সীতাকুণ্ড ভূমি অফিসে চলছে নামজারির নামে চাঁদাবাজি!

সীতাকুণ্ড ভূমি অফিসে চলছে নামজারির নামে চাঁদাবাজি!
সীতাকুণ্ড ভূমি অফিসে চলছে নামজারির নামে চাঁদাবাজি!

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।।

কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী নাহিদা আক্তার। এতিম, হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান। সে তার মায়ের উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত জমি সীতাকুণ্ড উপজেলা ভূমি অফিসে নামজারি করতে এসে পড়েন চরম বিপাকে ।

নামজারি আবেদনটি ৩শ টাকা ঘুষ দিয়ে জমা দিলেও তহসিল অফিসের প্রস্তাবের জন্য নাহিদাকে ঘুষ দিতে হয় আরও ৩০ হাজার টাকা। এরপর দীর্ঘ ভােগান্তির পর নামজারি ফাইলটি উপজেলা ভূমি অফিসে প্রেরণ করা হলেও এবার এসিল্যান্ডের নাজির সাহেদুল ইসলামের ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবির মুখে পড়েন নাহিদা আক্তার। ঘুষের এমন দাবি মেটাতে ব্যর্থ হলে খারিজ হয়ে যায় তার নামজারি আবেদনটি। এমন অভিযােগ করেন ভুক্তোভােগী শিক্ষার্থী নাহিদা আক্তার। পরবর্তীতে উপায়ন্তর না পেয়ে গত ২০ জুলাই চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযােগ দায়ের করেন ওই শিক্ষার্থী।

অভিযােগের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সীতাকুণ্ডের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাে. আশরাফুল আলম নাহিদা আক্তারকে তার দপ্তরে হাজির হতে বলেন। নাহিদা আক্তার গত ১২ সেপ্টেম্বর হাজির হয়ে নাজির সাহেদের ৫০ হাজার টাকা ঘুষ চাওয়ার বিষয়টি এসিল্যান্ডের কাছে উপস্থাপন করেন। এসময় নাহিদা আক্তার ঘুষ দাবির বিষয়টি প্রমাণ করতে নাজির সাহেদকে তার সামনে মুখােমুখি করতে বললেও তা ভ্রুক্ষেপ করেননি এসিল্যান্ড।

শুধু নাহিদা আক্তার না এসিল্যান্ডের নাজির সাহেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ঘুষ লেনদেনের অভিযােগ নতুন নয়। দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা ঘুষ বাণিজ্য অনুসন্ধানে ওঠে এসেছে নাজির সাহেদের ঘুষকান্ডের বিভিন্ন চিত্র।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সীতাকুণ্ড উপজেলা ভূমি অফিসে কেবল নামজারির আবেদন জমা দিতেই অনলাইন ফি বাবদ ৩০০ টাকা দিতে হয়। অভিযােগ আছে এ টাকা দীর্ঘ দিন সাহেদ নিজ হাতে গ্রহণ করলেও বর্তমানে অজগর আলী নামে এক লোককে দিয়ে গ্রহণ করান। গত এক বছরে প্রায় ৮ হাজার নামজারী আবেদন জমা পড়েছে এ ভূমি অফিসে। সে হিসেবে কেবল এ খাত থেকেই তারা গ্রাহক থেকে নিয়েছেন প্রায় ২৪ লক্ষ টাকা। এরপর নামজারি আবেদনটি এসিল্যান্ড গ্রহণ করলে ফাইল চলে যায় সংশ্লিষ্ট তহসিল অফিসে। সেখান থেকে প্রস্তাব প্রেরণ করা হলে ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার এবং কানুনগাের রিপাের্টের পর এসিল্যান্ডের সামনে উপস্থাপনের জন্য ফাইল পুনরায় চলে আসে নাজির সাহেদুল ইসলামের টেবিলে। সেবাগ্রহীতারা আর টাকা ছাড়া সেবা পাননা। শুরু হয়ে যায় এই নাজির সাহেদুল ইসলামের ভেলকিবাজি। টাকা ছাড়া উদ্ধার হওয়ার উপায় নেয় । 

