ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুলে’র আঘাতের আগেই আবহাওয়া অধিদপ্তর সাইট আহত!

ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুলে’র আঘাতের আগেই আবহাওয়া অধিদপ্তর সাইট আহত!

মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল । শনিবার সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত নাগাদ পশ্চিমবঙ্গ-খুলনা উপকূল (সুন্দরবনের কাছ দিয়ে) অতিক্রম করতে পারে ঘূর্ণিঝড়টি। ঝূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় দমকা/ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে।

কিন্তু ঘূর্ণিঝড় 'বুলবুল' উপকূলে আঘাত হানার আগেই আহত  হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের (বিএমডি) ওয়েবসাইটটি। ঘূর্ণিঝড়টি 'অতি প্রবল' রূপ নিতেই কারিগরি জটিলতায় পড়ে  এ সময়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠা ওয়েবসাইটটি। শুক্রবার এ জটিলতায় ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত তথ্য হালনাগাদ করা হয়নি। আজ শনিবারও ওয়েবসাইটে একটি ইংলিশ নোটিশে বিশেষ আবহাওয়ার নোটিশ টাঙ্গিয়েই যেন দায় সেরেছে এ সময়ে গুরুত্বপুর্ণ এ ওয়েবসাইটটি।

এরকম কাজ এবারই যে প্রথম তা কিন্তু নয় গত মে মাসে ঘূর্ণিঝড় ফনীর সময়ও কারিগরি জটিলতায় পড়েছিল বিএমডির ওয়েবসাইট।

এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সমালোচনার মধ্যেই পাল্টা-পাল্টি বক্তব্য এসেছে আবহাওয়া অধিদদপ্তর ও বিটিসিএলের পক্ষ থেকে। জটিলতা আসলে কোথায়, সে বিষয়টি কোনো পক্ষই খোলাসা করেনি।  অথচ এরকম জরুরি সময়ে সেই তথ্য ওয়েবসাইটে দেখাতে পারছিল না আবহাওয়া অধিদপ্তর। বিকাল পর্যন্ত ওয়েবসাইটের টিকারে ৩ নম্বর সংকেতের কথা দেখানো হচ্ছিল। বুলেটিন দেখতে ক্লিক করলে দেখানো হচ্ছিল আগের রাতের পুরনো বুলেটিন।

এমনকি ‘বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের’ ফেইসবুক পেইজেও দুপুর পর্যন্ত ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল আগের বিজ্ঞপ্তি।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত আশরাফ হক সময়ের আলোকে বলেন, আবহাওয়া অধিদপ্তরের এই জটিলতা  নতুন কি? শুক্রবার সকাল থেকে টেলিভিশনের খবরে হুঁশিয়ারি সংকেত দেখে তারা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি। পরে বিস্তারিত জানার অভিপ্রায়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে বারবার ঢুঁ মেরেও আমি  হালনাগাদ তথ্য পাইনি। উল্টো দেখি কঠিন ইংলিশের একটা নোটিশ! এটা কি আমাদের মত সাধারণ মানুষদের পক্ষে বোঝা সম্ভব? তারা কি পারতো না একটা সহজ বাংলায় লিখাগুলো লিখতে?

আবুল হাসান নামের একজন ফেসবুকে লিখেছেন, ফোন দিলে কোনো সাউন্ড রেসপন্স আসে না। মানুষের যখন আবহাওয়ার সংবাদ দরকার তখন আপনারা সেবা দিতে পারেন না। তহলে কি দরকার এই ভাঁওতাবাজির?

জাকির আহমেদ সোহাগ নামের একজন মন্তব্য করেন, ধান্দাবাজি করবেন না মানুষের সাথে, অনেকবার ট্রাই করার পর কল যায়, কিন্তু কোনো আওয়াজ আসে না।মানুষকে মিথ্যা আশ্বাস দিবেন না দয়া করে ।

শুক্রবার দুপুরে দেখা যায়, অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটের টিকারে পুরোনো সংকেতের তথ্য দেখানো হচ্ছিল। 'বুলেটিন দেখতে ক্লিক করুন'- লিংকে ক্লিক করেও হালনাগাদ তথ্য পাওয়া যায়নি। এমনকি আবহাওয়া অধিদপ্তরের ফেসবুক পেজেও সঠিক সময়ে তথ্য হালনাগাদ হয়নি।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে আবহাওয়াবিদ আবদুল হামিদ জানান, শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টায় ওয়েবসাইটে তথ্য হালনাগাদ করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু তার এ বক্তব্যর পর ৫ টার  দিকে আবারও সাইটে গিয়ে দেখা যায় মুল সাইটে শুধু ঐ এক ইংলিশে দেয়া বিশেষ বুলেটিনই ঝুলছে!

 

অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটের বিভ্রাটের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. শাহাদাৎ হোসেন ওয়েবসাইটেও ইউজার বেড়েছে, তাতে হয়ত ঝামেলা রয়েছে।
সুত্রঃ সময়ের আলো