সীতাকুণ্ডে চলছে পরীক্ষা ও ছাড়পত্র ছাড়াই গবাদিপশু জবাই, মরা গরুর মাংসও বিক্রি হয়!

সীতাকুণ্ডে চলছে পরীক্ষা ও ছাড়পত্র ছাড়াই গবাদিপশু জবাই, মরা গরুর মাংসও বিক্রি হয়!
সীতাকুণ্ডে চলছে পরীক্ষা ও ছাড়পত্র ছাড়াই গবাদিপশু জবাই, মরা গরুর মাংসও বিক্রি হয়!

পোস্টকার্ড নিউজ ।।

সীতাকুণ্ড পৌরসভাসহ ১০টি ইউনিয়নের বিভিন্ন হাট-বাজারে গবাদি পশুর মাংস বিক্রেতারা স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ডাক্তারি পরীক্ষা ও ছাড়পত্র ছাড়াই যত্রতত্র পশু জবাই করে যাচ্ছেন। এতে রুগ্ন ও বিভিন্ন রোগের আক্রান্ত গবাদিপশু গরু, ছাগল ও গোপনে জবাই করে মাংস বিক্রি করায় স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছেন স্থানীয়রা ।

জানা যায়, সীতাকুণ্ড পৌরসভা বাজারসহ উপজেলা বিভিন্ন ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক হাট-বাজারে গরু ও ছাগলের মাংস বিক্রয় করা হয়। সেসব স্থানে ভোর হওয়ার আগেই লোকচক্ষুর আড়ালে রোগাক্রান্ত ও চোরাই গরু ও মরা গরু এবং ছাগল জবাই করে সেসব মাংস বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। ইতিপূর্বে বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের শুকলাল হাট-বাজারে মরা গরুর মাংস বিক্রির অপরাধে রঙ্গিপাড়ার কসাইদেরকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জরিমানাও করেছিলেন। তাছাড়া বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস পাইকারি ৬৫০ টাকা ও খুচরা ৭০০ টাকা থেকে ৭৫০ টাকা পর্যন্ত উচ্চমূল্যে বিক্রি করছে। তবে জবাই করা পশুর শরীরে কোন রোগবালাই রয়েছে কিনা এমন কোন ধারনাও রাখেন না ক্রেতা / বিক্রেতারা।

একদিকে যেমন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নীরব ভূমিকা, তেমনি জনসচেনতার অভাবে সুযোগ নিচ্ছে মাংস বিক্রেতারা । এতে প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ ক্রেতারা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিন প্রায় ২০-২৫ টির ও বেশি গরু ও ১০-১৫ টি ছাগল জবাই করা হচ্ছে।

বিভিন্ন বাজারে সাপ্তাহিক হাট ও গবাদিপশু জবাই করে মাংস বিক্রয় করা হয়। জবাই করার আগে গবাদি পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা দায়িত্বে একজন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও এ নিয়ম মানা হচ্ছে না। ফলে যে যার ইচ্ছামতো লোকচক্ষুর আড়ালে পরীক্ষাও ছাড়পত্র ছাড়াই গবাদি পশু জবাই করে যাচ্ছে।

ভাটিয়ারীর বাসিন্দা দিদারুল আলম বলেন, পশু অসুস্থ নাকি সুস্থ ছিল আমরা তা জানতে পারি না। যদিও নিয়ম অনুযায়ী পশু জবাই করার আগে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ছাড়পত্র ও পশুর শরীরে সিল থাকার কথা। কিন্তু এর একটিও নেই গোশত বিক্রিতার কাছে।

অন্য দিকে কুমিরা ইউনিয়নের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন তদারকি না থাকায় লোকজন কি খাচ্ছে তা বুঝার উপায় নেই। ইতিপূর্বে বাড়বকুণ্ড শুকলাল হাট বাজারে মরা গরুর মাংস ও বিক্রি করছিল কসাইরা।

এদিকে গবাদিপশুর ছাড়পত্র ও পশুর গায়ে সিল দেওয়া হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন গোশত বিক্রেতা জানান, বেশির ভাগ গুরু ভাল থাকাই ছাড়পত্র নেওয়া হয় না। তাছাড়া আমরা সবসময় ভালো গরু ছাগল জবাই করে থাকি। কারণ জেনে শুনে তো কাউকে আমরা রোগআক্রান্ত পশুর গোশত খাওয়াতে চায় না। তবে গত এক মাসের মধ্যে কোন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কাছ থেকে কোন গবাদিপশুকে পরীক্ষা করিয়ে ছাড়পত্র এনেছি কিনা এমন প্রশ্নের সদুত্তর তারা দিতে পারেননি।

সীতাকুণ্ডে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তাহমিনা আরজুর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের একজন অফিসার পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজে থাকার কথা। কিন্তু আমাদের জনবল সংকট রয়েছে। তাছাড়া স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়া গবাদি পশুর মাংস খাওয়া ঠিক না। তবে রোগাক্রান্ত কোন পশু যাতে জবাই করে মাংস বিক্রি করতে না পারে সেদিকে আমরা নজর রাখছি।

খালেদ / পোস্টকার্ড;