মালয়েশিয়ায় লাখ লাখ টাকা আদায় করা হচ্ছে স্বদেশিদের জিম্মি করে , বাংলাদেশিরাই আতঙ্ক বাংলাদেশিদের
মালয়েশিয়া সংবাদদাতা ।।
কঠোর পরিশ্রম করে সৎ পথে উপার্জন করছে। আবার কেউ ভিনদেশে এসে ভয়ঙ্কর সব অপরাধের মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। স্বদেশিদের জিম্মি করে লাখ লাখ টাকা আদায়ের কারণে অস্থির হয়ে উঠছে প্রবাস। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম শ্রমবাজার মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিদের জন্য ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে বাংলাদেশিরাই। দীর্ঘদিন মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত একশ্রেণির বাংলাদেশিরা স্থানীয় নাগরিকদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে চালাচ্ছে ভয়ঙ্কর নানা কান্ড। বেশিরভাগ অপরাধীরাই জড়িয়ে পড়েছে কিডন্যাপে। অপরিচিত এবং পরিচিতিদের মাধ্যমে সখ্যতা গড়ে সময় সুযোগ বুঝে কিডন্যাপের মাধ্যমে চাঁদা আদায় তাদের মূল পেশা।
চলতি বছরেই দুই বাংলাদেশি ক্রসফায়ারে মালয়েশিয়া পুলিশের হাতে নিহত হয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ- বাংলাদেশিদের জিম্মি করে অর্থ আদায়সহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ড পরিচালনা করত তারা। চলতি বছরে এমন কয়েকটি ঘটনার কারণে বিচারের মুখোমুখি হয়েছে কয়েকজন বাংলাদেশিও। এ ছাড়াও এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে একাধিক চাঁদাবাজ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রবাসী বাংলাদেশি এই প্রতিবেদককে জানান, স্থানীয় নাগরিকদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কিছু বাংলাদেশি এহেন কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েছে। অপরিচিত বাংলাদেশিদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে তাদের সমস্ত খোঁজখবর নিয়ে সুযোগ বুঝে তাদেরকে নিমন্ত্রণের মাধ্যমে অপহরণ করা হয়। অপহরণের এক পর্যায়ে বাংলাদেশ তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করাই তাদের মূল পেশা। ইতোমধ্যে মালয়েশিয়ার একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা এই চক্রকে ধরতে মাঠে নেমেছে বলে জানা গেছে। বিভিন্ন সময়ে অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের জবানবন্দির ওপর ভিত্তি করে গ্রেফতার করা হয়েছে অনেক বাংলাদেশিদের।
এর আগে মালয়েশিয়ার তামান মুডুন, বাতু ৯ চেরাচ এলাকার একটি বাড়িতে অপহৃত এক বাংলাদেশিকে উদ্ধারের সময় পুলিশের অভিযানে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুজন অপহরণকারী বাংলাদেশি মারা যায় বলে দাবি করেছে পুলিশ। পুলিশের গুলিতে নিহত দুই বাংলাদেশির বিরুদ্ধে ১৩টি অভিযোগ ছিল বলে জানায় পুলিশ। পুলিশের বরাত দিয়ে মালয়েশিয়ার একাধিক গণমাধ্যম সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
কাজাং ওসিপিডি’র সহকারী কমিশনার আহমেদ জাফির ইউসুফ জানান, গত ৮ ফেব্রুয়ারি অপহৃত হওয়া এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করার সময় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই বাংলাদেশি নিহত হয়। ঘটনাস্থল থেকে একটি ৯এমএম পিস্তল এবং একটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে। তবে নিহত ব্যক্তিদের কাছে কোনো ধরনের ডকুমেন্ট পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় একটি মামলা করা হয়েছে। ৩০৭ ধারায় পেনাল কোর্টে মামলাটির তদন্ত চলছে। নিহত ২ বাংলাদেশির বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন দেশের শ্রমিকদের অপহরণ করে চাঁদাবাজির অভিযোগ ছিল। মুক্তিপণের দাবিতে এই পর্যন্ত তারা মালাই রিংগিত ২ দশমিক ৫ মিলিয়ন অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানায় পুলিশ।