চট্টগ্রাম বায়ুদূষণে বিপর্যস্ত , বাতাসে বস্তুকণা!

চট্টগ্রাম বায়ুদূষণে বিপর্যস্ত , বাতাসে বস্তুকণা!

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।।

চট্টগ্রাম নগরীর বাতাসে শীত মৌসুমের শুরুতেই সহনীয় পর্যায়ের চাইতে সাত গুণ বেশি ‘অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা’ ভাসছে , যা জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। পরিবেশ অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি চট্টগ্রাম নগরীর চেরাগী পাহাড় মোড়ে বাতাসে বস্তুকণার উপস্থিতি পাওয়া গেছে ১৩৪০ পিএম। অথচ বাতাসে থাকা বস্তুকণার সহনশীল উপস্থিতির মাত্রা সর্বোচ্চ ২০০ পিএম। এ তথ্য পেয়েই পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম ওয়াসাকে সতর্ক করা হয়েছে। ওয়াসার উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যাতে জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয়ে না ওঠে তাও নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে এক চিঠিতে।

 

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামে চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও ওয়াসার চলমান প্রকল্পের কারণে বায়ুদূষণের অভিযোগ অনেক দিনের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে এবারই নগরীর শীত মৌসুম শুরুর আগেই বায়ুর মান সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে দেখতে পাচ্ছেন তারা। পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামে উন্নয়ন প্রকল্প চলছে এমন এলাকাগুলোতে বাতাসে বস্তুকণার উপস্থিতি পরিমাপ করতে পরিবেশ অধিদপ্তরের গবেষণাগারের পক্ষ থেকে নগরীর জামালখান মোড় এবং চেরাগী পাহাড় এলাকায় বাতাসে বস্তুকণার উপস্থিতি পরিমাপ করা হয়। এতে চেরাগী পাহাড়ের কাছে বস্তুকণার উপস্থিতি পাওয়া যায় ৬৪৯ পিএম এবং চারশ ফুট দূরে জামাল খান সড়কে পাওয়া যায় ১৩৪০ পিএম। যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক রকমের ক্ষতিকর বলে উল্লেখ করে পরিবেশ অধিদপ্তরের  পক্ষ থেকে ওয়াসা কর্তৃপক্ষকে জরুরি চিঠি দেয়া হয়।

এদিকে শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই বাতাসে বেড়ে যাওয়া বস্তুকণার এ উপস্থিতি উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এতে শ্বাসকষ্ট, ফুসফুস রোগসহ নানা জটিল ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন নগরবাসী। হাসপাতালে বাড়ছে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। বায়ুদূষণের জন্য চলমান উন্নয়ন কাজকে দায়ী করা হলেও তা নিরসনে কোনো উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের। রিপোর্টে জামালখান ও চেরাগী মোড়ের কথা বলা হলেও বন্দরনগরী চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের গুরুত্বপূর্ণ এক্সেস রোডসহ আশপাশের অবস্থা আরও খারাপ। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়াও কষ্টকর এই এলাকায়। বিবর্ণ রাস্তার পাশের সব গাছপালা, আবাসিক ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এর মধ্যেই রাস্তায় বেরুতে হচ্ছে লোকজনকে। ফলে নানা রকম রোগ-জীবাণুতে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। এই আধা কিলোমিটারের মধ্যে আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতাল। যেখানে প্রতিদিনই বাড়ছে শ্বাসকষ্টজনিত রোগীর সংখ্যা। চিকিৎসকদের মতে, এদের বেশিরভাগই ধুলাবালিজনিত কারণে আক্রান্ত। পরিবেশ অধিদপ্তরের  তথ্য মতে, নগরীতে বায়ুদূষণের মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। তবে নগরীতে বায়ুদূষণের জন্য চলমান উন্নয়নমূলক কাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানগুলোকে দায়ী করেছেন সিটি মেয়র। নগরীর বিভিন্ন সড়কে সিডিএ, ওয়াসাসহ নানা সেবাপ্রতিষ্ঠানের চলছে এই উন্নয়ন কাজ।