হজের সময় ৪২ দিন থেকে কমিয়ে ৩০ দিনে করার সিদ্ধান্ত

হজের সময় ৪২ দিন থেকে কমিয়ে ৩০ দিনে করার সিদ্ধান্ত

পোস্টকার্ড প্রতিবেদক।।

হজযাত্রীর ইমিগ্রেশন ২০২০ থেকে শতভাগ ঢাকায় সম্পন্ন ও প্যাকেজে হজের সময়কাল ৪২ দিন থেকে কমিয়ে ৩০ দিনে আনা হচ্ছে এবং সৌদি আরবে উন্নতমানের খাবার ও আবাসনের ব্যবস্থাসহ হজযাত্রীদের সেবার মান বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মো. আবদুল্লাহ।

তিনি বলেন, অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে ২০১৯ সালে সুন্দর ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় হজ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। চলতি বছর সব ধরনের হাজীদের সেবার মান ও সুযোগ-সুবিধা আরও বাড়ানো হবে। এছাড়াও সরকারি কোটার হজযাত্রীর সংখ্যা ৭ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১৭ হাজার করা হয়েছে। সরকারি হজযাত্রীর কোটা পূরণ করতে তুলনামূলক কমমূল্যে সহনীয় প্যাকেজ ঘোষণার কথা চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।

প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, এ বিষয়ে সৌদি সরকারের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশের হজ কোটা ১০ হাজার বাড়ানো হয়েছে। আরও ১০ হাজার বাড়ানোর বিষয়ে প্রস্তাব রয়েছে। স্বল্পমূল্যে হজ প্যাকেজ ঘোষণার পাশাপাশি প্যাকেজের সময়কালও কমানোর চেষ্টা চলছে।

ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, চলতি বছর সৌদি সরকার যে ১০ হাজার অতিরিক্ত কোটা বৃদ্ধি করেছে তা সরকারি ব্যবস্থাপনার জন্য রাখা হয়েছে। ফলে এক লাখ ৩৭ হাজার ১৯৮ জনের কোটার মধ্যে বেসরকারি কোটা বিদায়ী বছরের মতোই এক লাখ ২০ হাজারই থাকল।

বাকি ১৭ হাজার ১৯৮ জন সরকারি ব্যবস্থাপনার জন্য রাখা হয়েছে। গত ৪ ডিসেম্বর হজ চুক্তির সময় সৌদি হজ কার্যক্রম পরিচালনাকারী সংস্থা মোয়াচ্ছাসাকে বিষয়টি জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

জানা গেছে, গত বছর এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে হজে যান এক লাখ ২৭ হাজার ১৫২ জন। এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ছিল ছয় হাজার ৯১৬ জন, যা ৫ শতাংশেরও কম। যদিও সরকারি ব্যবস্থাপনায় কোটা রাখা হয়েছিল ১০ হাজার ১৯৮ জন, যা ছিল ৮ শতাংশের মতো।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের হজচুক্তিতে হাজীদের সেবার মান বাড়ানোর বিষয়ে বিভিন্ন শর্ত রাখা হয়েছে। এবার এজেন্সিপ্রতি হজযাত্রীর সর্বনিম্ন সংখ্যা ১০০ এবং সর্বোচ্চ সংখ্যা ৩০০ বহাল রাখা হয়েছে। চট্টগ্রাম ও সিলেট বিমানবন্দর ব্যবহারকারী হজযাত্রী ছাড়া শতভাগ হজযাত্রীর ইমিগ্রেশন সৌদি আরবের পরিবর্তে ঢাকায় সম্পন্ন করা হবে। মদিনা থেকে হজ ফ্লাইটের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। হজ এজেন্সিগুলোর জন্য এআইটিএ সনদ থাকার শর্তারোপ করা হচ্ছে না। প্রত্যেক হজযাত্রীর ইন্স্যুরেন্স কভারেজ দেবে সৌদি সরকার। ‘রুট টু মক্কা’র মতো ফিরতি হজযাত্রীদের জন্য ‘রুট টু ঢাকা’ সুবিধা চালু করা হবে। হাজীরা যাতে ৪২ দিনের পরিবর্তে ৩০ দিনের কম সময়ে দেশে ফিরতে পারেন সে ব্যবস্থা গ্রহণ, ভিসা প্রসেসিং সহজ করা হবে।

থাকা-খাওয়াসহ সৌদি আরবে বাংলাদেশি হাজীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হবে। হাজীদের জন্য বাধ্যতামূলক খাবার সরবরাহের প্রথা বন্ধ করা এবং মিনায় উন্নতমানের বাংলাদেশি খাদ্য পরিবেশন ও উন্নতমানের আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। হজের সময় বাংলাদেশের আইন লঙ্ঘন করে সৌদি এয়ারলাইন্সের টিকিট বিক্রির স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

হজযাত্রী পরিবহনে বাস সার্ভিস উন্নত করা এবং বাংলাদেশি হাজীদের জন্য ট্রেন পরিবহনের সুবিধা বাড়ানোর কথা চুক্তিতে উল্লেখ রয়েছে।