সংশ্লিষ্টদের অভিযােগ, নামজারি থেকে নামজারি ৩ হাজার, বিএস থেকে নামজারি ৫ হাজার, আবেদনকারীর প্রকাশ নামের জন্য প্রত্যয়নপত্র থাকলে ১০ হাজার। এভাবে একদা বসিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেন সাহেদ। এমনকি এ টাকা তিনি গ্রাহকদের কাছ থেকে নামজারি অনুমােনের আগে অগ্রীম গ্রহণ করেন। আর এসবই করেন তিনি এসিল্যান্ডের দোহাই দিয়ে। তার সাফ কথা "স্যার ব্যস্ত, ফাইলে সই করেন না, গিয়ে দেখেন স্যারের রুমে কত ফাইল জমা হয়ে আছে। পারলে আপনারা নিজে গিয়ে ফাইল অনুমােদন করিয়ে নেন।" পরে দেখা যায় নির্দিষ্ট অংকের টাকা প্রদান করলে ঠিকই ফাইল অনুমােদন হয়ে যায়।

তবে অভিযোগ আছে, সীতাকুণ্ডে গেঁড়ে বসা প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠান /প্রভাবশালী ব্যাক্তি বর্তমানে বেশী সুবিধা নিচ্ছেন নাজির সাহেদুল ইসলামের কাছ থেকে। ওদের কারণে বেশী ক্রতিগ্রস্ত হচ্ছেন বৈধ জায়গার মালিকরা । 

অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত এক বছরে বর্তমান এসিল্যান্ড আশরাফুল আলম প্রায় ৭ হাজার নামজারি অনুমােদন দিয়েছেন। সে হিসেবে ডুপ্লিকেট কার্বন রসিদ (ডিসিআর) এর ১১শ পঞ্চাশ টাকা বাদে প্রতি নামজারিতে গড়ে ৩ হাজার টাকা করে প্রায় ২ কোটি ১০ লক্ষ টাকা গ্রাহকের পকেট থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন এই নাজির সাহেদ চক্রটি। এখানেই শেষ নয়। গত এক বছরে পােড়া সনের (১৯৬২ থেকে ১৯৮২) বিতর্কিত দলিল দিয়ে রেকর্ড সংখ্যক নামজারি সম্পন্ন করা হয়েছে এ ভূমি অফিসে।

অভিযােগ আছে, এমন প্রতিটি নামজারি বাবদ গ্রাহকদের কাছ থেকে নাজির সাহেদ নিয়েছেন জমির ভ্যালু অনুযায়ী ৫০ হাজার থেকে লক্ষাধিক টাকা। এছাড়া খতিয়ান বা দলিলে নামের বানান ভুল অথবা খুঁটিনাটি ত্রুটি দেখিয়ে হয়রানি করে গ্রাহদের কাছ থেকে মােটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ারও অভিযােগ ওঠেছে তার বিরুদ্ধে।

