করোনা কাট্টলীতে - প্রথমে বাবা, এবার ছেলে-মেয়েও- কোথা থেকে আসছে ?

করোনা কাট্টলীতে - প্রথমে বাবা, এবার ছেলে-মেয়েও- কোথা থেকে আসছে ?

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

উত্তর কাট্টলীর আরও দুই সদস্যের শরীরের করোনা শনাক্ত হলো রোববার (১৯ এপ্রিল)। তারা দুজন ভাই-বোন। বোনের বয়স ২৮ বছর ভাইয়ের বয়স ২৫ বছর। নতুন শনাক্ত হওয়া পুরুষ হালিশহর গরিবে নেওয়াজ স্কুলের পাশে একটি লন্ড্রি দোকান পরিচালনা করেন। গত ১৩ এপ্রিল তাদের ৫৭ বছর বয়স্ক পিতার শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল। ওইদিন রাত থেকেই বাড়িটি লকডাউন ছিল।

জানা গেছে, চলতি মাসের শুরু থেকে ওই বৃদ্ধ ব্যক্তি জ্বরে ভুগছিলেন। স্থানীয় ফার্মেসি থেকে জ্বরের ওষুধ সেবনে তার জ্বর না সারায় তিনি ১২ এপ্রিল ফৌজদারহাটের ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) হাসপাতালে ভর্তি হন। পরদিন তার করোনা শনাক্ত হওয়ার পর বিআইটিআইডি হাসপাতালেই তিনি আইসোলেশনে আছেন। রোববার (১৯ এপ্রিল) রাতে ওই বৃদ্ধ কেয়ারটেকারের সন্তানদেরও বিআইটিআইডি হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

নগরী এবং জেলা মিলে এটা এক পরিবারের সর্বোচ্চ সংখ্যক সদস্যের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার দ্বিতীয় ঘটনা। এর আগে পাহাড়তলী থানা সংলগ্ন আমেরিকা প্রবাসী এক ব্যক্তির বিল্ডিয়ে বসবাসরত এক পরিবারের ৫ সদস্যের করোনা শনাক্ত হয়। প্রথমে ১১ এপ্রিল ৫০ বছর বয়স্ক ওই ব্যবসায়ীর শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছিল। এর তিন দিন পর ১৪ এপ্রিল তার ৪৫ বছর বয়সী স্ত্রী, ২২ ও ২৩ বছরের দুই ছেলে এবং ১৫ বছর বয়সী এক মেয়ের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। ওই একই পরিবারের সাড়ে ৩ বছরের শিশু সন্তানেরই শুধু করোনা নেগেটিভ আসে।

কাট্টলীতে এর আগে গার্টেক্স গার্মেন্টসের এক কর্মকর্তার শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল। ওই ঘটনায় ব্যাংক এশিয়ার আন্দরকিল্লা শাখাটিও লকডাউন করা হয়।

আগ থেকেই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার কমিউনিটি ট্রান্সমিশন ঘটছে। স্থানীয় মো. কাসেম আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, কাট্টলীর এই পরিবারের কর্তা বৃদ্ধ ব্যক্তি সবজি বিক্রি করতে গিয়েই হয়তো আক্রান্ত হয়েছেন। তার মানে আমাদের আশপাশে হয়তো আরও রোগী আছেন, যা এখনও শনাক্ত হয়নি। আর ছেলের তো ২৬ মার্চ থেকেই লন্ড্রিতে যাওয়া বন্ধ।

ওই এলাকার বাসিন্দারা সামাজিক দূরত্ব আমলে না নেওয়ায় স্থানীয় প্রশাসন থেকে বারবার সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। ঈশান মহাজন রোড, জি ব্লক কাঁচাবাজার, কৈবল্যধাম কাঁচাবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় সামাজিক দূরত্ব না মানার প্রবণতা খুবই বেশি। সামাজিক দূরত্ব না মানায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানিয়েছেন।

নতুন দুই রোগী শনাক্তের পর এলাকার মানুষ ভাবছেন কে সেই অজ্ঞাত বাহক, যার মাধ্যমে নিম্ন আয়ের এই পরিবারের তিনজন সদস্য এখন আইসোলেশনে। তবে আকবরশাহ থানা থেকে কাউকে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্কতার সাথে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে।