ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’: কক্সবাজারে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত , রাতেই জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা

ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’: কক্সবাজারে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত , রাতেই জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা
ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’: কক্সবাজারে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত , রাতেই জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।। 

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোখা অতিপ্রবল রূপ ধারণ করে ধেয়ে আসছে উপকূলের দিকে। কক্সবাজারকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত ও মোংলা সমুদবন্দরকে ৪ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। ঝড়ের কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার। এটি দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৭৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে। 

রোববার সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৬টার মধ্যে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় মোখা। তবে শনিবার (১৩ মে) রাত থেকে চট্টগ্রাম ও বরিশালের উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রভাগের প্রভাব শুরু হতে পারে। 

যে গতিতে বঙ্গোপসাগর দিয়ে এগোচ্ছে ঘূর্ণিপাক, তা উপকূল ছুঁতে পারে রবিবার সন্ধ্যার মধ্যে। বাংলাদেশ ও মায়ানমারে তাণ্ডব চালাবে ঘূর্ণিঝড় মোখা। সোমবার পর্যন্ত চলবে দুর্যোগ। আর যদি বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়ে তবে প্রলম্বিত হবে দুর্যোগ। যদিও আবহাওয়া অফিস বলছে, রবিবার (১৪ মে) সকাল থেকে বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত করতে পারে ঘূর্ণিঝড় মোখা। ফলে দেশের উপকূলীয় জেলাগুলো উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অফিস। 

আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (১৪) বলা হয়েছে, ‘ঘূর্ণিঝড় মোখা আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আগামীকাল রবিবার (১৪ মে) সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা কক্সবাজার-উত্তর মায়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এ পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত  জারি করা হয়েছে এবং মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, ভোলা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাব এখনো শুরু হয়নি চট্টগ্রামে। তবে আবহাওয়া গুমোট পরিস্থিতি ধারণ করে আছে। ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড় যে ধ্বংসলীলা চালিয়েছিল বাংলাদেশের উপকূলে। সেই স্মৃতি ফের উসকে দিল ঘূর্ণিঝড় মোখা। ৯১ এর ধ্বংসলীলার আতঙ্ক আজ ফের উপকূলবাসীর চোখে-মুখে। সেভাবেই ঘূর্ণিঝড় মোকা এক্সট্রিম সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্মের রূপ নিয়ে ধেয়ে আসছে চট্টগ্রাম-বরিশাল উপকূলে। 

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল বিভাগে ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে। অতিভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮-১২ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। এছাড়া ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, ভোলা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল  প্লাবিত হতে পারে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৭ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে।

অন্যদিকে, ঘূর্ণিঝড় মোখা নিয়ে ১৪ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে , পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝড়টি আজ শনিবার সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮১৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৪৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৮৫ কি.মি. দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৪৫ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থান করছিল। তাছাড়া এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে আগামীকাল রবিবার (১৪ মে) সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে কক্সবাজার-উত্তর মায়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;