প্রসঙ্গতঃ সীতাকুণ্ড ভূমি অফিসে আগত সেবা গ্রহীতাদের মধ্যে সরাসরি নামজারি আবেদনকারীর চেয়ে আবেদনকারীর পক্ষে প্রতিনিধির সংখ্যাই বেশী। বিশেষ করে এখানকার জমির অধিকাংশ ক্রেতা দলিল রেজিস্ট্রির সময় দলিল লিখকের হাতেই নামজারির দায়িত্ব দিয়ে দেন। ফলে নতুন ভূমি মালিকদের খুব কম সংখ্যকই সরাসরি নামজারি আবেদন করতে আসেন। এদিকে নিজ গ্রাহকদের নামজারির দায়িত্ব কাধে পড়ায় অনেক দলিল লিখক নাজির সাহেদের চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিয়ে নামজারি করে নিতে বাধ্য হন। যদিও এক্ষেত্রে প্রতিটি নামজারির জন্য অগ্রিম টাকা দিয়েও সাহেদের কালক্ষেপণের হয়রানির শিকার হতে হয় তাদের।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন দলিল লিখক ২০টি নামজারি আবেদনের তালিকা দেখিয়ে বলেন, প্রতিটি নামজারির জন্য নাজির সাহেদকে প্রকারভেদে তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে রেখেছি। মাসের পর মাস পেরিয়ে গেলেও আমার নামজারিগুলাে পাচ্ছি না। তিনি এসিল্যান্ডের কথা বলে গড়িমসি করছেন। এমনকি এসিল্যান্ডের বিষয়টি বিশ্বাসযােগ্য করাতে সাহেদ অফিসের অন্য কর্মচারীদের দিয়েও একই কথা আওড়ান। এদের একজন অফিস সহকারী মাে. হাবিব।

অন্যদিকে সরাসরি নামজারি করতে আসা সেবা গ্রহীতাদের একটি বৃহৎ অংশ মৌরসী মালিক সূত্রে আবেদনকারী। যারা নাজির সাহেদের চরম হয়রানির শিকার হন। পৈত্রিক সম্পত্তি নামজারি করতে এসে মােটা অংকের ঘুষ দিতে অপারগ বা কোন কোন ক্ষেত্রে অস্বীকৃতি জানানাে এসব গ্রাহকদের নামজারি আবেদন এসিল্যান্ড খারিজ করে দিয়েছেন বলে জানা গেছে। পরে গ্রাহক বাধ্য হয়ে কাঙ্খিত ঘুষ প্রদান করলে ফের নামজারি অনুমােদন করিয়ে নেওয়া হয়েছে।

ভুক্তভােগী নাহিদা আক্তার বলেন, আমি সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে আমার ফাইলটি উপজেলা ভূমি অফিসে আনতে হয়েছে। পরে সেখানে নাজির সাহেদুল ইসলাম ৫০ হাজার টাকা দাবি করে কালক্ষেপণ করেন। বারবার এসিল্যান্ডের সাথে দেখা করতে চাইলেও তিনি দেখা করতে দেননি।

জানতে চাইলে সাহেদ বলেছেন 'স্যারের সাথে দেখা করতে টাকা লাগবে, টাকা ছাড়া নামজারি করবেন তা স্বপ্নেও ভাবিয়েন না।'

মাে. এজহার নামে এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, তিনি পােড়া সনের নামজারি (বিতর্কিত সন) করতে নাজির সাহেদকে ৩৫ হাজার টাকা দিয়েছেন। তিনি বলেন, পােড়া সন হলেও আমার দলিলগুলাে সার্টিফাইড কপি হওয়ায় কম টাকায় নামজারি করে দিয়েছেন সাহেদুল ইসলাম।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি জানান, মােটা অংকের টাকা ঘুষ নিতে গেলে নাজির সাহেদ তার অফিস কক্ষের লােকচক্ষু ও অফিসের বিভিন্ন স্পটে থাকা সিসি ক্যামরার আড়ালে চলে যান। তিনি ভূমি অফিস অভ্যন্তরের গােলঘরে অবস্থিত শৌচাগারের সংকীর্ণ গলিতে গিয়ে মােটা অংকের টাকা পকেটে পুরে আবার নিজকক্ষে ফিরে আসেন।

