সীতাকুণ্ড উপজেলা পরিবার পরিকল্পনার অধিদপ্তর ভারপ্রাপ্ত ও শূন্য পদ নিয়েই চলছে 

সীতাকুণ্ড উপজেলা পরিবার পরিকল্পনার অধিদপ্তর ভারপ্রাপ্ত ও শূন্য পদ নিয়েই চলছে 

পোস্টকার্ড প্রতিবেদক ।।

১৯৭৫ সালে বাংলাদেশে পরিবার পরিকল্পনার যাত্রা শুরু হয় “দুটি সন্তানের বেশি নয়,একটি হলে ভালো হয়” এই উপপাদ্যকে মুখ্য করে মূলত মা ও শিশু সুরক্ষা নিশ্চিত করণ হচ্ছে পরিবার পরিকল্পনার কাজ। পরবর্তীতে কিশোরী প্রজনন স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টিও যুক্ত করা হয়। তবে সীতাকুণ্ড উপজেলায় মা ও শিশু স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও কিশোরী প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হচ্ছে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর। যার কারণ হিসেবে দীর্ঘদিন উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার পদসহ বিভিন্ন পদের শূণ্যতাকে চিহ্নিত  করা হচ্ছে। সীতাকুণ্ড উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ এই দপ্তরে বছরের পর বছর নেই কোন পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা।গুরুত্বপূর্ণ এই পদটি চলছে ভারপ্রাপ্ত দিয়েই।সীতাকুণ্ড উপজেলায় প্রতি ইউনিয়নে একটি স্যাটেলাইট ক্লিনিক ও ওয়ার্ডে একটি করে কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। আর এসব ক্লিনিকে বিভিন্ন পদে জনবল সংকট রয়েছে। শুধু কর্মকর্তার পদ নয় দপ্তরের ৬২ টি পদের মধ্যে ১৬ টি শূণ্য রয়েছে বর্তমানে।তন্মধ্যে ১০ জন ইউনিয়ন পরিদর্শকের মধ্যে ৯ জন ও ৬২ জন মাঠ কর্মীর মধ্যে ৪৬ জন কর্মরত আছেন। এসব পদে দীর্ঘ দিন নেই কোন নিয়োগ।যার ফলে জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্মরতদের। অন্যদিকে কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সীতাকুণ্ডবাসী। মুরাদপুর ইউনিয়নসহ কয়েকটি ইউনিয়নে জনবল সংকটের কারণে স্বাস্থ্য সেবার ঘাটতিসহ মাসিক বা পাক্ষিক উঠান বৈঠক ও পরিদর্শনও হচ্ছে না ঠিকমতো। এছাড়াও ক্লিনিকগুলোতে নিয়মিত পরিদর্শক না আসায় সেবা পাচ্ছেন না গ্রামবাসী। সরেজমিনে তথ্য নিয়ে দেখা গেছে এমনও গ্রাম আছে যেখানে পরিবার পরিকল্পনার কোন পরিদর্শক মাসের পর মাস ভিজিটে আসেনি।

সীতাকুণ্ডের স্থানীয় কয়েকজন ভুক্তভোগী বলেন,গর্ভবতী অবস্থায় পরিবার পরিকল্পনার কোন সাহায্য তারা পাচ্ছেন না।সামান্য বিষয়েও ছুটে যেতে হচ্ছে বেসরকারি হাসপাতালে, যার দরুণ অতিরিক্ত ব্যয় বহন করতে হচ্ছে জনগণকে।গ্রামে অবস্থিত ক্লিনিকগুলোতে ঔষধ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপত্র না পাওয়ার অভিযোগও কম নয়।উপজেলায় পরিবার পরিকল্পনার সেবার অপর্যাপ্ততার ফলে সন্তান সম্ভবা মহিলা, শিশু সুরক্ষা ও কিশোরী প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা এখন বেসরকারি হাসপাতাল মুখী হয়ে গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবাসী বলেন, আমার স্ত্রী গর্ভবতী অবস্থায় বারবার বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে যেতে হয়েছে। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কারো চেহারা আমরা দেখিনি। তিনি আরো বলেন, পরিবার পরিকল্পনার সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সীতাকুণ্ডের জনগণ। পূর্ণ জনবল থাকলে জনগণ কাঙ্খিত সেবা পাবে।

এ বিষয়ে সীতাকুণ্ড পৌরসদর ইউনিয়ন পরিদর্শক হারুন উর রশীদ বলেন, আমরা নিয়মিত দায়িত্ব পালনে আন্তরিক আছি। আমার ইউনিয়নে মানুষকে সেবা দেওয়ার জন্য সদা প্রস্তুুত আছি।একটি ওয়ার্ডে সহকারী পরিদর্শিকা পদ শূন্য আছে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে সীতাকুণ্ড উপজেলা পরিবার  পরিকল্পনা অধিদপ্তরের হেলথ এ্যাসিসটেন্ট পলাশ  বলেন,৬২ জনের মধ্যে ৪৬ জন দায়িত্বে আছেন।বাকি পদগুলো শূন্য আছে।আমাদের কর্মকতর্তার পদটিও খালি।

এ বিষয়ে সীতাকুণ্ড উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডাঃ নাজমুল বলেন,আমি মূলত মীরসরাইয়ের কর্মকর্তা। সীতাকুণ্ডে পদটি শূন্য থাকায় আমি দায়িত্ব পালন করছি। আমি শুধু গুরুত্বপূর্ণ দিবসে অনুষ্ঠানাদি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করি এবং নিয়মিত তদারকি করি। এসময় তিনি দপ্তরের বিভিন্ন পদ শূন্য ও ভবন জরাজীর্ণের  কথাও  জানান। তিনি আরো বলেন সরকারি নিয়োগের দীর্ঘ সূত্রিতার কারণে দীর্ঘদিন নিয়োগ নেই।একবার নিয়োগ দিলে সবগুলো পদ পূরণ হয়না। তাছাড়া নিয়োগ সময়সাপেক্ষ বিষয়।

ভবন সংস্কার ও আধুনিকায়নের বিষয়ে তিনি বলেন,সারাদেশে বিভিন্ন সময় সংস্কারের কাজ করা হয়। একবার একটি সংস্কার করা হয় বলে পর্যায়ক্রমে যখন আসে তখন সংস্কার হবে।