আজ ভয়াল ২৯ এপ্রিল, বেহাল বেড়িবাঁধ নিয়ে আনোয়ারাবাসীর হাহাকার

আজ ভয়াল ২৯ এপ্রিল, বেহাল বেড়িবাঁধ নিয়ে আনোয়ারাবাসীর হাহাকার
আজ ভয়াল ২৯ এপ্রিল, বেহাল বেড়িবাঁধ নিয়ে শুধুই হাহাকার

এম. নুরুল ইসলাম, আনোয়ারা।।

ভয়াল ২৯ এপ্রিল আজ । ১৯৯১ সালের এদিনে ‘ম্যারি এন’ নামক ভয়াবহ প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে আনোয়ারা উপকূলীয় এলাকার প্রায় ২০ হাজার মানুষ প্রাণ ও লক্ষাধিক মানুষ সর্বস্ব হারায়। ক্ষতি হয় হাজার কোটি টাকার সম্পদ। ৯১ থেকে ২০২০ মাঝখানে নীরবে পার হয়ে গেল ৩০টা বছর। কিন্তু আনোয়ারাবাসীর সুরক্ষিত বেডিবাঁধের দাবি, এখনো পূরণ হয়নি। ৯১ এর এই ভয়াল ঘটনা এখনও দুঃস্বপ্নের মতো তাড়িয়ে বেড়ায় উপকূলবাসীকে।

স্বজন হারানোদের কান্নায় পার হয় বছরের পর বছর। কিন্তু তাদের কাঙ্ক্ষিত বেডিবাঁধের নির্মাণ শেষ হয় না। ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের প্রচেষ্টায় আনোয়ারায়-কর্ণফুলীর উপকূলে ৪ শত কোটি টাকার বেডিবাঁধ নির্মাণ শুরু হলেও গত তিন বছর ধরে তা শুধু চলমান। এতে কাজের মান ও ধীরগতি নিয়ে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।

তাদের অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের একশ্রেণির কর্মকর্তাদের অবহেলায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো দায়সারাভাবে উন্নয়ন কাজ চালাচ্ছে। ফলে পরুয়াপাড়া, খোর্দ্দগহিরা, উঠান মাঝির ঘাট, মালিপাড়া, বারআউলিয়া, গহিরা বারআউলিয়া, ফকির হাট ও সরেঙ্গা এলাকার বিভিন্ন অংশে বেডিবাঁধ দেবে যায়।

সরেজমিনে উপকূলের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, গহিরা বারআউলিয়া এলাকায় প্রায় দুইশ মিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানিতে সাগর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বেডিবাঁধের পাশে দেয়া পাথরগুলো পড়ে আছে। ফলে স্থানীয় বারআউলিয়া জামে মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান, বসতঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে পড়ে। শুধু তাই নয়, রায়পুর ইউনিয়নের পরুয়াপাড়া বাতিঘর, ফকির হাট ও সরেঙ্গার যেসব অংশে পাথর নেই সেখানেও বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বাঁধ নির্মাণের সময় সিডিউল অনুযায়ী বাঁধ তৈরি না করা, বাঁধের নিকট থেকে মাটিকাটা, বাঁধের মাটি না চাপানো, মাটির সাথে ৭০ শতাংশ বালি দেয়ায় বাঁধ নির্মাণের বছর পার না হতেই অধিকাংশ স্থানে বাঁধ দেবে যাচ্ছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে চরম দুর্ভোগের আশঙ্কা রায়পুরবাসীর। স্থানীয় বাইগ্যার ঘাট এলাকার বাসিন্দা ছালেহ আহমদ (৫৫) জানান, স্থানীয় কিছু নেতার জোগসাজশে অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে বেড়িবাঁধের কাজ করার কারণে নির্মাণের এক বছর না যেতেই বাঁধটি বিলীন হয়ে গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত অর্থবছরে রায়পুর ইউনিয়নের বাইগ্যার ঘাট থেকে ছিপাতলী ঘাট পর্যন্ত ১৯৪২ মিটার বেড়িবাঁধের ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মান কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাহের এন্ড ব্রাদার্স।

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী অলি আফাজ চৌধুরীর মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।