জনশ্রুতি আছে ঘুষের টাকা হলেও সাহেদ টাকার প্রতিটি নােট যাচাই করে নেন। জাল কিংবা ছেড়া নেই, পরিমাণেও সঠিক নিশ্চিত হয়ে তবেই ঘুষ নেন তিনি। নিয়মিত নামজারি করান এমন ব্যক্তিদের টাকা অগ্রিম দেয়া ও বকেয়া টাকার হিসাব সংক্রান্ত ডকুমেন্টও সংগ্রহে রাখেন নাজির সাহেদ। যেমন কেউ নামজারি অনুমােদন হওয়ার পর ডিসিআর নেয়ার সময় যদি বলেন টাকা আগেই দিয়েছি। তথন ডিসিআর (ডুপ্লিকেট কার্বন কপি) কাটার দায়িত্বে থাকা অস্থায়ী কর্মচারী পাভেল নাজির সাহেদকে বলেন, সাহেদ ভাই আপনার হিসাবটা দেখেন ওনি অগ্রিম দিয়েছিলেন কি না? তবে কেবল নামজারিই নয় ভূমি অফিসে আবেদিত গ্রাহকদের মিছ মামলা দ্রুত নিস্পত্তি বা রায় পক্ষে নিয়ে দিবেন বলে গ্রাহদের কাছ থেকে মােটা অংকের টাকা নেয়ারও অভিযােগ ওঠেছে নাজির সাহেদের বিরুদ্ধে।

ভুক্তভােগীরা জানান, এক্ষেত্রে দুই একটি মামলা নিষ্পত্তি হলেও অধিকাংশ মামলা এসিল্যান্ডকে ম্যানেজ করতে পারিনি ন বলে কালক্ষেপণ করেন। এমনকি নিস্পত্তি হওয়া মামলার রায়ের কপি নিতেও দিতে হয় টাকা।

সীতাকুণ্ডের মুরাদপুর ইউনিয়নের মাে. ইলিয়াস নামের এক ব্যক্তি বলেন, তিনি একটি মিছ মামলার রায়ের কপি আনতে গেলে নাজির সাহেদ তার কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করে কালক্ষেপন করেন। পরে তিনি এসিল্যান্ডের সাথে দেখা করে মাত্র দেড়শ টাকায় ওই রায়ের কপি সংগ্রহ করেন।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে নাজির পদে পদোন্নতি পাওয়া এই সাহেদুল ইসলাম পূর্ব থেকেই সীতাকুণ্ড ভূমি অফিসে অফিস সহকারী পদে কর্মরত ছিলেন। এ দীর্ঘ সময়ে তার বিরুদ্ধে মােটা অংকের অর্থের বিনিময়ে নথি গায়েবেরও অভিযােগ উঠেছে। তিনি সই করে নথি রিসিভ করেছেন এমন নথিও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা এমন অভিযােগ করেছেন আবুল কাসেম সুকানী নামের এক ভুক্তভােগী।

তিনি জানান, আমার ক্রয়কৃত নয়াখালী মৌজার একটি বিৰিধি মামলার নথি তল্লাশি করলে পাওয়া যায়নি। পরে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, নথিটি নাজির সাহেদ সদর তহসিল থেকে গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু নথিটি উপজেলা ভূমি অফিস থেকে গায়েব হয়ে যায়।

এছাড়া সীতাকুণ্ড উপজেলা ভূমি অফিস থেকে ড. মাশফিক আহমেদ চৌধুরী নামে এক ব্যক্তির নথি গায়েবের বিষয়টি সর্বজনবিধিত। এ বিষয়ে মাশফিক আহমেদ নিজে অভিযােগ দায়ের করেছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় বরাবরে। এরপর দীর্ঘ ৫ মাস পেরিয়ে গেলেও সেই নথি খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে বিশ্বস্ত একটি সুত্র জানিয়েছে নাজির সাহেদের এসব অপকর্মের কারনে সম্প্রতি তাকে ডিসি অফিসে বদলী করা হয়েছে। কোটি টাকা ঘুষ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে নাজির সাহেদুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করেন। 

