যে হারে পাহাড় কাটা হচ্ছে তাতে আগামী ১০ বছরের মধ্যে পাহাড়শূন্য হবে চট্টগ্রাম
পোস্টকার্ড ডেস্ক ।।
চট্টগ্রামের যত্রতত্র যেভাবে পাহাড় কাটা হচ্ছে তাতে আগামী ১০ বছরের মধ্যে চট্টগ্রাম শহর পাহাড়শূন্য হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতারা। তাদের মতে, যে হারে নগরে পাহাড় কাটা হচ্ছে, তাতে আগামী ১০ বছরে কোনো পাহাড়ই অবশিষ্ট থাকবে না এই শহরে। একই সাথে পাহাড় কেটে করা উন্নয়ন ডেকে আনবে অনিবার্য বিপর্যয়
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টায় নগরীর জামালখানস্থ চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে পাহাড়কাটা বন্ধ ও সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা করার দাবিতে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, ভোরের আলোসহ বিভিন্ন পরিবেশবাদী ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা।
এতে বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে চট্টগ্রাম অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ শহর। এই শহরে নির্বিচারে পাহাড় কাটার ফলে পরিবেশ ধ্বংস হয়েছে। একইসাথে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য আরও ঝুঁকিপূর্ণ হচ্ছে চট্টগ্রাম। অবিলম্বে পাহাড়কাটা বন্ধ করা না গেলে আগামী ১০ বছরে কোনো পাহাড় অক্ষত থাকবে না।
বক্তারা আরও বলেন, আমাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ বার্ন এবং প্লাস্টিক সার্জারির ইউনিট দরকার। তবে এটি পাহাড় কেটে তৈরি করা উচিত নয়। চমেক ক্যাম্পাসে অনেক খোলা জায়গা রয়েছে যেখানে বার্ন ইউনিট তৈরি করা যেতে পারে।
এসময় বক্তারা পরিবেশ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনসহ সরকারি প্রতিষ্ঠানকে পাহাড়কাটা বন্ধ ও নগরকে বাঁচাতে বিদ্যমান আইন বাস্তবায়নে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
সাংবাদিক ও পরিবেশকর্মী অলিউর রহমানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদের ডেপুটি এডিটর কাজী আবুল মনসুর, প্রবীণ নারী নেত্রী জেসমিন সুলতানা পারু, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সভাপতি অধ্যাপক ইদ্রিস আলী, সাধারণ সম্পাদক এসএম বকতিয়ার, বাপার সমন্বয়ক হাসান মারুফ রুমি, গণসংহতি আন্দোলনের অধ্যাপক মঞ্জুরুল করিম, ভোরের কাগজের সাংবাদিক প্রীতম দাস ও বেলা চট্টগ্রাম কার্যালয়ের সমন্বয়ক মনিরা পারভীন প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, নগরীর গোয়াছিবাগান এলাকায় চীনের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় একটি বিশেষায়িত বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট স্থাপন করছে চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য পাহাড় কাটার অনুমতি চেয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর বরাবর আবেদন করা হয়। কিন্তু অনুমোদনের আগেই একটি বড় পাহাড়ের ৯০ ডিগ্রী আঙ্গেলে ১০০ ফুটের মতো কেটে সাবাড় করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পাহাড় কাটার পাশাপাশি সেখানে শতবর্ষী বৃক্ষও কেটে ফেলা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত সোমবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে পাহাড় কাটার জন্য চমেক কর্তৃপক্ষকে নোটিশ দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) চট্টগ্রামের একটি প্রতিনিধি দলও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পরবর্তীতে বেলা পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগরকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
খালেদ / পোস্টকার্ড ;