মানসিকভাবে অত্যাচার করত, ট্র্যাপে পড়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন ত্ব-হা !

মানসিকভাবে অত্যাচার করত, ট্র্যাপে পড়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন ত্ব-হা !
মানসিকভাবে অত্যাচার করত, ট্র্যাপে পড়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন ত্ব-হা !

পোস্টকার্ড ডেস্ক।।

ক্রিকেটার থেকে ধর্মীয় আলোচক হওয়া আবু ত্ব-হা মোহাম্মদ আদনানের দ্বিতীয় বিয়ের প্রসঙ্গ এলো তিনি উধাও বা আত্মগোপনে যাবার পর। যেমনি হেফাজত নেতা মামুনুল হকের রিসোর্টে অবরুদ্ধ সঙ্গিনীকে দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করার পর তার কথিত দ্বিতীয় বিয়ের প্রসঙ্গ সামনে আসে।

এর আগে তার দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি কেউ জানতো না। এমনকি তার প্রথম স্ত্রীর পরিবারও। আদনানের মা আজেদা বেগম বিয়ের কথাটি জানতেন তাও অনেক পরে। জানার পর ছেলে দ্বিতীয় বিয়ের খবর গোপন রেখেছিলেন তিনি।

ত্ব-হার মা আজেদা বেগম বলেন, ‘বিয়ের খবর আমি কিছুদিন পরে পাইছি। আমি শুনেছি ত্ব-হাকে ট্র্যাপে ফেলানো হয়েছে। খুব মানসিক অত্যাচার করত, ডিস্টার্ব করত। খুবই অশান্তিতে ছিল ত্ব-হা।’

১০ জুন ত্ব-হা ঢাকায় আসার পথে নিখোঁজ হওয়ার দাবি প্রথম সামনে আনেন তার স্ত্রী পরিচয়ে সাবিকুন্নাহার সারা। তখনও জানা যায়নি তিনি ত্ব-হার দ্বিতীয় স্ত্রী।

স্বামীকে খুঁজে পেতে সাবিকুন্নাহারের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আবেদন, বেসরকারি টেলিভিশনে দেওয়া দীর্ঘ সাক্ষাৎকার এবং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সংবাদ সম্মেলন রাখা আবেগঘন বক্তব্য- ‘ত্ব-হাকে আমার কাছে ফিরিয়ে দেন, না হলে তার কাছে আমাকে নিয়ে যান’ পায় বিশেষ গুরুত্ব। রীতিমতো ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তখনই চমকে ওঠেন ত্ব-হার পরিবারের লোকজন। কারণ পরিবারের অনেকেই এই সাবিকুন্নাহারকে বিয়ে করার খবর জানতেন না।

ত্ব-হার মামা আমিনুল ইসলাম (মা-মামা একই বাড়িতে থাকেন) বলেন, ‘আমরা বিয়ের খবর জানতাম না। এই ঘটনার (নিখোঁজ) পর মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারি, সে বিয়ে করেছে। এর বেশি কিছুই জানি না।’

ত্ব-হার প্রথম স্ত্রী আবিদা নূরের বাবা আজহারুল ইসলাম মণ্ডলও বললেন একই কথা। তিনি বলেন, ‘আমি এই ঘটনাগুলো হবার পর ফেসবুক আর মানুষের কাছে শুনতেছি যে, জামাই ঢাকাতে বিয়ে করছে। এর আগে আমি জানি না।’

আবিদার সঙ্গে ত্ব-হার বিয়ে হয় পারিবারিকভাবে। দেড় মাস আগে আবিদা একটি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। এর আগ পর্যন্ত রংপুরের শালবনের চেয়ারম্যানের গলিতে ভাড়া বাসায় থাকতেন স্বামী-স্ত্রী। তবে এখন আবহাওয়া অফিসের কাছে বাবার বাড়িতে আছেন।

ত্ব-হার মা থাকেন নগরীর সেন্ট্রাল রোডে আহলে হাদিস মসজিদের পাশে পারিবারিক বাসভবনে। আর শুক্রবার রাতে আদালত থেকে ছাড়া পেয়ে ত্ব-হা ওঠেন মায়ের কাছেই।

১০ জুন ঢাকায় আসার কথা ছিল ত্ব-হার। দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিকুন্নাহার সারা দাবি করেছেন, তার কাছেই আসছিলেন তিনি। এই অন্তর্ধান নিয়ে নানা গুঞ্জনের মধ্যে আট দিন পর ১৮ জুন খোঁজ মেলে ত্ব-হার। তিনি প্রথম স্ত্রীর বাবার বাড়ি যাওয়ার সময় স্থানীয়রা দেখে জানায় পুলিশকে।

পরে পুলিশ গিয়ে নিয়ে আসে ত্ব-হাকে। তার বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ব্যক্তিগত কারণে তিনি গাইবান্ধায় একটি বাড়িতে আত্মগোপন করেছিলেন। সেই বাড়িটি ত্ব-হার বাল্যবন্ধু সিয়াম ইবনে শরীফের বাবার। গৃহকর্তা শরীফ খান মারা গেছেন বছর দুয়েক আগে। সিয়াম চাকরি করেন রংপুরে; বোনের বিয়ে হয়েছে ঢাকায়। সেই বাসায় একাই থাকেন সিয়ামের মা নিশাত নাহার।

তিনি জানান, ত্ব-হা আগে তাদের বাসায় একা থেকেছেন। এবার তিন সঙ্গীসহ এসে বলেছেন, দুই ব্যক্তি তাকে ফলো করছে। এ কারণে বাসায় থাকবেন। তাই তিনি সন্দেহ করেননি।

সেই বাসার টেলিভিশন নষ্ট, নিশাত নাহার স্মার্টফোনও ব্যবহার করেন না। ফলে ত্ব-হাকে নিয়ে কী হচ্ছে, সেটি তিনি জানতে পারেননি। তবে বৃহস্পতিবার রাতে তার মেয়ের ফোনে জানতে পারেন সবকিছু। আর তখন ত্ব-হাকে বাসায় যেতে বলেন।

ত্ব-হা শুক্রবার রংপুরে ফিরে যান প্রথম স্ত্রী আবিদার বাসায়। আর দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিকুন্নাহার সারার সঙ্গে দিনভর চেষ্টা করে যোগাযোগ করতে পারেন রাতে।

সারার বক্তব্য, আদালতে আইনজীবী দুই স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলার প্রসঙ্গ তোলা এবং মায়ের জিম্মায় ত্ব-হাকে বাড়ি পাঠানোর পর এটা স্পষ্ট হয় যে, ত্রিভুজ সম্পর্কের সমীকরণ কিছুটা জটিল।

ত্ব-হার আইনজীবী সোলায়মান আহমেদ বলেন, ‘ত্ব-হা আদালতে ১৬৪ ধারায় জানিয়েছেন, উনি গাইবান্ধায় ছিলেন। তিনি নিজেই পারিবারিক অশান্তির কারণে নিখোঁজ ছিলেন। শুক্রবার প্রথম স্ত্রীর (আবিদা নূর) বাবার বাড়িতে আসছিলেন। উনার সঙ্গীরাও সঙ্গে ছিলেন। যেহেতু দুই স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলা ছিল, তাই তাকে দেয়া হয়েছে তার মায়ের জিম্মায় ।’