কুরআনের আলো ছড়িয়ে দিচ্ছেন মাওলানা জাহেদুল ইসলাম ফারুকী

কুরআনের আলো ছড়িয়ে দিচ্ছেন মাওলানা জাহেদুল ইসলাম ফারুকী

এম কে মনির, সীতাকুণ্ড, চট্টগ্রাম।।

মানুষকে শেখান পবিত্র কুরআন,নামাজ,হাদিস।দেন বিভিন্ন মাসলা-মাসায়েলের জ্ঞানও।পথে ঘাটে যাকে যেখানে পান তুলে ধরেন কুরআনের কথা।নামাজ আর কুরআন শিক্ষা দেওয়া তার নেশা।এলাকার যুবকদের নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। যুবকরা যেন বিপথে না যায় সেজন্য তার চেষ্টার ত্রুটি নেই।শুধু যুবক নয় ৮০ বছরের বৃদ্ধা থেকে শুরু করে ৮ বছরের কিশোরদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন সহিহ কুরআন শিক্ষা মজলিস।মসজিদে মসজিদে এই করআন শিক্ষা চালু করেছেন তিনি।সাইকেল চালিয়ে ছুটে যান বায়তুশ শরফ থেকে পাক্কাঘাট,পাক্কাঘাট থেকে জামে মসজিদ,জামে মসজিদ থেকে চাঁন মিয়া শাহ মসজিদ।এভাবেই এক মসজিদ থেকে আরেক মসজিদ গিয়ে মানুষকে পবিত্র কালামুল্লাহ শরিফ শিক্ষা দেন তিনি।রমজান মাস আসলেই আরো ব্যস্ত হয়ে পড়েন কুরআনের এই প্রচারক।সহিহ কুরআন শিক্ষার মাস ব্যাপী কোর্স চালু করেন তিনি। যারা ছোটবেলায় মক্তবে কুরআন পড়েনি কিংবা যেকোন কারণে কুরআন পড়া শিখা হয়নি তাদের জন্য বিশেষ ক্লাসের ব্যবস্থা করেন তিনি।চালান নানা প্রচারণা।ক্লাসে আহবান করেন তরুন যুবক,বৃদ্ধদের।মানুষের সাথে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলে কুরআনের ক্লাসে নিয়ে আসার কৌশল তার রপ্ত।চেহারায় মুচকি হাসি,মলিন ব্যবহার।তার চারিত্রিক মাধুর্য দেখেই মানুষ তার কাছে কুরআন শিখতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

ইতিমধ্যে বহু যুবক তার কাছে সহিহ শুদ্ধভাবে কুরআন পড়া শিখেছেন। গ্রামের অসংখ্য ছাত্র, যুবক, চাকরীজীবি, পুলিশ, শিক্ষক, প্রকৌশলী, ব্যবসায়ী কুরআন পড়া শিখেছেন তার কাছে। ফজরের সালাত পড়ার পরই তিনি নেমে পড়েন কুরআনের প্রচারের কাজে।মানুষকে কুরআন শিক্ষা দিয়ে কবরে যাওয়াই তার ইচ্ছা। দুনিয়ার মোহকে ত্যাগ করে আখেরাতের প্রতি ঝুকে পড়া সাচ্চা ইমানদার মুসলমান তৈরি তার লক্ষ্য।নিজেও জীবন গড়ছেন হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আদলে।রাসূলের সুন্নাতের আলোকে পারিবারিক জীবন যাপন করছেন।আর সেই শিক্ষা দিচ্ছেন নিজের মুসলমান ভাইদেরও।দাওয়াতী কাজে তার মনোনিবেশ বেশ কয়েকবছর আগে থেকেই

কুরআনের আলো ছড়িয়ে যাওয়া এই মানুষটির নাম মাওলানা জাহেদুল ইসলাম ফারুকী।পৈতৃক বাড়ি চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায়।লেখাপড়া করেছেন আলিয়া মাদ্রাসায়।দ্বীনি শিক্ষা নিয়ে পরিপূর্ণ জ্ঞান নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন ইসলাম প্রচারের কাজ।

মাওলানা জাহেদুল ইসলাম ফারুকী দক্ষিণ ইদিলপুর জামে মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব।পাশাপাশি সীতাকুণ্ড পাবলিক স্কুলের ধর্মীয় শিক্ষক।মসজিদে ইমামতি, স্কুলে ধর্মীয় শিক্ষা আর কুরআনের মজলিস নিয়েই তার জীবন।এভাবেই সময় কাটান তিনি।

অক্লান্ত পরিশ্রমে দ্বীনের কাজ চালাতে তিনি মোটেই হাঁফিয়ে উঠেননি।তার পথচলা যেন নিরন্তর। ইতিমধ্যে সীতাকুণ্ডের আশেপাশে পেয়েছেন বেশ খ্যাতি।দীর্ঘ ৫ বছর ধরে অনেকটা পারিশ্রমিক ছাড়া এ কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।শুধু নামাজ আর কুরআন শিক্ষা নয় প্রতিমাসের চতুর্থ সপ্তাহে চালু করেছেন ইসলামি গজল,হামদ,নাতের আসর।আর সেই সাথে ইসলামি প্রশ্ন উত্তর পর্ব।

শ্রোতার নানা প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ইসলামের সুস্পষ্ট বর্ণনা করতে তিনি অব্যস্ত। তবে জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় মসজিদ ও স্কুলের এই স্বল্প সম্মানীতে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে। মাস শেষই অর্থচিন্তার শিকল তার পিছু ছাড়ে না। তাই প্রয়োজন বাড়তি রোজগার। কিন্তুু এই বাড়তি রোজগারের পিছে দৌড়াতে গিয়ে থেমে যেতে পারে তার কুরআনের ক্লাস। তবে এসব কথা তিনি কখনোই কাউকে বলেননি।

সাংবাদিকের পর্যালোচনায় জানা গেছে, এলাকার যুব ও ছাত্র সমাজের দাবী আমাদের হুজুরকে এই মহান কাজের জন্য নির্ধারিত সম্মানী দেওয়া প্রয়োজন। হুজুরকে সরকারী ভাতার ব্যবস্থা করে দিলে তিনি স্বাচ্ছন্দ্যে এই কাজে বেগবান হতে পারবে বলে মনে করেন এলাকার শিক্ষিত যুব সমাজ।