সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারির (ক.) ওরশের প্রধান দিবস আজ, ভক্ত আশেকের পদচারণায় মুখর

সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারির (ক.) ওরশের প্রধান দিবস আজ, ভক্ত আশেকের পদচারণায় মুখর
সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারির (ক.) ওরশের প্রধান দিবস আজ, ভক্ত আশেকের পদচারণায় মুখর

ফটিকছড়ি প্রতিনিধি ।।  

আজ (রবিবার) গাউছুল আজম হযরত মাওলানা শাহ ছুফি সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারির (ক.) ওরশের প্রধান দিবস।এ উপলক্ষ্যে প্রতিবছরের মতো এবারো নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।

ওরশের প্রধান দিবস উপলক্ষ্যে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ও ভারত, মিয়ানমার, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে দুইদিন আগে থেকেই ভক্তরা মাইজভান্ডার দরবার শরীফে আসতে শুরু করেছেন।

ভক্ত আশেকের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে মাইজভান্ডার দরবার শরীফ। মুরিদ ভক্ত-আশেকদের ভিড়ে মাইজভান্ডার দরবার শরীফ ও আশপাশের এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে।

জিকির, মাইজভান্ডারি মারফতি গান, মিলাদ মাহফিলের ধ্বনিতে মুখরিত হচ্ছে পুরো এলাকা। আজ রাত ১২টা ১ মিনিটে আনজুমানে মোত্তাবেইনে গাউছে মাইজভান্ডারি শাহ এমদাদীয়া মঞ্জিলের শাজ্জাদানশীন শাহসূফী সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভান্ডারির (মাজিআ) আখেরী মুনাজাতের মাধ্যমে ওরশের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে। এ উপলক্ষ্যে ফটিকছড়ি উপজেলা প্রশাসন ও ফটিকছড়ি থানা পুলিশ ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে।

জানা যায়, গাউছুল আজম মাইজভান্ডারি হযরত মওলানা শাহ সুফী সৈয়দ আহমদ উল্লাহ (ক.) ১২৩৩ বাংলা পহেলা মাঘ, রোজ বুধবার জোহরের সময় জন্মগ্রহণ করেন। ৭৯ বছর বয়সে ১৯০৬ সালে (১৩১৩ বঙ্গাব্দে ১০ মাঘ) সোমবার দিবাগত রাতে ইহধাম ত্যাগ করেন। চার বছর বয়সে গ্রাম্য মক্তবে হযরতের শিক্ষাজীবন শুরু হয়।

১২৬৮ হিজরীতে তিনি কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসার শেষ পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে পাশ করেন। হিজরী ১২৬৯ সালে তিনি যশোর জেলায় কাজী (বিচারক) পদে যোগদান করেন। ১২৭০ হিজরীতে কাজী পদ থেকে পদত্যাগ করে কলকাতার মুন্সি বু-আলী মাদ্রাসায় প্রধান মোদার্রেছের পদে যোগদান করেন।

তার পীরে তরিকত ছিলেন শেখ সৈয়দ আবু শাহমা মুহাম্মদ ছালেহ আল কাদেরী লাহোরী (রহ:)। অপরদিকে পীরে তরিক্বতের বড়ভাই হযরত শাহ সৈয়দ দেলাওয়ার আলী পাকবাজ (রহ:) এর কাছ থেকে কুতুবিয়তের ফয়েজ অর্জন করেন। বিল আছালত বা স্বভাব সিদ্ধ অলি হযরত গাউছুল আজম মাইজভান্ডারী (কঃ) তার পীরে ত্বরিকতের নিদের্শে ১৮৫৭ সালে নিজ গ্রাম মাইজভান্ডারে ফিরে আসেন। কিছুদিনের মধ্যেই তার বুযুর্গীর কথা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ তার দরবারে ভীড় জমায়। লোকসমাজে পরিচিতি পায় ‘মাইজভান্ডার দরবার শরীফ’ হিসেবে।

সূত্রে জানা গেছে, সকাল ১০টায় কোরআনখানি, খতমে গাউছিয়া আদায়ের মাধ্যমে পবিত্র ওরশ শরীফের কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক সূচনা করা হবে। সকাল ১১টায় রওজা-এ-পাকে গিলাফ চড়ানো ও গোসল শরীফ অনুষ্ঠানের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। শাহ এমদাদীয়ার নায়েবে শাজ্জাদানশীন সৈয়দ ইরফানুল হক মাইজভান্ডারী জানান, গাউছুল আজম মাইজভান্ডারির ওরশে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লাখো ভক্তের সুবিধার্থে থাকা-খাওয়া, প্রাথমিক চিকিৎসা, নির্বিঘ্নে চলাচলের জন লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারির (ক.) জীবনী, শান-মান সম্বলিত বিশেষ ক্রোড়পত্র বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশের ব্যবস্থা হয়েছে। এদিকে প্রতি বছরের ন্যায় ১০ মাঘ ওরশ উপলক্ষে মাইজভান্ডারের ৩/৪ মাইল এলাকায় বিশাল মেলা বসার ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। এতে কৃষি ব্যবহার্য্য পণ্য, কুটির শিল্প উৎপাদিত পণ্য, গ্রামীণ গৃহস্থালী সামগ্রী, ডালা, কুলা দা, বটি, বেলুন, কাঠের পিড়া, মোড়া, পিঠা তৈরীর বিভিন্ন চাচ, চুড়ি, বাশি খেলনা, মোলা-ওড়া ইত্যাদি বিকিনিকি হবে।