এ বিষয়ে টিআইবি-সনাক চট্টগ্রামের সভাপতি ও সুশাসনের জন্য নাগরিক চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক এডভােকেট আকতার কবির চৌধুরী বলেন, বলা হয়ে থাকে দেশে দুর্নীতির শীর্ষ স্থানে রয়েছে ভূমি অফিস। আর প্রতিটি ভূমি অফিসের শীর্ষ দায়িত্বশীল হলেন স্ব-স্ব এসিল্যান্ড। কিন্তু এসিল্যান্ডের একান্ত সহকারী নাজির যখন অবাধে ঘুষ-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে তখন বুঝে নিতে হবে তার ওপর কোন কিছুর বিনিময়ে উর্ধ্বতন কর্তা ব্যক্তিগণ সন্তুষ্ট। তিনি সবাইকে বশিভূত করেই এসব করছেন।

তবে অভিযুক্ত নাজিরের সরাসরি দায়িত্বশীল যিনি সেই এসিল্যান্ড (সহকারী কমিশনার ভূমি) মোঃ আশরাফুল আলম এসব অভিযোগের কিছুই জানেন না উল্লেখ করে বলেন, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব। এসময় নাজির সাহেদের ঘুষ চাওয়া নিয়ে গত ২০ জুলাই তারিখে নাহিদা আক্তার নামে এক নারীর দেয়া লিখিত অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি এ নামের কারো অভিযোগ পাননি বলে জানান। 

এই নিউজ প্রকাশের পর অনেেকে ফেসবুকে তাদের অভিমত ব্যক্ত করে যাচ্ছেন ।

সুলতানা বেগম নামের একজন লিখছেন ,

Sitakund Land Registre office i had Very Very Bad Experience. People think we r making money from Sky. All officials people r Same Bad. They Want money but no Government Receipt. ( সীতাকুন্ড জমি রেজিস্ট্রি অফিস নিয়ে আমার খুব খারাপ অভিজ্ঞতা আছে । লোকেরা মনে করে আমরা আকাশ থেকে অর্থ উপার্জন করছি। সব কর্মকর্তার মানুষ একই রকম খারাপ। তারা টাকা চায় কিন্তু সরকারী রসিদ নেই।)

রাসেল উদ্দীন লিখেছেন ,

টাকা দিয়ে অন্যের নামে নামজারি ও হয়,কোন জায়গার বিরুদ্ধে আপত্তি থাকলে বা অভিযোগ থাকলে ও সেক্ষেত্রে টাকা দিলে সব হয়,আর এখানে যারা কাজ করে তারা নিজেদের সরকার ভাবে হাব ভাব এমনি??

Rahman Khan - লিখেছেন, 
কেউ জনগণের টাকা লুটছে,আর কেউ সরকারের টাকা লুটছে, এমন কয়টা প্রতিষ্টান আছে যেখানে অনিয়ম নেই???

Rai Han লিখেছেন,
এরা ডাকাত থেকে ও বেশি।।
দুঃখ লাগে আমরা এমন একটা দেশে জন্মেছি যেখানে সরকারি কামলাদের লুটেখাওয়ার জন্য সুযোগ করে দেওয়া হয়। সিস্টেমটাই এমন।।পাসপোট অফিসে যান ভূমি অফিসে যান সব যায়গায় একি। উচ্চ শিক্ষিত হয়ে এস এস সি ফেইল মানুষের কাছে যেতে হয়।

smail Rifat লিখেছেন,
ভাই ১০ হাজার টাকা নিছে আমার চাচার কাছ থেকে নামজারী করতে । 

MD Repon লিখেছেন,
Ader ke taka dile onner jome o nam zari kore dey ( এদের টাকা দিলে অন্যের জমিও নাম জারি করে দেয় )

আমজাদ হোসেন নামে একজন ভুক্তভোগী লিখেছেন-

আমার জায়গার নামজারি আজ ১ বছর ধরে পড়ে আছে স্বাক্ষর দিচ্ছে না। কাগজপত্র সব ঠিক আছে।

