চিকিৎসকেরা আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন ,তারা ধরেই নিয়েছিলেন আমি মরছি - মুখ খুললেন বরিস জনসন

চিকিৎসকেরা আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন ,তারা ধরেই নিয়েছিলেন আমি মরছি - মুখ খুললেন বরিস জনসন
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। -ফাইল ছবি।

সংবাদ সংস্থা, লন্ডন ।।

চিকিৎসকেরা তাঁকে বাঁচানোর আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন। তৈরি হয়ে গিয়েছিলেন তাঁর মৃত্যু সংবাদ ঘোষণার জন্য। দৈনিক ‘সান’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন কোভিড সংক্রমণ থেকে সদ্য সেরে ওঠা ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।

রবিবার প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘অস্বীকার করব না, সেটা খুবই কঠিন সময় ছিল। আমাকে যাঁরা চিকিৎসা করছিলেন, তাঁরা ধরেই নিয়েছিলেন, আমাকে আর বাঁচানো যাবে না। তৈরি হয়েছিলেন আমার মৃত্যু সংবাদ ঘোষণার জন্য। স্তালিনের (সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট জোসেফ স্তালিন) মৃত্যুর সময় যেমনটা হয়েছিল, প্রায় তেমনই।’’ হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তাঁর কোভিড সংক্রমণের দিনগুলো নিয়ে এই প্রথম মুখ খুললেন বরিস।

বরিস জানিয়েছেন, তিনি বুঝতে পারছিলেন, পরিস্থিতিটা আর নিয়ন্ত্রণে থাকছে না তাঁর চিকিৎসকদের। তাঁরা আপৎকালীন ব্যবস্থার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমার মৃত্যু হলে কী কী করণীয়, তা নিয়েও ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছিল চিকিৎসকদের।’’

তিনি যে কোভিড সংক্রমণের শিকার হয়েছেন, ৫৫ বছর বয়সী ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী তা প্রথম ঘোষণা করেন গত ২৭ মার্চ। তবে এও বলেছিলেন, তাঁর মধ্যে কয়েকটি প্রাথমিক লক্ষণের আভাস মিলেছে। ঘোষণার পরেই নিজেকে এক সপ্তাহের জন্য গৃহবন্দি করে ফেলেন বরিস। কিন্তু তার পরেও রোগের লক্ষণ বাড়তে থাকায় গত ৫ এপ্রিল আরও পরীক্ষানিরীক্ষার জন্য তাঁকে ভর্তি করাতে হয় হাসপাতালে। ভর্তি করানোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বরিসকে পাঠাতে হয় ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে। সেখানে টানা তিন দিন তাঁকে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়, জানিয়েছেন বরিস। বলেছেন, ‘‘যেতেই চাইনি হাসপাতালে। ডাক্তারদের জোরাজুরিতেই হাসপাতালে ভর্তি হতে বাধ্য হয়েছিলাম।’’ ১২ এপ্রিল বরিস হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান।

সাক্ষাৎকারে বরিস বলেছেন, ‘‘আমি কিন্তু নিজে কখনওই ভাবিনি ফিরে আসতে পারব না। বরং কাজে ফেরার জন্য সব সময়ই উন্মুখ হয়ে থেকেছি। ছটফট করেছি।’’

হাসপাতাল থেকে ফেরার পর গত সোমবারই তাঁর কার্যালয়ে যান ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী। বুধবার তিনি বাবাও হন, তাঁর প্রেমিকা ক্যারি সাইমন্ডস একটি শিশুর জন্ম দেওয়ায়। ক্যারি বলেছেন, ‘‘হাসপাতালে বরিসকে বাঁচিয়ে রাখতে তিন দিনে অনেক অনেক লিটার অক্সিজেন দিতে হয়েছিল চিকিৎসকদের।’’

তবে ন্যাশনাল হেল্‌থ সার্ভিসের যে চিকিৎসকেরা টানা তিন দিন ধরে তাঁর চিকিৎসা করেছেন, তাঁদের প্রতি বরিস ও তাঁর প্রেমিকা ক্যারি যে শুধু কৃতজ্ঞ, তা-ই নয়; নিক প্রাইস ও নিক হার্ট নামে যে দুই চিকিৎসকের অক্লান্ত পরিশ্রম ছাড়া বরিসের ফিরে আসা সম্ভব ছিল না, তাঁদের নাম জোড়া লাগিয়েই সদ্যোজাতের নামকরণও করেছেন বরিস ও ক্যারি। সদ্যোজাতের নাম দেওয়া হয়েছে, উইলফ্রেড লরি নিকোলাস জনসন।