সীতাকুণ্ডের পাহাড় থেকে মাটি এবং বনের গাছ পুড়িয়ে তৈরি হচ্ছে ইট, দেখার কেউ নেই

সীতাকুণ্ডের পাহাড় থেকে মাটি এবং বনের গাছ পুড়িয়ে তৈরি হচ্ছে ইট, দেখার কেউ নেই
সীতাকুণ্ডের পাহাড় থেকে মাটি এবং বনের গাছ পুড়িয়ে তৈরি হচ্ছে ইট, দেখার কেউ নেই

অবৈধভাবে পাহাড় থেকে মাটি নিয়ে আর বন থেকে সরকারী গাছ পুড়িয়ে ইট তৈরি করছে সীতাকুণ্ডের নূর জাহান ব্রিক ফিন্ড। সংরক্ষিত বনাঞ্চলে ইটভাটা স্থাপন ও ইটভাটায় কাঠ পোড়ানো নিষিদ্ধ হলেও তা মানছে না।

সীতাকুণ্ড উপজেলার বাড়বকুণ্ড সংরক্ষিত বন এলাকায় গড়ে ওঠা এ ইটভাটাটি পরিবেশ বিপন্ন করে পাহাড় কেটে ও বনের গাছপালা পুড়িয়ে প্রস্তুত করছে ইট। এতে ওই এলাকার পাহাড়ের প্রকৃতি-পরিবেশ মারাত্মক হুমকিতে পড়েছে। আবাসস্থল হারাচ্ছে পাহাড়ি জীববৈচিত্র্য। জনজীবনেও পড়ছে বিরূপ প্রভাব।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায় , দিনরাত প্রশাসনের নাকের ঢগায় এমন পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড চললেও এখনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না। পাহাড় কেটে ইট তৈরি ও বনাঞ্চল ধ্বংসের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয়রা জানান, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না থাকার দায়ে গেল বছর অধিদপ্তরের এক অভিযানে এটি বন্ধ করে দেয়া হয়। কিন্তু ইটভাটার প্রভাবশালী মালিকপক্ষ পুনরায় আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে ভাটাটি চালু করেছে। পাহাড় কেটে সেখানে ইট তৈরির মাটির যোগান দিচ্ছেন নূর জাহান নামের একজন। শুধু তাই নয়, ইটভাটার জ্বালানির যোগান দিতে পাহাড়ের গাছপালা কেটে উজাড় করা হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বাড়বকুণ্ডের পশ্চিমে পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত নূর জাহান ইটভাটায় একটি স্কেভেটর দিয়ে পাহাড়ের ঢাল কাটা অব্যাহত রয়েছে। পাহাড়ের ঢাল কেটে মাটিগুলো একপাশে স্তূপ করা হচ্ছে। পরে স্তূপকৃত মাটি ইটভাটার শ্রমিকরা ভাটায় সরিয়ে নিচ্ছেন। যা ইট তৈরির কাঁচামালে রূপান্তর করা হচ্ছে। অন্যদিকে পাহাড়ের গাছপালা কেটে ইটভাটার জ্বালানি হিসেবে যোগান দেয়া হচ্ছে। এসময় ভাটার সম্মুখে গাছের ৫টি বিশালাকার স্তূপ দেখা গেছে।

এসময় কথা হয় একজন পাহাড়ি শ্রমিকের সঙ্গে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ‘আমরা পাহাড়ি গাছপালা কেটে ভাটায় স্তূপ করছি। এজন্য দৈনিক ভিত্তিতে নির্ধারিত পারিশ্রমিক পেয়ে থাকি আমরা। এভাবে প্রতিদিন অনেকেই পাহাড়ি গাছপালার ঢাল কেটে ইটভাটায় বিক্রি করেন।’

জানতে চাইলে ইটভাটার ম্যানেজার জামাল উদ্দিন বলেন, আমরা পাহাড় কাটছি না। এমনি একটি স্কেভেটর এনে রেখেছি। অভিযোগের বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি ।

এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলার উপ-পরিচালক ফেরদৌস আনোয়ার বলেন, পাহাড় কেটে ও বনের গাছ পুড়িয়ে ইট তৈরির অভিযোগ আমরা পেয়েছি। পাহাড় কেটে ও গাছপালা ধ্বংস করে ইটভাটা পরিচালনার সুযোগ নেই। ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা তদন্ত করবো। নূর জাহান ব্রিক ফিল্ডে এর আগেও অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা করা হয়েছিল।

মেজবাহ খালেদ / পোস্টকার্ড ;