সীতাকুন্ডের শিপইয়ার্ডের রাস্তায় জনগনের লকডাউন,পুলিশের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া

সীতাকুন্ডের শিপইয়ার্ডের রাস্তায় জনগনের লকডাউন,পুলিশের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি।।

সীতাকুন্ডের বার আউলিয়া এলাকায় লকডাউন নামে গ্রাম্য রাস্তা অবরোধ করে দেয়াকে কেন্দ্র করে পুলিশ-গ্রামবাসীর মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় পুলিশ গ্রামবাসীকে লক্ষ্য করে ১৫/২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়েছে এবং গ্রামবাসী পুলিশের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও শিপইয়ার্ড এর দারোয়ান মেরে মালামাল চুরির অভিযোগ ইয়ার্ড কতৃপক্ষের।

শুক্রবার (১০ এপ্রিল) দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে সোনাইছড়ি ইউনিয়নের ফুলতলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

পুলিশ ও গ্রামবাসীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, করোনা সংক্রামনের কারণে উপজেলার অন্যান্য এলাকার মতো ফুলতলা পশ্চিমপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা গ্রামে যাতে বাহিরে কোন ব্যক্তি ও শিপব্রেকিং ইয়ার্ডের গাড়ি প্রবেশ করতে না পারে সেজন্যে বাঁশ দিয়ে শিপব্রেকিং ইয়ার্ডের গাড়ি চলাচল তথা গ্রামের রাস্তাটি বন্ধ করে দেয় কয়েকদিন আগে। যার ফলে লোকমান হোসেনের মালিকানাধীন জিরি সুবেদার শিপব্রেকিং ইয়ার্ডের কোন গাড়ি প্রবেশ করতে পারছিল না। এ নিয়ে জন প্রতিনিধি ও ইয়ার্ড মালিকের সাথে গ্রামবাসীর বিরোধ বাঁধে। স্থানীয় ইউপি মেম্বার ব্যারিকেড তুলে দিতে চাইলে গ্রামবাসী বাধা দেয়।

বিষয়টি ইয়ার্ড কৃর্তপক্ষ পুলিশকে জানালে শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সীতাকুণ্ড থানার পুলিশ গিয়ে রাস্তা থেকে ব্যারিকেড সরিয়ে দেয়। এসময় গ্রামবাসীর সাথে পুলিশের তর্ক-বির্তক শুরু হয়। এরপর দুইপক্ষের মধ্যে বেশ উক্তেজনার সৃষ্টি হলে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

এ ঘটনায় জড়ো হওয়া গ্রামের লোকজনকে বিতাড়িত করতে পুলিশ ১৫/২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়েছে বলে অভিযোগ করে গ্রামবাসী।

গ্রামবাসী বলেন, সারাদেশে করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউন চলেছে, আমাদের গ্রামে যাতে করোনা ভাইরাসের সংক্রামণ ছড়াতে না পারে সেজন্য আমরা গ্রামবাসী স্বেচ্ছায় লকডাউন করি। কিন্তু জিরি সুবেদার শিপব্রেকিং ইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ তাদের ইয়ার্ড চালু করে বাহির থেকে গাড়ি গ্রামে ঢুকাচ্ছে। আমরা বাঁধা দিলে তারা পুলিশ এনে গ্রামবাসীর উপর নির্যাতন করে।

এদিকে গ্রামবাসীর অভিযোগগুলো অস্বীকার করে জিরি সুবেদার শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডের প্রতিনিধি মোঃ মহিউদ্দিন বলেন, গ্রামের কিছু ব্যক্তি লকডাউনের নামে রাস্তা বন্ধ করে ইয়ার্ডে ডাকাতি করার প্রস্তুুতি নিচ্ছে, কয়েকদিন আগেও তারা দারোয়ানকে মেরে ইয়ার্ডে ডাকাতি করেছে। আর করোনাভাইরাসের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে আমরা গ্রামবাসীর জন্য ত্রাণ সামগ্রী দিয়েছি।

ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে সীতাকুণ্ড থানার অফিসার ইনচার্জ ফিরোজ হোসেন মোল্লা বলেন, এলাকাবাসী বাঁশ দিয়ে রাস্তা চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে উক্তেজিত গ্রামবাসী আমাদের উপর পাথর ছুঁড়ে মারে।তবে গ্রামবাসীকে লক্ষ্য করে ফাঁকাগুলি ছোঁড়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন ওসি।

এদিকে খবর পেয়ে রাতে ঘটনাস্থলে যান এএসপি (সীতাকুণ্ড) সার্কেল শম্পা রানী শাহা, সোনাইছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মনির আহমেদ, বার আউলিয়া হাইওয়ে থানার এসআই সাইফুল ইসলামসহ ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশসহ শতাধিক পুলিশ। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সীতাকুণ্ড) সার্কেল শম্পা রানী সাহা’র সমোঝতার আশ্বাসে গ্রামবাসী মধ্যরাতে ঘটনাস্থল ছেড়ে নিজ নিজ বাড়ী ফিরে যায়।

তবে গভীর রাতে আবার গ্রামবাসী রাস্তাটি লকডাউন করে দেই। এব্যাপারে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক করে সমাধানের চেষ্টা চলছে।