এমডি বাপ্পি লিখেছেন,

নাজির সাহেদের সাথে কে বা কারা জড়িত তা তদন্ত করা প্রয়োজন। এমডি আনিস লিখেছেন, তার সাথে এসিল্যান্ড জড়িত। আমি নিজেও ভুক্তভোগী। এখনও আমার ক্রয়কৃত জমি নামজারি করতে পারিনি সব ঠিক থাকার পরও।

সাজ্জাদ আহমেদ ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন ,

(…..অপ্রকাশযোগ্য) পুতেরা বিসিএস দিয়ে এখানে ডাকাতি করে, বাড়িতে গেলে হাজি সাহেব সাজে।

মোহাম্মদ সফিকুল ইসলামের মন্তব্য-

ব্যাপার না সরকারি অফিসার একালের জমিদার।

আজহার মিয়া নামে একজন লিখেছেন,

ভূমি অফিসের দুর্নীতির কথা বলার ভাষা নেই, বিষাক্ত সাপের চেয়ে বেশি। এত জঘন্য বলার মতো নয়। এগুলো দেখার কেউ নেই। এ বিষয়ে মানুষকে অবগত করার জন্য আপনাদেরকে ধন্যবাদ।

ইসমাইল রিফাত লিখেছেন,

ভাই ১০ হাজার টাকা নিছে আমার চাচার কাছ থেকে নামজারি করতে। রহমান খান নামে আরেকজন মন্তব্য করেছেন, পোড়া কপাল, অনিয়ম সবাই করে, কোটিপতিও অনেকে হয়েছে। দুঃখের বিষয় একজন কেন সামনে আসলো?? বাকিরা কই???

নজরুল ইসলাম মন্তব্য করেছেন,

সীতাকুণ্ড সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের বেসরকারি পিয়ন কামরুলের মাসিক আয় ২-৩ লক্ষ টাকা। সে রাত ৮ টা পর্যন্ত কাজ করে। একেকটি খসড়া খতিয়ান দেখে দেখে লিখে দেওয়া প্রতি পৃষ্ঠা ১০০/২০০ টাকা। এছাড়া খাজনা ব্যবসা, নামজারি ব্যবসার থার্ড পার্টি সে। ভোর হতে রাত ৮ টা ৯ টা পর্যন্ত তার ব্যবসা চলে। টাকার খনি খাসমহল (তহসিল অফিস)।

মোহাম্মদ রিয়াজ লিখেছেন,

এই লোকটা আমাকে অনেকদিন ঘুরাইছে। একই পোস্টে মাহবুব রহমান লিখেছেন এডিসি রাজস্ব কি জানে খবরটি?

ওয়ালিদ রনি লিখেছেন,

সীতাকুণ্ডের এক ছেলে আছে ইয়া এক বড় হুজুর টাইপের। সে আমার এলাকার এক অসহায় গরীব পরিবারের তদন্তের ফাইল দেড়মাস আটকাই রেখে ভাঙ্গা ঘর বাঁধতে কস্ট দিয়েছে। পরে ২০ হাজারের বিনিময়ে ফাইল কোর্টে পাঠিয়েছে। ফাইল কোর্টে পাঠানোর সাথে সাথে নিঃস্পত্তি। সে পরিচিত অপরিচিত সবার সাথে এসব করে। বেশ কিছু প্রমাণও সংগৃহীত হচ্ছে। তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত চলমান।

ওমর ফারুকের মন্তব্য করেছেন,

অনেক মানুষ নিজেদের প্রয়োজনে চোখ বুঝে সহ্য করে যাচ্ছে। কারণ প্রতিবাদ করতে গেলে আরও বেশি বিপদে পড়ে। সাধারণ মানুষ এদের কাছে জিম্মি। ভূৃমি অফিসের লোকগুলো টাকা ছাড়া কিছুই বুঝে না।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সীতাকুণ্ড উপজেলা ভূমি অফিসের ঘুষ-দুর্নীতি নিয়ে একের পর এক নানা মন্তব্য অব্যাহত রয়েছে। 

 

খালেদ / পোস্টকার্ড;