও এই সন্তানের বাবা কে? তার ভবিষ্যত কি হবে? এই পাগল মা কি আদৌ সন্তান লালন করবেন? এমন অসংখ্য প্রশ্ন এলাকার মানুষের মাঝে। এসব ব্যাপারে কেউই নিশ্চিত করে কিছু ভাবতে না পারলেও সকলেই চান সম্ভব হলে পাগলীনি মায়ের বুকেই থাকুক তার ফুটফুটে সন্তান। তাহলে হয়ত সন্তানের মুখের পানে চেয়েও এই পাগলীর মধ্যে সুস্থতা ফিরে আসতে পারে-এমনটাও মনে করেন কেউ কেউ।